বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবার তৃতীয় দিনেও রোগির সংখ্যা তেমন দেখা যায়নি। গত ৩০ মার্চ সারাদেশের ১০টি জেলা সদর হাসপাতাল ২০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ন্যায় বোয়ালমারীতেও সেবাটি চালু হয় বলে জানা যায়। এ উপজেলায় সপ্তাহে দুইদিন সেবাটি দেওয়া হয়। তবে কার্যক্রমটি নতুন বলে রোগিদের ধীরে ধীরে বাড়ছে বলে জানিয়েছেন আজ বৃহস্পতিবার বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. তারিকুল ইসলাম।
জানা যায়, সরকারি হাসপাতালে ইনন্টিিউটশনাল প্র্যাকটিস বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকার দেশের ১০টি জেলা সদর হাসপাতাল ২০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাইলটিং ভিত্তিতে সরকারি চিকিৎসকদের দ্বারা সরকার নির্ধারিত ফ্রি’র মাধ্যমে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ কার্যক্রমে ফরিদপুর জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শুধু চালু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বিকেলে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এমএ নাহিদ আল রাকিবের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী কার্যক্রমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. রওশন জাহান আক্তার আলো উপস্থিত থেকে কার্যক্রমটি উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের দিন (৩০ মার্চ) বৈকালিক সেবা নিয়েছিলো ১২জন, দ্বিতীয় সপ্তাহে ৫জন এবং গতকাল বৃহস্পতিবার বৈকালিক সেবা নিয়েছেন ১১জন রোগি।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেল আড়াইটায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দুইজন রোগি হাসপাতালের নিচ—উপর দিয়ে ঘোরাঘুরি করছে। কথা হয় বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের হরিহরনগর গ্রামের ইলিয়াস হোসেনের ছেলে নাফিজ হাসান নিশাদের (১৮) সাথে। সে ঢাকা আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী। নাফিজ বলেন, ঈদকে সামনে রেখে কলেজ বন্ধ হওয়ায় গ্রামের বাড়িতে এসেছি। শুনেছি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফ্রি’র মাধ্যমে বোয়ালমারী হাসপাতালে বিকেলে ডাক্তার দেখানো যায়। এ জন্য বাবাকে সঙ্গে নিয়ে মেডিসিনের ডাক্তার দেখাতে এসেছি। হাসপাতালে এসে খুঁজে পাচ্ছি না কোন ব্লিডিংয়ে এ সেবা দেওয়া হয়। অনেক ঘোরাঘুরি করে ১০০ শয্যার নতুন ব্লিডিংয়ের ২য় তলায় ২০০ টাকা ফ্রি দিয়ে ডাক্তার দেখিয়েছি। এ সেবার জন্য আরো প্রচারণা দরকার বলে তিনি মনে করেনি। অপর সেবা নিতে আসা উপজেলার শেখর ইউনিয়নের তেলজুড়ি গ্রামের বাসিন্দা শাজাহান বিশ্বাসের স্ত্রী মোরশেদা খানমের সাথে। তিনি বলেন, আমি সরকারি ফ্রি দিয়ে বিকেলে ডাক্তার দেখাতে পেরে অনেক খুশি হয়েছি। যেখানে হাসপাতালের বাইরে ৪/৫শ টাকা দিয়ে ডাক্তার দেখাতে হতো সেখানে আমি ২০০টাকা দিয়ে ডাক্তার দেখাতে পেরেছি। এ সেবা প্রতিদিন চালু রাখার দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার বৈকালিক স্বাস্থসেবায় নিয়োজিত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, কার্যক্রমটি নতুন এবং রমজান মাস হওয়ায় বিকেলে রোগির তেমন সাড়া মিলছে না। তারপরও ধীরে ধীরে রোগির সংখ্যা বাড়ছে। ঈদের পরে হইতো রোগির সংখ্যা আরো বাড়বে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এমএম নাহিদ আল রাকিব বলেন, রোগির সংখ্যা কম হওয়ায় আমরা প্রথমদিকে সপ্তাহে দুইদিন বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা চালু করেছি। পর্যায়ক্রমে সপ্তাহে ৬দিনই চালু করা হবে এ সেবা। রোগিদের পরীক্ষা—নিরীক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্যাথলজিক্যাল রিলেটেড পরীক্ষা—নিরীক্ষা চালু রয়েছে। দ্রুতই সকল ধরনের পরীক্ষা—নিরীক্ষা হাসপাতালেই বৈকালিক সেবাধীরাও করাতে পারবেন। রোগির সংখ্যা বাড়ানোর জন্য সব রকম ভাবে আরো প্রচার প্রচারণা চালানো হবে।