রাজশাহী ব্যুরোঃ সকাল ৮ থেকে শুরু হয় রাজশাহীর বাঘা পৌরসভার নির্বাচন। উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট গ্রহন শুরু হলেও সকালের শুরুতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) সমস্যা দেখা দিলে চরম ঝামেলা পোহাতে হয় ভোটারদের। যার কারনে কয়েকটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহন দেরি হয়।
বৃহষ্প্রতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে একযোগে ১১ টি কেন্দ্রের ভোট শুরু হলেও পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড বানিয়া পাড়া কেন্দ্রে ছয়টি ইভিএম মেশিনের মধ্যে দুইটিতে সমস্যা হয়। এতে ভোট গ্রহন বন্ধ থাকে প্রায় এক ঘন্টা। ৯ নং ওয়ার্ড মুর্শিদপুর কেন্দ্রে ৮ টির মধ্যে ৪ টি মেশিনে সমস্যা হয়। এখানে ভোট গ্রহন বন্ধ থাকে প্রায় আধাঘন্টা। এছাড়াও ২ নং ওয়ার্ড পাকুড়িয়া কেন্দ্রে মেশিন এ্যাডজাষ্টমেন্টের কারনে বিশ মিনিট দেরি হয়। তবে ইভিএম মেশিনে ভোট দিতে অনেকটায় বেগ পোহাতে হচ্ছে ভোটারদের। এই নিয়ে সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বললে তারা জানান, ইভিএম মেশিনে এবার প্রথম ভোট দিলাম। প্রথমে বুঝতে সমস্যা হয়েছে, পরে সেখানে দ্বায়িত্বরতরা বুঝিয়ে দিলে আর সমস্যা হয়নি। আবার কেউ কেউ এই মেশিনে ভোট দিয়ে আনন্দ বোধ করছেন। কারন তারা এতদিন এই মেশিনের কথা শুনেছেন বা সংবাদ মাধ্যমে দেখেছেন। এবার তারা সরাসরি ভোট দিতে পেরে অনেকটায় আনন্দ পাচ্ছেন। তবে অনেকেই হতাশা আর আবেগ নিয়ে কথা বলেন সংবাদকর্মীদের সাথে। কারন ফিংগার (আঙ্গুলের ছাপ) কারনে তারা ভোট দিতেই পারেননি। এমনি এক ভুক্তভোগী ৮ নং ওয়ার্ড চাকিপাড়া গ্রামের আনিসুর রহমানের স্ত্রী জুলেখা বেগম। তিনি ভোট দিতে না পেরে হতাশা নিয়ে কেন্দ্র থেকে বের হন। তার সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমার আঙ্গুলের ছাপ মিলেনি। বার বার চেষ্টা করেও ব্যার্থ হয়েছি। এমন কি সাবান দিয়ে হাত ধুয়েও মিলেনি আঙুলের ছাপ। অবশেষে ভোট না দিয়েই কেন্দ্র থেকে বের হয়েছি।
পরে মেয়র প্রার্থীদের সাথে কথা বললে, নৌকা প্রতীকের শাহিনুর রহমান পিন্টু বলেন, সকাল থেকে ভোট সুষ্ঠু ও সুন্দর ভাবে চলছে। ভোটাররা আনন্দের সাথে ভোট দিচ্ছে। জয়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি শতভাগ আশাবাদি রয়েছেন বলে জানান। এরপর তৃনমুলের জনপ্রিয় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আক্কাস আলীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমার ভোটারদের রাস্তায় বাধা দেওয়া হচ্ছে। আমি রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তারপরও প্রশাসন সজাগ রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে অবশ্যই আমার জয় সুনিশ্চিত। এদিকে নিরবে ভোটারদের কাছে ভোট চাচ্ছেন বিএনপি প্রার্থী কামাল হোসেন। তার সাথে কথা বললে, বিভিন্ন কেন্দ্রে ইভিএম মেশিনে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।
পরে ইভিএম এর ত্রুটি নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ আবুল হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, কয়েকটি কেন্দ্রে সমস্যা হয়েছিল। পরে এক্সপার্ট দিয়ে ঠিক করা হয়েছে। আশাকরি মেশিনে আর কোন সমস্যা হবেনা। এখন পর্যন্ত কোথাও কোন অপারীতিকর ঘটনা ঘটেনি। অবাধ সুষ্ঠু ও সুন্দর ভাবে ভোট গ্রহন চলছে।
উল্লেখ্য, এই পৌরসভার ৯ টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ৩১৬৬৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৫৮১২ এবং মহিলা ১৫৮৫৭ জন। এবারের নির্বাচনে ৫ জন মেয়র, ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর ৩৬ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর ১৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১১ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৯০ জন সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার, ১৮০ জন পোলিং অফিসার ভোট গ্রহন করছেন।