মদন (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি: গত ৪ঠা এপ্রিল রোববার সন্ধ্যার হঠাৎ আচমকা গরম বাতাসে নেত্রকোণা হাওররাঞ্চল মদন উপজেলার বিভিন্ন হাওরে অন্তত ৫ হাজার ৯৫৮ হেক্টর বোরো মৌসুমের ধান ক্ষতি হয়েছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন হাওরাঞ্চলের কৃষক- কৃষাণীরা। ক্ষতিগ্রস্থ ফসলের মধ্যে রয়েছে, হাইব্রীড হীরা ও বি২৯ জাতের ধান।
গাজীপুর ধান গবেষণা ইনস্ট্রিটিউটের রোগ তত্ব বিভাগের প্রধান সিনিয়র বৈজ্ঞানিক ড. মো: আশিক ইকবাল খানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি পর্যবেক্ষক দল মদনের ক্ষতিগ্রস্ত হাওরগুলো পরিদর্শন করেছেন। বৈজ্ঞানিক দল তাঁদের মতামতে জানান, ধানের ফুল ও দুধ অবস্থায় তাপ প্রবাহের কারণে ফসলের এই ক্ষতি হয়েছে। যাকে হিট শক বলা হয়।
এর অন্যতম কারণ হলো, আবহাওয়ার পরিবর্তন ফলে দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় বৃষ্টিপাত হচ্ছিল না। যদি বাতাসের সাথে বৃষ্টি হতো তাহলে এই পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হতো না। মদন উপজেলা কৃষি অফিসার রায়হানুল হক বলেন, গরম বাতাসে ফসলের যে ক্ষতি হয়েছ শিলা বৃষ্টি হলেও এমন ক্ষতি হতো না।
হাওরে যে ধান গাছগুলোতে ফ্লাওয়ার এসেছিল সেগুলো এখন রোদে শুকিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ৯৫৮ হেক্টর জমির ধান ক্ষতি হয়েছে। উপজেলায় ৫০০০ হাজারের বেশি কৃষক পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
আমরা কৃষকদের জমিনে পানি ধরে রাখার পরার্মশ দিচ্ছি। এবং যেসব ফসলের ক্ষেতে এখনও শীষ বের হয়নি, সে সব জমিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি ধরে রাখার পাশাপাশি ১০ লিটার পানিতে ৬০ গ্রাম এমওপি সার, ৬০ গ্রাম থিওভিট,ও ২০ গ্রাম চিলেটেড জিংক মিশ্রণ করে স্প্রে করার পরামর্শ নিয়েছে বিজ্ঞানীরা। এতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় থাকা ধান গাছগুলো কিছুটা শক কাটিয়ে উঠতে পরবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘গরম বাতাসে ধানের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। এমন ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। গত ৬ই এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে গাজীপুর ধান গবেষণা ইনস্ট্রিটিউট থেকে বিজ্ঞানীরা এসেছিলেন। তাঁরা মদনের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্থ হাওর পরিদর্শন করে প্রাথমিকভাবে বলছেন এটা হিট শক এর জন্য হয়েছে।