1. zillu.akash@gmail.com : admi2017 :
  2. editor@dailynewsbangla.com : Daily NewsBangla : Daily NewsBangla
বৈশাখকে ঘিরে বেজে উঠেছে বাঁশির গ্রাম এ'গ্রামের নারী পুরুষ বাঁশি তৈরিতে ব্যস্ত - dailynewsbangla
বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:০১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
ঢাকা দ‌ক্ষিন সি‌টি ক‌লোনী‌তে  প্রথম বা‌রের মত উদযাপিত হলো হ‌রিজনবাসীর বিদ‌্যা দে‌বির পুজা  বোয়ালমারীতে গরু চুরি করতে গিয়ে ৮ গরু চোর কারাঘরে সিন্ডিকেটের বেড়াজালে বন্দি বরেন্দ্র অঞ্চলের  ধান চাষীরা কম্বিং অপারেশনে ১০লখ টাকার অবৈধ জাল জব্দ মহাদেবপুরে অসহায় দু:স্থদের মাঝে ছাগল বিতরণ করলেন জামায়াত ইসলাম  নিয়ামতপুরে সহকারী কমিশনারের বাসা লক্ষ্য করে গুলি ধামইরহাটে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত বাবা মায়ের কবরের পাশে শায়িত: বগুড়া-৩ আসনের সাবেক এমপি মরহুম আব্দুল মোমিন তালুকদারের দাফন সম্পন্ন ভেড়ামারায় কৃষি প্রযুক্তি মেলা-২০২৫ সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বাংলাদেশ স্কাউটস, ভেড়ামারা উপজেলা ত্রৈ-বার্ষিক কাউন্সিল ২০২৫

বৈশাখকে ঘিরে বেজে উঠেছে বাঁশির গ্রাম এ’গ্রামের নারী পুরুষ বাঁশি তৈরিতে ব্যস্ত

ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৩
মোহাম্মদ আককাস আলী :
বৈশাখ এসেছে বেজে উঠেছে বাঁশির গ্রাম।
এ’গ্রামের নারী পুরুষ বাঁশি তৈরিতে মহাব্যস্ত।
এগ্রামের বাঁশি ছড়িয়ে পড়েছে দেশের নানা প্রান্তে। এ গ্রামের দুই শতাধিক পরিবারের প্রায় এক হাজার মানুষ বাঁশি তৈরি করেই জীবন চালান। সবুজে ঘেরা এ গ্রামের লোকজন প্রায় শতবর্ষ ধরে নল দিয়ে এ বাদ্যযন্ত্র তৈরি করে আসছেন। বাঁশির গ্রামটির নাম দেবীপুর। নওগাঁ সদর উপজেলার ওই গ্রামে ঘুরে দেখা যায়, গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়ির বারান্দা, আঙিনা ও বাড়ির বাইরের খোলা জায়গায় গাছের ছায়ায় কারিগরেরা বসে বাঁশি তৈরির কাজ করছেন। পরিবারের নারী-পুরুষ সবাই ব্যস্ত। কেউ নলখাগড়া বা নলের গাছ কেটে বাঁশির বিভিন্ন ভাগ তৈরি করছেন। আবার কেউ বাঁশির সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য জরি এবং বেলুন লাগাচ্ছেন। এভাবে যে বাদ্যযন্ত্রটি তৈরি হচ্ছে, সেটি গ্রামবাংলার অন্যতম ঐতিহ্য বাঁশি।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় শত বছর আগে ওই গ্রামের আলেক মন্ডল নামে এক ব্যক্তি সৈয়দপুর থেকে এই বাঁশি তৈরির কাজ শিখে এসে বাঁশি বানানোর কাজ শুরু করেন। এরপর আস্তে আস্তে এই গ্রামে ছড়িয়ে যায় বাঁশি তৈরির কাজ। বর্তমানে প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ পরিবার এ কাজের সঙ্গে জড়িত। সারা বছরই এ গ্রামের নারী, পুরুষ ও শিশু-কিশোরেরা বাঁশি তৈরি করেন। তবে পহেলা বৈশাখ ঘিরে কিছুটা ব্যস্ততা বাড়ে। তবে এবার রমজান মাসে পহেলা বৈশাখ না হওযায় খুব একটা ব্যস্ততা নেই কারিগরদের। শুধু পহেলা বৈশাখ না দুই ঈদ ও দুর্গাপূজায় এই বাঁশির চাহিদা থাকে প্রচুর। বর্তমানে এখানকার বাঁশি ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, নাটোরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়।
কারিগররা জানান, বাঁশি তৈরির প্রধান উপকরণ নল। কিন্তু কিছু পরিবার নিজেদের জমিতে নল বা নলখাগড়ার চাষ করে। এ ছাড়া বেশির ভাগ মানুষ বিভিন্ন এনজিও থেকে চড়া সুদে টাকা নিয়ে নল কিনে বাঁশি তৈরি করে। তাই এই কুটির শিল্পকে রক্ষা করতে সরকারি নজরদারিসহ স্বল্প সুদে ঋণ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন কারিগররা। দেবীপুর গ্রামের বাঁশি কারিগর জব্বার বলেন, ৪০ বছর ধরে বাঁশি তৈরির কাজ করি। প্রথমে আমার বড় আব্বা এই কাজটা শিখে আসে। এখন প্রায় এই গ্রামের ২০০টি পরিবারের বেশি এই কাজ করে। আমি সংসারে কাজের পাশাপাশি এই কাজ করি। এখন এই গ্রাম বাঁশি গ্রাম নামেই সবার কাছে পরিচিত। আরেক কারিগর ওয়াজেদ বলেন, আগে আমি লেদের কাজ করতাম। কিন্তু পরের অধীনে কাজ করতে ভালো না লাগায় ১৮ বছর থেকে এই বাঁশি তৈরির কাজ করছি। এই কাজ করেই কোন রকম সংসার চলে ও ছেলেমেয়েদের বড় করছি। এই কাজের পাশাপাশি কৃষি কাজ করি। তিনি বলেন, বাঁশি তৈরির কাজে মেয়েদের বেশি পরিশ্রম করতে হয়। নল শুকানো, কাটা, ফিট করা সব তারাই করেই। আমরা ছেলেরা শুধু নল জমি থেকে কেটে নিয়ে এসে দেয়। বাঁশি তৈরির পর বিভিন্ন মেলায় নিয়ে গিয়ে বিক্রি করি ও বিভিন্ন জেলায় নিয়ে গিয়ে পাইকারি বিক্রি করি। এছাড়াও বিভিন্ন পাইকাররা মোবাইলে ওডার দেয়। জরি ও বেলুন পেঁচানো বাঁশি প্রতিপিস ৫ থেকে ৬ টাকা করে বিক্রি করা হয় আর সাধারণ বাঁশি ২ টাকা পিস বিক্রি করা হয়। এবং খুচরা ১০ থেকে ১৫ টাকা করে বিক্রি করা হয়। এতে করে কোন রকম পেটে-ভাতে চলে। বাঁশি কারিগর পারভীন বলেন, সংসারের কাজের ফাঁকে ফাঁকে এই কাজ করা হয়। ছেলেরা শুধু জমি থেকে নল কেটে নিয়ে এসে চিরে দেয়। আর আমরা নল পরিস্কার করা, কাটা, রোদে শুকানো, কল লাগানো, ফিট করার কাজ করি। এতে করে যে টাকা পাওয়া যায় সেই টাকা দিয়ে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ হয়। তিনি বলেন, বিভিন্ন এনজিও থেকে টাকা নিয়ে আমরা এই কাজ করি। অনেক সময় কিস্তির টাকা না থাকলে রাত জেগে ও না খেয়ে কাজ করতে হয়। বছরে বাড়তি কোন আয় হয়না। খেয়ে পড়ে সমান। হাসিনা বিবি বলেন, যখন বাঁশির চাহিদা থাকে তখন হয়তো দুই টাকা বেশি পাওয়া যায়। সেই টাকা দিয়ে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ হয়।
নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মির্জা ইমাম উদ্দিন বলেন, হস্তশিল্পের সাথে য়ারা জড়িত আছে তাদেরকে আরও কিভাবে সরকারিভাবে সহযোগিতা করা যায় সেই চেষ্টা আমাদের। তারা যদি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাহলে কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে তাদের ঋণের ব্যবস্থা করে দেওয়া যাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো সংবাদ