নওগাঁর মান্দায় ধান বিক্রি করতে না পেরে বিপাকে কৃষক
মান্দা(নওগাঁ)প্রতিনিধি : খাদ্যগুদামে কেনা ধানের বস্তা খামাল দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে অনেক আগেই। জুন মাসের হিসাবও ক্লোজ করা হয়েছে। এখন আর নতুন করে ধান কেনা যাবে না। কিনলে আবার ঝামেলার সৃষ্টি হবে। তাই ধান কেনা আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এমন বক্তব্য উপস্থাপন করে কৃষককে বিপাকে ফেলেছে নওগাঁর মান্দা উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন সরদার। তবে এমন বক্তব্য জালাল একাই দেননি, তার সাথে তাল মিলিয়েছেন সহকারী উপ-খাদ্য পরিদর্শক বেদারুল ইসলাম। তাদের এমন কার্যকলাপ দেখে মনে হচ্ছে এ যেন এক ধান সিন্ডিকেটের তেলেসমাতি চলছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে গত ২২মে প্রসাদপুর খাদ্যগুদামে চলতি বোরো মৌসুমে অভ্যন্তরীণ ধান-চাল ক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। সোমবার (১৭ জুলাই) পর্যন্ত এ খাদ্যগুদামে মাত্র ৮১ মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে। কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে খাদ্যগুদামে ১৬৬৩ মেট্রিক টন ধান ও ৪১১ মেট্রিক টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্র ছিল। একজন কৃষক সর্বোচ্চ ৩ মেট্রিক টন এবং সর্বনিম্ন ১২০ কেজি ধান খাদ্যগুদামে বিক্রি করতে পারবেন। কিন্তু গত দুই মাসে লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৫ শতাংশ ধান সংগ্রহ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা পুরণের জন্য কৃষকদের সচেতন করতে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও মাইকিং এর মাধ্যমে প্রচারণা চলেছে উপজেলাজুড়ে। এরপরও ১০০ মেট্রিকটন ধান কেনা সম্ভব হয়নি। এ প্রসঙ্গে উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আলী বলেন, ধান কেনা বন্ধ করা হয়েছে এটি সঠিক নয়। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামি ৩০ আগস্ট পর্যন্ত এ কার্যক্রম চালু থাকবে। ধান কেনা যাবে না ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা এমন কথা বলতে পারেন না। এটি সরকারি চাকরি বিধিমালার পরিপন্থী। এমন মন্তব্যের জন্য দায়ভার তাঁকেই নিতে হবে। একাধিক কৃষকের অভিযোগ, খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে হলে ‘কৃষক অ্যাপে’র মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হয়। সেই আবেদন কৃষি অফিস হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে যাবে। সেখানে লটারি করে কৃষক নির্বাচন করা হবে। এর পর নির্বাচিত কৃষক খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে পারবেন। দীর্ঘ সময়ের এসব জটিলতার কারণে কৃষকেরা খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। এদিকে এ্যাপস এর বিষয়ে একাধিক কৃষক অভিযোগ তরে বলেছেন, খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি জন্য গত ১৫ জুন ‘কৃষক অ্যাপে’ আবেদন করেছি। কিন্তু মঙ্গলবার পর্যন্ত সে আবেদনের লটারি হয়নি। আমি ম্যাসেজ না পাওয়ায় ধান বিক্রি করতে পারছি না। কৃষক ভোগান্তির এমন বিষয় নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা আঞ্জুমান বানু’র সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।