রাজশাহী ব্যুরো: নতুনভাবে বাংলা সংবাদ পাঠক হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করেছে বাংলাদেশ বেতার রাজশাহী। এতে কোন রকম গণবিজ্ঞপ্তির প্রয়োজন মনে করেননি এমটাই অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ বেতার রাজশাহীর বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, সেই অন্তর্ভুক্তিতে রাখা হয়েছে খোদ আওয়ামী লীগের অনেক ব্যক্তিকে। এ নিয়ে শুরু হয়েছে চাপা ক্ষোভ। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ বেতারের আঞ্চলিক বার্তা নিয়ন্ত্রক বরাবর একটি লিখিত আবেদনও দেয়া হয়েছে। এমন একটি কপি প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতিবেদক বাংলাদেশ বেতার আঞ্চলিক কেন্দ্র রাজশাহী ওয়েব সাইড ও কোন পত্র-পত্রিকাতেও গণবিজ্ঞপ্তি দেখতে পাননি।
আঞ্চলিক বার্তা নিয়ন্ত্রকের সেই আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন অনুষ্ঠান ঘোষক ও নাট্যশিল্পি আরিফউজ্জামান নবাব ও ফরিদা ইয়াসমিন অপির্, অনুষ্ঠান ঘোষক জুবাইদা পারভীন, আতিকুর রহমান, একরামুল হক, তারানা আকতার জিনিয়া, সালাহ্ উদ্দিন ও জোসী কিবরিয়া। ঐ আবেদনে উল্লেখ করা হয় আঞ্চলিক বার্তা নিয়ন্ত্রক বাংলাদেশ বেতার, বাজশাহী, সংবাদ পাঠক/পাঠিকা তালিকা ভুক্ত করার জন্য নোটিশ প্রদান করেন। সে মোতাবেক তারা গত ২১ মে ২০২৫ ইং হতে ২২ মে ২০২৫ ইং তারিখে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করলে তাদের চাইতে কম অভিজ্ঞ ব্যক্তি ও কর্তৃপক্ষের পছন্দ মত ব্যক্তিদের গত ৪ জুন ২০২৫ ইং তারিখে বিকেল ৫ টায় সময় কণ্ঠস্বর পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। অথচ ঐ পরীক্ষায় সঠিক ভাবে যাচাই না করে অনভিজ্ঞ অনেক ব্যক্তিকে উত্তীর্ণ করা হয়েছে। এ কারনে সংবাদ পাঠক-পাঠিকাদের পুনরায় পরীক্ষা নেয়ার কথা উল্লেখ করেন।
শুধু তাই নয় আওয়ামীলীগ ফ্যাসিস্ট সরকারের নেতাকর্মীদের পূর্ণবাসন করার লক্ষ্যে চিহ্নিত কয়েক জনকে উত্তীর্ণ করা হয়েছে। যা শহীদের রক্তের প্রতি অসম্মান করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তারা। যার প্রমান হচ্ছে রাজশাহী জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসরিন আক্তার মিতা ও তানোর-গোদাগাড়ী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফারুক চৌধুরীর ঘনিষ্টজন সিরাজী ফেরদৌস ইমন অন্যতম ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বেতার রাজশাহী আঞ্চলিক কেন্দ্র সূত্র মতে জানা গেছে গত ২১ ও ২২ মে এ কেন্দ্রের খবর পাঠক-পাঠিকা নিয়োগের জন্য অডিশন গ্রহণ করা হয়। নিয়োগ বোর্ডে ছিলেন বাংলাদেশ বেতারের বার্তা বিভাগের উপ-মহাপরিচালক শরিফুল কাদের, রাজশাহীর আঞ্চলিক পরিচালক কিশোর রঞ্জন মল্লিক, আঞ্চলিক বার্তা নিয়ন্ত্রক সুলতানা পারভীন ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের একজন শিক্ষক। কণ্ঠশ্বর অডিশন বোর্ড করে বাংলা বিভাগে প্রায় দেড়শ জনের অডিশন গ্রহণ করা হয়। এতে ৩৪ জনকে উত্তীর্ণ করে গত ৪ জুন ২০২৫ ইং তারিখ তালিকা প্রকাশ করা হয়। এছাড়াও বাংলা ও ইংজেরী দুই বিভাগেই নিয়োগ পেয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মুর্শিদা ফেরদৌস বিনতে হাবিব।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ বেতার আঞ্চলিক বার্তা নিয়ন্ত্রক সুলতানা পারভীন রাজশাহীর নিকট মোবাইলে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইংরেজি বিভাগটা সার্কুলেশনের মাধ্যমে নেয়া হয়েছে। বাংলার ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। কারন ২০২১ সাল থেকে এই বিভাগে কোন প্রকার অডিশন নেয়া সম্ভব হয়েছিলো না। কিন্তু ঐ বছর থেকে প্রতি বছর সার্কুলার ছাড়াই এই বিভাগে আবেদন পড়তে থাকলেও পূর্বের কর্তৃপক্ষ কোন প্রকার ব্যাবস্থা নেননি। এই বিভাগে মোট ১৫৩জন আবেদন করেছিলেন। আবেদনের অবস্থা এবং নতুনদের জায়গা করে দিতেই তিনি হেড অফিসের সাথে কথা বলে সার্কুলার ছাড়াই আবেদনকৃতদের মধ্যে থেকে যাচাই বাছাই করে কণ্ঠশ্বর অডিশনের জন্য ডাকার ব্যবস্থা করেন। শুধু তাইনয় হেড অফিস কর্তৃক একটি অডিশন কমিটি করা হয়। সেই কমিটি কার্যক্রম শেষ করেছেন। তবে এখনো কাউকে কোন প্রকার কাজপত্র দেয়া হয়নি।
তিনি আরো বলেন, যারা অডিশনে উত্তীর্ণ হয়েছে তাদেরকে চরমভাবে চুড়ান্ত করার পূর্বে পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে। এদের মধ্যে থেকে কারো বিরুদ্ধে যদি খারাপ রিপোর্ট পাওয়া যায় তাহলে তিনি বাদ পরবেন বলে উল্লেখ করেন। আর কে কোন দলের সেটা তার পক্ষে চিন্থিত করা সম্ভব নয়। কারন যারা অডিশনে উত্তীর্ণ হয়েছেন তাদের মধ্যে তাঁর কোন আত্মীয়স্বজন নাই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।