রাজশাহী ব্যুরোঃ পরিবেশে নিয়ে কাজ করা পরিবেশ অধিদপ্তরের ভেতরে দুই কর্মচারির মধ্যে মারামারির ভিডিও মিডিয়াকর্মীদের হাতে এসেছে। এমন ঘটনা দৃশ্য দেখা গেছে রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরে। অর্থাৎ ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে রাজশাহী অধিদপ্তরের ভেতরের পরিবেশ নষ্ট। পরে ঘটনার বিষয়ে জানা যায়, ফাইল পাশের নামে ঘুষ গ্রহণ ও টাকা ভাগাভাগি নিয়ে উক্ত দপ্তরের কম্পিউটার অপারেটর শরিফুল ইসলাম ও উপ-পরিচালকের গাড়ি’র ড্রাইভার জহুরুল ইসলাম ভিতরেই মারামারি করেন। দপ্তরটি সিসিটিভি ক্যামেরার আওতাভূক্ত হলেও দপ্তরটি ভিতরেই দুই কর্মচারী মারামারি করে তাদের আহত ছবি দেখা গেছে। তবে ঘটনার খবর পেয়ে বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে ধামাচাপা দেন দপ্তরটির উপ-পরিচালক মাহমুদা পারভীন। ঘটনাটি গত ২২ সালর ৮ নভেম্বর ঘুষের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন দুই কর্মচারী।
সূত্র বলছে, পরিবেশ অধিদপ্তরে অনুমোদন নিতে আসা ভুক্তভোগীদের একটি ফাইল পাস করা নিয়ে কথা-কাটাকাটি একপর্যায়ে তুমুল মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন তারা। কম্পিউটার অপারেটর শরিফুলকে উপ-পরিচালক নামে একটি পাস করতে বলেন জহুরুল। এ সময় কম্পিউটার অপারেটর শরিফুল বলেন, ফাইল সংশোধন করতে হবে। তখন ড্রাইভার জহুরুল বলেন, ম্যাডাম বলেছে সংশোধন না করেই ফাইল ছেড়ে দিতে হবে। একপর্যায়ে ফাইল পাসের টাকা কম বেশি নিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়েন তারা৷ এরপর সিসিটিভি ক্যামেরার বাহিরে অন্য একটি কক্ষে তারা সেই ফাইল বাবদ ঘুষের টাকা ভাগাভাগি করতে গিয়ে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। সেই মারামারি”র ভিডিও ফুটেজ ইতোমধ্যে মিডিয়াকর্মীর হাতে এসেছে।
বিশ্বাস্ত সুত্র বলছে, উপ-পরিচালক মাহমুদা পারভীনের নানা অনিয়ম দুর্নীতি’র ফাইলপত্রসহ বিভিন্ন কাজ করে থাকেন ড্রাইভার জহুরুল ইসলাম। এরই ধারাবাহিকতায় উক্ত দিনে উপ পরিচালকের নামেই ফাইলের ভুল সংশোধন না করেই ফাইল ছেড়ে দিতে বলেন। সেই ফাইল পাস বাবদ মোটা অংকের উৎকোচ নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
অভিযোগ আছে, দপ্তরটিতে ঠিকমত অফিস করেন না উপ-পরিচালক মাহমুদা পারভীন। অফিসে গেলে অন্যান্য কর্মচারীরা বলেন, ম্যাডাম বিভাগীয় কমিশনার অফিসে মিটিং এ আছেন। কয়েকদিন গিয়ে প্রতিবেদক খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তিনি অফিসে কম আসেন।
অফিসে মারামারি’র বিষয় জানতে ড্রাইভার জহুরুল ইসলামকে ফোন দিলে তিনি বলেন, দুইজনের মধ্যে সামান্য কথা-কাটাকাটি হয়েছে, মারামারি নয়। তবে ভিডিও ফুটেজ এর কথা বলতেই তিনি সব স্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমাকে বেশি মেরেছে শরিফুল। অফিসের টেবিলে ফেলে আমাকে প্রচুর মারা হয়েছে। তবে ঘুষসহ অন্যান্য বিষয় অস্বীকার করেছেন।
কম্পিউটার অপারেটর শরিফুল বলেন, আমার সঙ্গে মারামারি’র ঘটনা ঘটেনি। তবে কথা কাটাকাটি হয়েছে। কি বিষয়ে কথা-কাটাকাটি হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি ফাইল সংক্রান্ত বিষয়ে। এর বাহিরে আমি আর কিছু বলতে পারবো না।
এবিষয়ে সহকারী পরিচালক কবির হোসেন বলেন, অফিসে বসার ব্যাপারে দুইজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে দুইজনকে মুচলেকা নিয়ে সর্তক করা হয়েছে। ফাইল পাসকে কেন্দ্র করে ঘটনার সুত্রপাত নয়। অন্যান্য বিষয় অস্বীকার করেন তিনি।

বার বার পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী অফিসে গিয়ে উপ-পরিচালক মাহমুদা পারভীনকে পাওয়া যায়নি। পরে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফোন রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।