ডেইলি নিউজ বাংলা ডেক্স: আমার ভাইএর রক্তের রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমরা কি ভুলিতে পারি। দেশের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস হিসাবে পরিচিতি ‘ভাষার মাস’। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহিদ দিবস প্রতিবছর এ মাসের শুরু থেকেই নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়ে থাকে।
তবে এ বছর করোনাভাইরাস সৃষ্ট বৈশ্বিক মহামারির কারণে পরিস্থিতি ভিন্ন। ৬৯ বছর আগে ১৯৫২ সালে মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে রাজপথে প্রাণ উৎসর্গকারী শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোই সব আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য। পাশাপাশি, এসব আয়োজনের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা হয় ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ও তাৎপর্য। ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি,’ এ গানটি স্মরণ করিয়ে দেয় ভাষার মাসের আগমনী বার্তা।
‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা’ তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের এমন ঘোষণার প্রতিবাদে এদেশের সাধারণ মানুষ বিক্ষুব্ধ করে তুলেছিল। বাংলা ভাষার সমান মর্যাদার দাবিতে পূর্ব বাংলায় আন্দোলন দ্রুত দানা বেঁধে ওঠে। আন্দোলন দমনে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে ঢাকা শহরে মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। কিন্তু সরকারি বিধি-নিষেধ উপেক্ষা করে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভেঙে রাস্তায় নামে প্রতিবাদী জনতা।
সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক কর্মীরা মিলে ১৪৪ ধারা ভেঙে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি এলে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। এতে নিহত হন সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিকসহ নাম না জানা আরও অনেকে। পৃথিবীর ইতিহাসে মাতৃভাষার জন্য এমন মহান আত্মত্যাগের ঘটনা বিরল। বাংলার দামাল সন্তানদের এই আত্মত্যাগ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায় ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর।
এদিন ইউনেস্কো ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর থেকে দিনটি এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরকারিভাবে পালিত হয়।ফেব্রুয়ারি ভাষার মাসের প্রথম দিন থেকেই বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ রাজধানী ও বিভিন্ন জেলা শহরে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। এ বছর করোনার কারণে ভাষার মাসের প্রথম দিন থেকেই বাংলা একাডেমিতে একুশে বইমেলা শুরু হচ্ছে না। এবারের মেলা ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।