রাজশাহী ব্যুরোঃ রাজশাহীতে পিবিআই এর বিরুদ্ধে হত্যা মামলায় মিথ্যা চার্জশিট দাখিল ও হয়রানির দাবী তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২ (রবিবার) সকাল ১০ টায় রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাঘা উপজেলার ভারতীপাড়া গ্রামের মৃত কুকন সরকারের ছেলে আব্দুল কুদ্দুস ও তার পরিবারবর্গ।
এ সময় মজনু (২৮), পিতা নজরুল ইসলাম, মিলন আলী (৩০), পিতা হাসেম আলী, মিঠুন আলী (২৫), পিতা আব্দুল কুদ্দুস, মিজানুর রহমানের বোন রানুয়ারা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে কুদ্দুসের ছেলে মিঠুন লিখিত বক্তব্য পাঠ করে বলেন, আমি ও আমার পিতাসহ এই মামলায় যাদের আসামী করা হয়েছে তারা কেউ জড়িত না, অথচ আমাদেরকে আসামী করা হয়েছে।
আমরা মনে করি কোন স্বার্থান্বেষী মহলের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মূল হত্যাকারিকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বাদীনি সম্পর্কে আমার চাচী অর্থাৎ ভিক্টিম আমার চাচাত ভাই। আমার বাবার সাথে চাচাদের দীর্ঘদিন থেকে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে বিবাদ চলমান ছিল। তাই সেই বিবাদকে পুঁজি করে আমাদের আসামী করা হয়েছে।
এই মামলার ২ নং আসামী করা হয়েছে মজনুকে। অথচ মজনু সেদিন এলাকায় ছিলই না। সে কাজের উদ্দেশ্যে পাবনায় ছিল। তারপরও তাকে আসমাী করা হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা জানতে আপনারা এলাকায় খোঁজ খবর নিলে জানতে পারবেন আমরা কেমন। তাই আমরা এই সংবাদ সম্মেলন থেকে তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং এই মামলার পুনর্তদন্ত করে প্রকৃত আসামীদের এই মামলায় নিয়ে আসারও দাবি জানান তারা।
তারা আরও বলেন, নিহত আরিফ হত্যার সময় মিঠুন নববধু নিয়ে গাইবান্ধা জেলায় অবস্থান করছিলেন। এই মামলাটি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে প্রভাবশালী মহলের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে উক্ত আসামিদের যুক্ত করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা জানায়, মামলাটি পূণরায় তদন্ত হলে বা অন্য কোন সংস্থা তদন্ত করলে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন হবে।
তারাও আরিফ হত্যার বিচার চান। প্রকৃত দোষীরা শাস্তি পাক সে প্রত্যাশা করেন। উল্লেখ্য, গত ১২/১২/১৮ ইং তারিখে বাঘার রুস্তমপুর ভারতীপাড়ায় মহির উদ্দিনের ছেলে আরিফ (১৯) নিহত হয়। এ বিষয়ে নিহতের মা বাদি হয়ে বাঘা থানায় অজ্ঞাত আসামী করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন এবং বাঘা থানা পুলিশ তদন্ত পূর্বক চার্জশীট দাখিল করে।
এতে চার্জশীট সন্তোষ জনক না হওয়ায় বাদী চার্জশীটের উপর নারাজি পিটিশন দেয়। পরে মামলাটি পূনর্তদন্তের জন্য পিবিআই রাজশাহী শাখাকে দেওয়া হয়। পিবিআই থেকে সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) জামাল উদ্দিন তদন্ত করেন। পরে মামলটি পূণ্যতদন্ত করে ইন্সপেক্টর (পুলিশ পরিদর্শক) আব্দুল মান্নান উক্ত অভিযোগের তদন্ত করে গত ২৬/১২/২০২০ ইং তারিখে ৫ জনকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে পিবিআই রাজশাহী শাখার পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল মান্নানের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, এই মামলা ১ বছর আগে তদন্ত শেষ হয়েছে। তদন্তের এত দিন পর সংবাদ সম্মেলন হলে আমি এ বিষয়ে তেমন কিছু বলতে পারবো না। তবে তদন্ত সঠিক হয়েছে। এবিষয়ে মামলা তদন্তকারি কর্মকর্তা পিবিআই এর ইন্সপেক্টর আব্দুল মান্নান এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, মামলাটি অনেক দিন হয়ে গেছে।
আমরা এই মামলায় দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমি যতটুকু জানি একজন জামিন পেয়েছে। তবে মামলার আসামী মিজান কোর্টে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। তার জবানবন্দি অনুয়ায়ী বাঁকি আসামীদের নাম এসেছে। আমরা সব সময় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে কাজ করি। এখানে আমাদের কিছু করার নাই।