1. zillu.akash@gmail.com : admi2017 :
  2. editor@dailynewsbangla.com : Daily NewsBangla : Daily NewsBangla
১০৩ বছরের বৃদ্ধার শেষ ইচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার - dailynewsbangla
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৬:৪৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম:

১০৩ বছরের বৃদ্ধার শেষ ইচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার

ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১২ মার্চ, ২০২১
১০৩ বছরের বৃদ্ধার শেষ ইচ্ছে, জীবনের শেষপ্রান্তে এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটিবারের জন্য দেখা করার।

১০৩ বছরের বৃদ্ধার শেষ ইচ্ছে, জীবনের শেষপ্রান্তে এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটিবারের জন্য দেখা করার।


শুধু আওয়ামী লীগ করার কারণে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হন রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার ঝালুকা ইউনিয়নের আমগাছি গ্রামের দশরথ চন্দ্র কবিরাজ। তাকে সবাই দশরথ মাস্টার নামেই চেনেন।

তবে দশরথ মাস্টার না থাকলেও একা বেঁচে আছেন তার শতবর্ষী স্ত্রী লক্ষ্মী রানী কবিরাজ। জীবন সায়াহ্নে এসে তিনি একবার শেষ দেখা করতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। অসহায় এই নারীর এখন নেই আর কোনো অবলম্বন। স্বামীর ভিটা আঁকড়ে পড়ে প্রহর গুনছেন শেষ দিনের জন্য।

জানা যায়, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আজন্ম সৈনিক দশরথ মাস্টার ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। তার ছেলেও মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশ নেন। দশরথ মাস্টার ছিলেন জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের ঘনিষ্ঠ সহচর। পঁচাত্তর-পরবর্তী সব আন্দোলন-সংগ্রামে সমানভাবে ছিলেন সক্রিয়।

শুধু আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার কারণে বারবার সইতে হয়েছে জুলুম-নির্যাতন। তার পরও এক মুহূর্তের জন্য আদর্শচ্যুত হননি। এদিকে শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় নৃশংস নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০০৬ সালের ১৩ আগস্ট অনেকটাই বিনা চিকিৎসায় মারা যান দশরথ মাস্টার। তবে তার আগে বসতভিটা দখলের জন্য দুই দফায় তার বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়।

লুট করা হয় পুকুরের মাছ। কেটে সাবাড় করা হয় বাগানের গাছ। স্বামীর বিরান ভিটায় কালের সাক্ষী হয়ে এখনও বেঁচে আছেন দশরথ মাস্টারের শতবর্ষী স্ত্রী লক্ষ্মী রানী কবিরাজ। লক্ষ্মী রানী বলেন, ২০০১ সালে শুধু আওয়ামী লীগ করার কারণে তার স্বামীকে নৃশংসভাবে নির্যাতন করে বিএনপি-জামায়াতের সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী।

রাতের আঁধারে জ্বালিয়ে দেয়া হয় বাড়িঘর। সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা জোরপূর্বক লুট করে পুকুরের মাছ। বাড়ির চারপাশের বাগানের গাছগাছালি কেটে সাবাড় করা হয়। চেয়ে চেয়ে দেখলেও বাধা দেয়ার ক্ষমতা ছিল না। কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি। পুলিশকে বারবার ডেকেও পাওয়া যায়নি। থানায় বারবার অভিযোগ দিলেও পুলিশ একটিবারের জন্য আসেনি। অসহায় পরিবারটিকে সইতে হয়েছে সীমাহীন নির্যাতন। শুধু রাজনৈতিক কারণে।

লক্ষ্মী রানী কবিরাজ জানালেন, দশরথ মাস্টারের পরিবারের ওপর চালিত ভয়াবহ নির্যাতনের খবর ওই সময়ে পত্রপত্রিকায় প্রকাশ হয়। দেশ-বিদেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে নির্যাতিত অন্য পরিবারগুলোর সঙ্গে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পান।

প্রধানমন্ত্রী কিছু আর্থিক সহায়তাও দেন। লক্ষ্মী রানী বলেন, তিনি আর একটিবার শেষবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান। বলতে চান তার পরিবারের ওপর হওয়া ভয়াবহ নির্যাতনের কিছু কথা। এই তার শেষ ইচ্ছা। জানা যায়, লক্ষ্মী রানী কবিরাজের বর্তমান বয়স ১০৩ বছর। ১৯১৭ সালের ১৫ মে জন্ম। সাত সন্তানের এ মা দেখেছেন ব্রিটিশ রাজ। ভারত পাকিস্তান ভাগ। দেখেছেন পাকিস্তানি শাসন।

দেখেছেন মুক্তিযুদ্ধ। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সহায় সম্পদ সব ফেলে স্বামী দশরথ মাস্টারের সঙ্গে সীমান্ত পেরিয়ে সন্তানদের নিয়ে ভারতে চলে যান। পাক হানাদার বাহিনী তার বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। ভয়াবহ নির্যাতনের কথা স্মরণ করে লক্ষ্মী রানী আরও বলেন, ওই সময় বাড়িতে থাকতে না পেরে নির্যাতনের সম্বল করে অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে লুকিয়ে থেকে প্রাণ বাঁচাতে হয়েছে।

সন্ত্রাসীদের ভয়ে আজ এ বাড়ি কাল ওবাড়ি করে কেটেছে তাদের দিন। পালিয়ে থাকতে হয়েছে দিনের পর দিন। সেই সঙ্গে দশরথ মাস্টারের শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। একসময় বিনা চিকিৎসায় দশরথ চন্দ্র মাস্টার মারা যান। দুঃসহ জীবনের না বলা কিছু কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে চান উল্লেখ করে শতবর্ষী লক্ষ্মী রানী বলেন, আমার বিশ্বাস বঙ্গবন্ধুকন্যা দশরথ মাস্টারের পরিবারের ওপর হওয়া নির্যাতনের কথা ভুলে যাননি।

জীবনের শেষপ্রান্তে এসে শুধু একবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাই। আমার আর কোনো চাওয়া নেই। বাবার সঙ্গে সন্ত্রাসী বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন ছেলে সুকুমার চন্দ্র কবিরাজ। ছাত্রলীগ-যুবলীগ হয়ে এখন তিনি দুর্গাপুর পৌর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক। সুকুমার চন্দ্র কবিরাজ বলেন, আমরা আজন্ম মুজিব আদর্শে বেড়ে উঠেছি।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে শত জুলুম-নির্যাতনেও আমার পরিবার আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়নি। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাই আমাদের দিশারি। আমার মা-জীবনের শেষপ্রান্তে এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটিবারের জন্য দেখা করতে চান। চোখের দেখা দেখতে চান। এটিই আমাদের শেষ ইচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো সংবাদ