রাজশাহী ব্যুরো: রাজশাহী মহানগরীতে সাংবাদিক পরিচয়ের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা, প্রতারণা ও ছিনতাই চালিয়ে যাওয়া চিহ্নিত আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম নুরুন নবী চাঁদ। সে হেতেমখাঁ বড় মসজিদ এলাকার মৃত নুরুল হুদার ছেলে এবং রাজশাহী পদ্মা প্রেসক্লাবের সভাপতি হাবীব তারা এর (সৎ) বড় ভাই। তবে এর আগে হাবীব তারা’র আরেক ছোট ভাই প্রতারনার মামলায় গ্রেফতার হয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে বোয়ালিয়া থানা পুলিশের একটি বিশেষ টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে নুরুন নবী চাঁদকে আটক করে। গ্রেফতারের সময় তার বিরুদ্ধে দুইটি মামলার ওয়ারেন্ট ছিল। এর মধ্যে একটি মাদক মামলা (মামলা নং-১৫/১৬), যা ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ এর বি ধারায়। মামলাটি ২০১৬ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি দায়ের করা হয়েছিল। অপরটি প্রতারণার মামলা (এনজিআর মামলা নং-৩৮), যা গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে চন্দ্রিমা থানায় পিআর মামলা হিসেবে দায়ের হয়।
গ্রেফতারের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তা বোয়ালিয়া থানার সাব-ইন্সপেক্টর আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, “নুরুন নবী চাঁদকে দীর্ঘদিন ধরে খুঁজছিলাম। তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা ও প্রতারণার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। আমরা তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছি। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নুরুন নবী চাঁদ রাজশাহীর একটি পদ্মা প্রেসক্লাবের সদস্য পরিচয় ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করত। সাংবাদিক পরিচয়ের কারণে অনেক সময়ই সে পুলিশের হাত থেকে রক্ষা পেত এবং তার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঢেকে রাখত। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, তার ছদ্মবেশে প্রতারণার কারণে অনেক নিরীহ মানুষ হয়রানির শিকার হয়েছেন।
পুলিশের নথি ও স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, নুরুন নবী চাঁদ দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা, ছিনতাই ও প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। মাদক মামলার পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে একাধিক ছোট-বড় প্রতারণার মামলা রয়েছে। চাঁদ গ্রেফতারের খবরে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি নেমে এসেছে। এলাকাবাসীর একাধিক ব্যক্তি বলেন, শুধু চাঁদ একাই সাংবাদিক পরিচয় দিত না, এই পেশায় রয়েছে দুলাভাই ও ছোট ভাইয়েরা। যার দাপট দেখিয়ে এলাকায় দাপট দেখাত। আমরা তার বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারতাম না। অবশেষে তাকে গ্রেফতার করায় স্বস্তি পেয়েছি।”
এ ঘটনায় পুলিশ জানায়, সাংবাদিক পরিচয়ে কেউ অপরাধ করলে ছাড় দেওয়া হবে না। প্রকৃত সাংবাদিকদের সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে এমন ভুয়া পরিচয়ের অপব্যবহার রোধে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।