মোহাম্মদ আককাস আলী : প্রচন্ড তাপদাহে পুড়ছে বরেন্দ্র অঞ্চল হিসাবে খ্যাত নওগাঁ জেলা। তাপদাহে সৃষ্ট খরার কারণে প্রাকৃতিক মৎস্য সম্পদে ভরপুর ঐতিহ্যবাহী সাপারের জবই বিলের পানি শুকিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে। বিলের উত্তরে দামুর ও দক্ষিণে মাহিল কালিন্দরের নিচু এলাকায় যে, দু’একটি মা-মাছের অভয়াশ্রম ছিল সেখানকার পানি কমে যাওয়ায় অসাধু মৎস্য শিকারীরা সেখান থেকে মাছ চুরি করে বাজারে বিক্রিয় করছে। ফলে সম্প্রতি সাপাহার উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাহী অফিসার আব্দুল্যাহ আল মামুন পুরো বিলে সম্পূর্ণভাবে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন।
দীর্ঘ খরা ও বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পুরো বিলের নিম্নাঞ্চল সহ সম্পূর্ন বিল ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। বর্তমানে বিল থেকে সেচ দিয়ে ধান চাষের আবাদি জমিগুলিও হুমকির মুখে পড়েছে বলে একাধিক ধানচাষিরা জানিয়েছেন। বর্তমানে বিলটি তার যৌবন হারিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে।
নওগাঁ জেলার প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এই বিলে প্রাকৃতিক বিশালাকৃতির মাছ সহ বিভিন্ন জাতের পরিযায়ী পাখির কলতানে মুখরিত হয়ে থাকতো। কালের বিবর্তনে সব কিছু হারিয়ে বিলটি এখন পানি ও মৎস্য শূন্য হয়ে পড়েছে।
বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসার পর মৎস্য শূন্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দয্য হারানো এই জবই বিলটিকে এলাকার দরিদ্র মৎস্য চাষী ও মস্যজীবী গনের ভাগ্যন্নোয়নে একটি বৃহৎ মৎস্য প্রকল্প গড়ে তোলেন। সে থেকে বিলটি সঠিক পন্থায় শাসিত হতে থাকলে আবার প্রাকৃতিক মৎস্য ও শীতকালে বিভিন্ন জাতের পরিযায়ী পাখির কলতান ফিরিয়ে আসে।
হঠাৎ করে এবছর দীর্ঘ খরা ও প্রচন্ড তাপদাহ বিলের পানি সেচকাজে ব্যবহৃত হওয়ায় বর্তমানে বিলটি পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। যার ফলে বিলের সম্পূর্ন প্রাকৃতিক মাছগুলিও পানিশূন্যতার কারণে বিল থেকে হারিয়ে গেছে। বিলের মৎস্যজীবি সমিতির সভাপতি বকুল সহ অনেক মৎস্যজীবিদের মতে বিলে যে কয়েকটি কাঠা বা মৎস্য অভয়াশ্রমে যে পরিমনে মাছ রয়েছে সেগুলিকে রক্ষা করা গেলে এবং আকাশ হতে রহমতের বৃষ্টি নামলেই বিলটি আবারো প্রাকৃতিক মাছে ভরপুর হয়ে যাবে। তাই তারা বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিলে যে কোন ধরণের মাছ ধরা নিষিদ্ধকরণ করেছেন।
এবিষয়ে সাপাহার উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্যাহ আল মামুন জানান, যেহেতু বিলটি এলাকার মৎস্যজীবিদর ভাগ্যন্নোয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নওগাঁর সাপাহারে একটি বৃহৎ মৎস্য প্রকল্প তৈরী করেছেন, সেহেতু বিলের প্রাকৃতিক মৎস্যভান্ডারকে কিছুতেই নি:শেষ হতে দেয়া যাবেনা।