বিধান মন্ডল (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ ফরিদপুরের সালথায় নানা আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর ৯২ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দুস্থ মহিলাদের মধ্যে সেলাই মেশিন ও আর্থিক অনুদান এবং সেচ্ছাসেবী মহিলা সমিতির মধ্যে চেক বিতরণ করা হয়েছে। সোমবার (৮ আগস্ট) সকালে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে এই আলোচনা সভা ও সেলাই মেশিন এবং চেক বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সকাল ১০টায় উপজেলা পরিষদের চত্বরে স্থাপিত বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরে সাড়ে ১০টায় আলোচনা সভা ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দুস্থ মহিলাদের মধ্যে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়।
প্রথমে বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী (এমপি) মাননীয় সংসদ উপনেতা বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ এর পক্ষে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
এরপর পর্যায়ক্রমে উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, সালথা থানা প্রশাসন, উপজেলা আওয়ামী লীগ, উপজেলা কৃষক লীগ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, উপজেলা অফিসার্স ক্লাব পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ তাছলিমা আকতারের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন, সংসদ উপনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী (এমপির) কনিষ্ঠ পুত্র তার রাজনৈতিক প্রতিনিধি শাহাদাব আকবর চৌধুরী লাবু।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রুপা বেগম, উপজেলা মৎস্য অফিসার রাজীব রায়, উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ তৌহিদুর রহমান, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা ডলি, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ দেলোয়ার হোসেন মিয়া, সাধারণ সম্পাদক ফারুকুজ্জামান ফকির মিয়া, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি মোঃ সেলিম মোল্লা, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, সালথা থানার এস আই আওলাদ হোসেন প্রমুখ। এছাড়াও বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ তাছলিমা আকতার বক্তব্যে বলেন, সর্বকালে সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা একজন সাহসী মহীয়সী নারী। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর থেকেই সারাটা জীবন বিভিন্ন সংগ্রামে সঙ্গ দিয়েছেন, পরামর্শ দিয়েছেন, দিয়েছেন শক্তি ও সাহস।
তিনি আরও বলেন, এমন ত্যাগী মহিয়ষী নারী না থাকলে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ রহমান এঁর সৌর্য মন্ডিত ইতিহাসে হয়ত কিছুটা অর্জন কম থাকতো কিন্তু এই নারীর কারনে আজ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ পেরিয়ে গোটা বিশ্বের একজন আইডল হিসেবে, একজন মহান নেতা হিসেবে, একজন ত্যাগী নেতা হিসেবে চির ভাস্মর হয়ে আছেন। এমন একজন মহীয়সী নারী জন্মবার্ষিকীতে স্মরণ করছি বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল শাহাদাতবরণকারী পরিবারের সদস্যদের এবং বঙ্গবন্ধুর রত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার দীর্ঘায়ু কামনা করছি যাতে বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে উপহার দিয়ে যেতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এঁর জন্মবার্ষিকীতে সারাদেশে অসহায় কর্মহীন মহিলা, যুবতী মহিলাদের সেলাই মেশিন দিয়ে আরও একটি নজীর স্থাপন করলেন। এই সেলাই মেশিন দিয়ে কয়েক লক্ষ যুবতীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে বাংলাদেশের ইতিহাসে আরেকটি মাইলফলক সূচনা করলেন।
উল্লেখ, জাতির পিতার আমৃত্যু সঙ্গী, বাংলার মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাকনাম ছিল রেণু। বঙ্গবন্ধু তাকে এ নামেই ডাকতেন। তার পিতার নাম শেখ জহুরুল হক এবং মাতার নাম হোসনে আরা বেগম। এক ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ছোট। তিনি ৫ বছর বয়সেই পিতামাতা হারান। ৮ বছর বয়সে চাচাতো ভাই শেখ মুজিবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর থেকেই তিনি ছিলেন জাতির পিতার আমরণ সঙ্গী। এই মহীয়সী নারী ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সপরিবারে স্বাধীনতাবিরোধী দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে খুনিচক্রের বুলেটের আঘাতে নির্মমভাবে শহীদ হন।
অনুষ্ঠান টি সঞ্চালনা করেন উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আহসান মোস্তফা কামাল