1. zillu.akash@gmail.com : admi2017 :
  2. editor@dailynewsbangla.com : Daily NewsBangla : Daily NewsBangla
মেয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রতিবেদন দেয়ায় মৃত্যু হলো পিতার, মৃত্যুর দায় নিবে কে? - dailynewsbangla
বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:২১ অপরাহ্ন

মেয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রতিবেদন দেয়ায় মৃত্যু হলো পিতার, মৃত্যুর দায় নিবে কে?

ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

মেয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রতিবেদন দেয়ায় মৃত্যু হলো পিতার, মৃত্যুর দায় নিবে কে?

রাজশাহী ব্যুরো: মত্যুর আগে গণমাধ্যমের কাছে কান্না করে বলছিলেন, আমার মেয়ের সাথে অন্যায় করেছে। একটি সত্য ঘটনাকে আড়াল করে অপরাধিকে বাঁচানোর মিথ্যা চেষ্টায় মত্ত রয়েছেন। এমন বুক ফাটা আর্তনাদ করছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের সাবেক কর্মকর্তা আঃ রহমান (৮৪)। কে এমন হীন কাজ করেছে? সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পশ্চিমাঞ্চল রেলের ডেপুটি সিওপিএস হাসিনা খাতুন। তিনি একটি সত্য ঘটনাকে আড়াল করেছে এবং আমার মেয়েকে যা নয় তাই বলেছে! আমার মেয়েকে জিজ্ঞেসাবাদের নামে মানষিক টর্চার করেছে, অকথ্য ভাষায় অপমান করেছে। আমি বাবা হয়ে সহ্য করতে পারছিনা। এসময় তার চোখে মুখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে একমাত্র মেয়ের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার সঠিক বিচার না পাওয়ার চাপা ক্ষোভ এবং হতাশায় বৃদ্ধটিকে কুরে কুরে খাচ্ছে। এরপর দুইদিন না যেতেই সাংবাদিকের কাছে খবর এলো সাবেক সেই রেল কর্মকর্তা আ: রহমান না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। এরপর চারিদিকে গুনঞ্জন শুরু হয় আঃ রহমান বিচারহীনতা ও মেয়ের অপমান সহ্য করতে না পেরে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই মৃত্যুর দায় নিবে কে?
গত বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে আঃ রহমান মারা যান। মৃত আব্দুর রহমান বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমের (আইডাব্লিউ) বিভাগের এসএসএই কার্য পদে শান্তাহারে দীর্ঘদিন চাকরি করেছেন। এরপর ২০০০ সালে তিনি অবসরে যান।

উল্লেখ্য, গত ৭ মে অফিস স্টাফ খালেক সিকদার দ্বারা নিজ অফিস কক্ষে ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হন একমাত্র মেয়ে রোবানা ফেরদৌস। রোবানা পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগের ট্রেসার পদে কর্মরত আছেন। ঘটনার পর ঐ নারীকে প্রাপ্য সমাধানের আশ্বাস দেন সেই দপ্তরের যন্ত্র প্রকৌশলী (সদর) ফজলে রব। ঘটনার পরের দিন উভয়কে ডেকে জিজ্ঞেসবাদ করেন এবং অভিযুক্ত খালেক সিকদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। খালেক একই দপ্তরের ফেরো প্রিন্টার পদে কর্মরত রয়েছেন। এই ঘটনা নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশ হয়েছে। এমন একটি সত্য ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে সর্বোচ্চ কাজ করেছে তদন্তকারি কর্মকর্তা ডেপুটি সিওপিএস হাসিনা খাতুন। এমনকি তদন্ত কমিটির সদস্যদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা রেখে ও সাক্ষর না নিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, উল্টো ভিক্টিমকে দোষারোপ ও তার চরিত্র নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। হাসিনা খাতুনের এমন বাজে মন্তব্য ও দুরব্যবহার ভিক্টিমকে তিক্ত করে। যা ভিক্টিমকে আত্মহত্যার মত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়। এঘটনায় শেষ পর্যন্ত সেই নারী ৩০ অক্টোবর আত্মহত্যা করে বসে। ভাগ্যের শুভচক্রে মেয়েটি বেঁচে যায়। কিন্তু নিজে বাঁচলেও মেয়েটির জীবন থেকে চিরদিনের জন্য হারিয়ে যায় মাথার ছাতা (পিতা)। তবে মত্যুর আগে মেয়েটির বাবা আ: রহমান কান্না করে আক্ষেপ করেছিলেন আর বলছিলেন, আমার মেয়ের সাথে অন্যায় করা হচ্ছে। আমি কি এর বিচার পাবো না?
একজন পিতার এমন আহাজারি ও নায্য অধিকার চাওয়ায় সাংবাদিকদের অনুপ্রাণিত করে এবং সত্য ঘটনার অনুসন্ধান শুরু করে। অনুসন্ধানে তদন্তকারি কর্মকর্তা হাসিনা খাতুন, অভিযুক্ত খালেক সিকদার ও সাবেক জিএম অসীম কুমার তালুকদার এর গভীর সখ্যতার সূত্র মিলেছে। যা আগামী পর্বে তুলে ধরা হবে। অভিযুক্ত খালেক সিকদার একজন অর্থ ও নারী লোভি মানুষ। বিবাহিত জীবনেও সে একাধিকবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। চাকরির পাশাপাশি তিনি সুদের ব্যবসা করেন। তার চওড়া সুদের পাল্লায় পড়ে বহু মানুষ নিঃস্ব হয়েছেন। তিনি চাকরির দেয়ার নামে বহু মানুষের থেকে টাকা নিয়েছেন এবং প্রতারণা করেছেন। যাদের কাছে টাকার বিনিময়ে ডকুমেন্টস দিয়েছেন তারা পরবর্তীতে মামলা করেছেন। রংপুর আদালতে তার বিরুদ্ধে এনআই এক্টের মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগের ব্যাপারে ওপেন সিক্রেট। তবুও তার বিরুদ্ধে শক্ত কোন ব্যবস্থা নেয়নি রেল কর্তৃপক্ষ। এই খালেক সিকদারের ব্যাপারে জোর অনুসন্ধান চলমান রয়েছে, যা আগামী পর্বে তুলে ধরা হবে।
এমন একটি ব্যক্তির পক্ষ নিয়ে লড়াই করছেন ডেপুটি সিওপিএস হাসিনা খাতুন। একটি সত্য ঘটনাকে আড়াল করে, অপরাধ ও অপনাধীকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন তিনি। অথচ তদন্তকারি কর্মকর্তা হাসিনা খাতুনের পূর্বের ইতিহাস ঘাঁটলে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসছে।
আ: রহমানের মৃত্যু, খালেক সিকদারকে বাঁচানোর চেষ্টার ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমের ডেপুটি সিওপিএস হাসিনা খাতুনের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি প্রতিবেদকের উপর ক্ষিপ্ত হন এবং বলেন, ভাই আমি যতটুকু পেরেছি ততটুকু তথ্য দিয়েছি। আমাকে আর বিরক্ত করবেন না। ক্ষিপ্ত কন্ঠে তিনি ঐ প্রতিবেদককে ফোন না করতে নির্দেশ প্রদান করেন এবং ফোন কেটে দেন।
এসকল ব্যাপার নিয়ে পশ্চিম রেলের অবিভাবক মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মামুনুল ইসলাম পিইঞ্জই: এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাই তার মন্তব্য ও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো সংবাদ