মোঃবেল্লাল হোসেন
দশমিনা(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি| আর মাত্র কয়েক দিন বাকী ঈদ-উল-আজাহার। ঈদ-উল-আজাহাকে সামনে রেখে পটুয়াখালীর দশমিনায় স্থায়ী ও অস্থায়ী বসতে শুরু করেছে পশুর হাট। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই জমে উঠছে হাটের পশু কেনাবেচা। উপজেলার ছোট-বড় হাটগুলোতে অন্য উপজেলা থেকেও আসছেন ক্রেতারা-বিক্রেতা। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় উপজেলার দশমিনা বাজার গরুর হাটের দৃশ্য। এদিকে, গত দুই বছর করোনার প্রকোপে ঠিকমত বাজার না বসায় এবার খামারী ও গরু ব্যাবসায়ীদের কাছে পর্যাপ্ত দেশী গরুর দেখা মিলছে যা প্রতিফলিত হচ্ছে হাটগুলোতে। কুরবানির জন্য ক্রেতাদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে ছোট ও মাঝারি আকারের গরু। হাটে এসে পছন্দ হলেই তারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন গরু। কেউ কেউ অবশ্য শেষ মুহূর্তে কেনার অপেক্ষাতেও রয়েছেন। আর হাটগুলোতে ভারতীয় গরুর উপস্থিতি না থাকায় দেশি গরুতে ভালো দাম পাচ্ছেন বলে হাসি ফুটেছে খামারি ও গরুর ব্যবসায়ীদের মুখে। উপজেলার কয়েকটি হাট ঘুরে দেখা গেছে, কুরবানিকে সামনে রেখে উপজেলার পশুর হাটগুলোতে পা ফেলার যেন জায়গা নেই। এর মধ্যে বৃষ্টি হয়ে যাওয়ায় কাদায় মাখামাখি হাটের প্রতিটি ইঞ্চি। বড় হাটগুলোতে জেলার বাইরে থেকেও গরু নিয়ে এসেছেন বিক্রেতারা, অন্য উপজেলার ক্রেতারাও রয়েছেন এসব হাটে। হাট ঘুরে দেখা যায়, ছোট ও মাঝারি আকৃতির গরুর বিক্রিই সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি বিক্রি হচ্ছে ছাগলও। তবে তুলনামূলক ভাবে বড় আকৃতির গরুর বিক্রি কম। ক্রেতারা বলছেন, বড় গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে অনেক বেশি। তাই বড় একটি গরু না কিনে দুয়েকজন দুইটি মাঝারি আকৃতির গরুও কিনেছেন। দশমিনা বাজারে আসা গরু বিক্রেতা ও খামারিরা জানান, গরুর খাদ্যের দাম বেশি হওয়ার কারণে আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার গরু পালনে বেশি খরচ হয়েছে। তাই এবার গরুর দাম তুলনামূলকভাবে একটু বেশি। তবে ভারতীয় গরুর আমদানি না থাকায় তারা খানিকটা স্বস্থিতে রয়েছেন। দশমিনা বাজারে গরুর ব্যবসায়ী মো. ইদ্রিস বলেন, আমাদের দেশি গরু বেচাবিক্রি ভালো হচ্ছে। আর গরুর ভালো দাম পেয়ে বিক্রেতারা খুশি হলেও খানিকটা নাখোশ ক্রেতারা। উপজেলার দশমিনা বাজারে গরু কিনতে আসা মোঃ জামাল হোসেন বলেন, অনেক চেষ্টার পর ৮৫ হাজার টাকায় একটি গরু কিনেছি। বাজার ঘুরে দেখে মনে হলো এবার গরুর দাম বিগত বছরের চেয়ে বেশি। তারপরও কুরবানি তো দিতেই হবে। তাই টাকাটা বড় বিষয় নয়।
/দশমিনা বাজারের ইজারাদার জাফর সিকদার বলেন, আগের বছরের তুলনায় এ বছর হাটে সব আকারের গরু বেশি। তবে ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকা দামের গরুর আমদানি বেশি। লাখ টাকার গরুও আছে। তিনি আরও বলেন, মাঝারি আকারের গরুর আমদানি যেন বেশি, তেমনি বিক্রিও হচ্ছে। ক্রেতারা এই দামের মধ্যেই গরু কিনতে পছন্দ করছেন। এই হাটে প্রতিদিন তিন থেকে চারশত গরু বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.আতিকুর রহমান জানান উপজেলায় ছয়টি গরুর খামারি রয়েছে, এ ছাড়া গরুর আমদামি রয়েছে বাজারে। দশমিনায় ৭ টি ইউনিয়নে আমাদের প্রায় ১০-১২ টি ভ্যাটেনারি টিম রয়েছে সার্বক্ষনিক মনিটারিং করছে। উপজেলায় পশুর চাহীদা অনুযায়ী বাজারে ব্যাপক পশুর আমদানি।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোঃ মেহেদী হাসান জানান, পশুর হাটকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুত। প্রতিটি পশুর হাটে নিরাপত্তা দিতে পুলিশ সদস্য তৎপর রয়েছে। পশু কেন্ বেঁচায় জাল টাকা রোধে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। কুরবানির ঈদকে ঘিরে ক্রেতারা পছন্দ অনুযায়ী তাদের পশু কিনে বাড়ি যেতে পারে তার জন্য প্রতিটি পশুর হাটে স্পেশাল পুলিশ টিম কাজ করছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, পবিত্র ঈদ-উল-আজাহাকে সামনে রেখে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। উপজেলায় কয়েকটি পশুর হাট ঘুরে দেখেছি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শতর্ক অবস্থানে আছে। পশুর হাটে পশু কেনা বেঁচায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের কোন প্রকার ভোগান্তি না হয় সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে।