সাপাহারে তালাক প্রাপ্ত স্ত্রীর পরিবার স্বামীর মুখের দাঁড়ি কেটে নির্যাতন করলো
মোহাম্মদ আককাস আলী : নওগাঁর সাপাহারে তালাক প্রাপ্ত স্ত্রীর পরিবারের লোকজন পরিত্যক্ত স্বামী মুহাঃ হযরত আলী (৪৩) নামের এক ব্যক্তিকে অমানুষিক নির্যাতনের পর অমানবিক ভাবে মুখের দাঁড়ি কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার হযরত আলী বাদী হয়ে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।
সাপাহার থানায় হযরত আলীর দায়েরকৃত মামলা সুত্রে জানাগেছে গত ০৮/০১/২০১০ সালে ইসলামি শারিয়াহ মোতাবেক উপজেলার গোয়ালা ইউনিয়নের কদমডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সেতাবুর রহমানের মেয়ে মোসা. মুসতারা খাতুনের সাথে কাশিতাড়া গ্রামের জিল্লুর রহমানের ছেলে হযরত আলী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। পরবর্তীতে তাদের দাম্পত্য জীবনে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকে স্ত্রী মুসতারা বিভিন্ন সময়ে তার স্বামীর সহিত ঘর সংসার করিতে পারিবেনা, সাংসারিক বিচ্ছেদ ঘটাবে বলে স্বামী হযরতকে বিভিন্ন ধরনের ভয় ভিতি প্রদান করে আসছিল। উল্লেখ্য যে গত ০১/০৭/২০২৪ তারিখ সকাল আনুমানিক ১০ টার সময় হযরত আলীর স্ত্রী মুসতারা তার সন্তান সহ তার পিতার বাড়ীতে বেড়াতে যায় এরপর সে পিতার বাড়ী হতে স্বামী হযরত আলীকে মোবাইলে ফোন করে তাঁর পিতার বাড়ীতে বসে সাংসারিক বিষয়ে আপস মিমাংসা করার পর দুই জনে ঢাকা যাওয়ার কথা বলে। স্ত্রী মুসতারার কথামত গত ৩০ আগস্ট বিকাল ০৩টার সময় গ্রাম্য গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সহ হযরত আলী তার পিতাকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ীতে যায়। সেখানে স্থানীয়ভাবে বসা শালিসে উভয়ের সম্মতিতে নিকাহ রেজিস্টার দ্বারা বিবাহ বিচ্ছেদ এর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এরপর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য গোয়ালা কদমডাঙ্গা গ্রামের জৈনক রফিকুল ইসলামের বাড়ীতে বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত বৈঠক বসে এবং দেনমোহর ও আনুষঙ্গিক বিষয়ে আর্থিক লেনদেন সম্পুর্ন করে উভয়ের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটানো হয়। এরপর একপর্যায়ে শালিসের লোকজন ওই বাড়ি হতে বের হওয়ার সময় বিবাদিগন বেআইনী জনতায় দলবদ্ধ হয়ে হযরত আলী ও তার পিতার পথরোধ করে ঘিরে ধরে সকলে মিলে তার বয়বৃদ্ধ পিতা ও তাকে শরীরিক ভাবে কিল ঘুষি ও লাথি মেরে জখম করার একপর্যায়ে হযরত আলী মাটিতে পড়ে যায়। এ সময় বিবাদি করিম ও সোহেল তার দুই হাত পা চেপে ধরে এবং শফিকুল ইসলাম কাপড় কাটা কাঁচি দিয়ে তাকে বেইজ্জতি করার উদ্দেশ্যে তার মুখের সুন্নতি দাঁড়ি মুঠি ধরে কেটে দেয়। সুযোগসন্ধানীগন এ সময় তার পাঞ্জাবির পকেট থেকে নগদ ১৮ হাজার ৩০০ টাকা অসৎ উদ্দেশ্যে চুরি করে নেয়। স্থানীয় লোকজন তাদের কবল থেকে হযরত আলী ও তার বাবাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার হযরত আলী বাদী হয়ে ঘটনার সাথে জড়িত তার সদ্য তালাক প্রাপ্ত স্ত্রী মোসা.মুসতারা খাতুন (২১) তার পিতা সেতাবুর রহমান(৫৮), চাচাত ভাই রফিকুল ইসলাম (৪৪) চাচা শফিকুল ইসলাম (৪৩), ধর্মভাই আবদুল করিম (৪২), ছোট ভাই সোহেল রানা (২৩) মা ডলি বেগম (৪২) ভাবী খালেদা বেগম (৪০) চাচাত ভাই মশিউর রহমান (২০) সহ অজ্ঞাত ১০/১২ জনের বিরদ্ধে রোববার সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় থানায় মামলা দায়ের করেন। এ বিষয়ে সাপাহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পলাশ চন্দ্র দেব এর সাথে কথা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন ও জড়িতদের আটক করে আইনের আওতায় আনার জোর চেষ্টা চলছে বলে জানান।