ফরিদ আহমেদঃ অনাবৃষ্টি, হালচাষ, শ্রমিক মজুরি, সার-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে লোকসানের শঙ্কা মাথায় নিয়ে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে। বৃষ্টিনির্ভর আমন চাষ এবার পুরোপুরি সেচের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে চাষিদের। এরই মধ্যে উপজেলা জুড়ে আমন খেতে দেখা দিয়েছে গোড়া পচা রোগ ও মাজরা পোকার আক্রমণ।
আমনচাষিরা জানিয়েছেন, বিভিন্ন কীটনাশক প্রয়োগ করা হলেও কাজে আসছেনা। যদি এখনই মাজরা পোকার আক্রমণ ও গোড়া পচা রোগ দমন করা না যায়, তাহলে আমনের ফলন নিয়েও আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।
এদিকে কৃষি বিভাগ বলছে চাষিদের সবধরনের সহায়তার পাশাপাশি পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন তারা। কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্য বলছে এবার উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো ১৯ হজার ৮৭০ হেক্টর, চাষ হয়েছে ১৯ হাজার ৮৭৫ হেক্টর জমিতে। যা চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে। এছাড়া আমন চাষিদের মাঝে সরকারি সহায়তা দেওয়া হয়েছে ২ হাজার ২৫০ জন চাষিকে । এবার ফলন হিসাবে চালের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭০ হাজার ৫৯২ টন।
উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের হোসেনাবাদ এলাকার চাষি আসারুল ইসলাম জানান, এবার তার ১ বিঘা আমন চাষে এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ১২ হাজার টাকা। মজুরি খরচ বিঘাপ্রতি ৬ জনকে ২৪০০ টাকা, চারা প্রতি বিঘাতে লেগেছে ২৫০০ টাকা, সেচ খরচ ১৫০০ টাকা, জমি চাষের খরচ ১০০০ টাকা, সার ও কীটনাশকে খরচ হয়েছে এখন অবধি ৪৫০০ টাকা। ফসল ঘরে তোলা পর্যন্ত কতা খরচ হবে কে জানে।
একই ইউনিয়নের ফ্যাক্টরী পাড়া মাঠের চাষি জিল্লুর রহমান জানায়, তিনি তার আমন খেতে পোকা দমনের জন্য কীটনাশক স্প্রে করছিলেন, গত দুইদিন আগেও স্প্রে করেছি কিন্তু, পোকার উপদ্রব এখনও কমেনি তাই আজ আবার স্প্রে করছি। পোকা না সরাতে পারলে এবার ফলনও ভাল হবে না। মশাউড়া এলাকায় আরেক আমন চাষি রফিকুল জানিয়েছেন, পুরো মাঠের ধানে গোড়া পচা রোগ ও মাজরা পোকার আক্রমণ হয়েছে। তা ছাড়া বৃষ্টি কম হওয়ায় ধান কম বাড়ছে। ধান পরিপূর্ণ পানি পেলে পোকার আক্রমণ কমে যাবে আর ধান বাড়তেও থাকবে।
উপজেলার গড়ের মাঠের চাষি আব্দুল আজিজ বলেন, ‘আবাদে প্রচুর খরচ হচ্ছে। এখন বৃষ্টির প্রয়োজন, পোকায় ধান গাছ নষ্ট করে দিচ্ছে। এবার ফলন কেমন হবে বুঝতে পারছিনা। পোকা না তাড়াতে পারলে এ মৌসুমে লোকসান গুনতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দৌলতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানান, বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় এবার আমন চাষের খরচ বাড়বে। এ ছাড়া পোকার উপদ্রব দেখা দিয়েছে চাষিদের পরামর্শ দেবার পাশাপাশি সরকারি সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এবারের আমন মৌসুমে ২ হাজার ২৫০ জন চাষিকে সরকারি সহায়তার বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে প্রদান করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।