দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধিঃ কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে কিশোর-কিশোরী ক্লাবে ফের নতুন মোড়কে পুরান মাল (ন্মিমানের বাদ্যযন্ত্র ) সরবরাহ করার অভিযোগ উঠেছে। গেল বছর আগষ্ট মাসে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে কিশোর-কিশোরী ক্লাবে বাদ্যযন্ত্র ও ক্রীড়া সামগ্রী সরবরাহের সপ্তাহ পার না হতেই বাদ্যযন্ত্র ন্মিমানের হওয়ায় ১৪ ইউপি ক্লাবের বাদ্যযন্ত্র দৌলতপুর মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার অফিসে ফেরত দিয়ে ছিলেন স্ব-স্ব ক্লাবের সংগীত শিক্ষকরা।
অভিযোগ ছিল বাদ্যযন্ত্র একেবারেই ন্মিমানের। ঐ কর্মকর্তা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যন্ত্রগুলো ফেরত দিয়ে ভালোমানের হারমোনিয়ম ও তবলা সেট সরবরাহ করা হবে কিন্তু প্রায় ৬ মাস পরে সেই ফেরতকৃত যন্ত্রগুলোই নতুন মোড়কে পুনরায় সরবরাহ করার অভিযোগ উঠেছে দৌলতপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মর্জিনা খাতুনের বিরুদ্ধে।
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে প্রত্যেক কিশোর-কিশোরী ক্লাবের জন্য সংগীত বিষয়ক বাদ্যযন্ত্র ও ক্রীড়া সামগ্রী ক্রয়ের জন্য বরাদ্ধ আসে। আর এসব বাদ্যযন্ত্র ও ক্রীড়া সামগ্রী ক্রয় করেন দৌলতপুর মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মর্জিনা খাতুন।
কিশোর-কিশোরী ক্লাবের সংগীত শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টগণ বাদ্যযন্ত্র ও ক্রীড়া সামগ্রী হাতে পেয়ে ক্ষোভে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। ন্মিমানের হারমোনিয়াম, তবলা ও কেরামবোর্ড হাতে তারা চরম ক্ষুব্ধ হোন এবং বিষ্ময় প্রকাশ করে জানান, যে সব বাদ্যযন্ত্র কিশোর কিশোরী ক্লাবকে দেওয়া হয়েছে তা একেবারেই ন্মিমানের।
তারা বলেন, যে মানের বাদ্যযন্ত্র হারমোনিয়াম সরবরাহ করা হয়েছে বাজারে ৫-৭ হাজার টাকার বেশী হবেনা। অথচ এসব বাদ্যযন্ত্র ক্রয়ের জন্য সরকারী বরাদ্দ ছিল ১৩ হাজার টাকা। ন্মিমানের যন্ত্র সামগ্রী ক্রয়ে লক্ষাধিক টাকা তছরুপ করা হয়েছে বলেও তারা ক্ষোভের সাথে অভিযোগ করেন।
জানুয়ারী (২০২২ইং) মাসে সকল ক্লাবে কিশোর-কিশোরীদের নাস্তা সরবরাহ না করে নাস্তার বরাদ্দ কৃত ১,১৭,৬০০ (এক লক্ষ সতের হাজার ছয়শত টাকা) টাকা আতœসাৎ করার।
জানাগেছে, জানুয়ারী (২০২২ইং) মাসে সকল ক্লাবে নাস্তা সরবরাহ না করায় জেন্ডার প্রমোটারগণ ফিল্ড সুপারভাইজার শুরুজ আলীর নিকট লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। দাখিলকৃত অভিযোগগুলো ফিল্ড সুপারভাইজার উপ-পরিচালক, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কুষ্টিয়া বরাবর প্রেরণ করেন।
উপ-পরিচালক কুষ্টিয়া সেটি প্রকল্প পরিচালক বরাবর প্রেরণ করলে বিবেচ্যপত্রের অভিযোগের বিষয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার দৌলতপুর কুষ্টিয়াকে সুষ্ঠভাবে তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রেরণ করতে বলা হয়েছে। যাহার স্বারক নং ৩২.০১.৫০০০.০০০.১৪.০০২.১৯.১৯ তাং ফেব্রুয়ারী ২০২২ইং সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আওতায় কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্পের অধীনে দৌলতপুর উপজেলার ১৪ ইউনিয়নে কিশোর-কিশোরী ক্লাব প্রতিষ্ঠা করা হয়।
এর প্রত্যেকটিতে কো-অর্ডিনেটর, জেন্ডার প্রোমোটার, আবৃত্তি ও সংগীত শিক্ষক হিসাবে মোট ৩০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে দৌলতপুরে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মর্জিনা খাতুন বলেন, কিশোর-কিশোরী ক্লাবের বাদ্যযন্ত্র ক্রয়ের জন্য সরকারী বরাদ্ধের ১৩ হাজার টাকায় কেনা সম্ভব না হওয়ায় আমরা তার সাথে আরো ২ হাজার টাকা ভর্তুকি দিয়ে মোট ১৫ হাজার টাকা করে বাদ্য যন্ত্র ক্রয় করেছি।
চেষ্টা করেছি ভাল মানের বাদ্য যন্ত্র ক্রয় করার এবং নাস্তার টাকা আত্মসাতের বিষয়টি অস্বীকার করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার জানান, মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন কিশোর-কিশোরী ক্লাব বাস্তবায়ন প্রকল্পের আওতাধীন দৌলতপুর উপজেলার ১৪ টি ক্লাবে জানুয়ারী ২০২২ এর নাস্তার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তের জন্য একটি পত্র পেয়েছি। দ্রুত তদন্ত করে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেয়া হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।