সিলেট প্রতিনিধি: সিলেটের সদর উপজেলার ফসলের মাঠে মৃদু শীতল বাতাসে পাকা সোনালি ধান দোল খাচ্ছে মাঠে মাঠে। পাকা ধানের গন্ধে কৃষকদের মনে এখন বেশ প্রফুল্লতা। পাকা ধান কাটতে হাতে কাচি নিয়ে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। অন্যদিকে মাঠ থেকে নতুন ধান বাড়িতে তোলার জন্য গোবরের সাথে জল মিশিয়ে উরা ও খলা তৈরিসহ পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন কৃষাণীরা।
কৃষকরা মাঠ থেকে ধান কেটে খলায় এনে দিচ্ছে পারা। বাতাসে এখন শীতের পরশ। মাঠের পর মাঠ জোড়া সবুজ ধানের শীষগুলোতেও এখন সোনা রঙের হাসি। শেষ অগ্রহায়ণের সোনালি রোদে সেই হাসি আরও ঝলমল করে ওঠছে। অনেক মাঠেই কাস্তে নিয়ে ধান কাটার উৎসবে নেমে পড়েছেন কৃষক। ফুরফুরে মনে ফসল উঠানে তুলছেন তারা।
এ বছর আবহাওয়া ও পরিবেশ প্রতিকূলে থাকা সত্ত্বেও ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়ন সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় শেষমেষ খরায় অনেকটা রূপায়িত আমন ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এরপর নির্ধারিত সময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় ধানের তুর বের হতে বিলম্ব হয়েছে এবং কয়েক ধাপে তুর বের হয়েছে।
যার জন্য কৃষকরা ভালো ফলন পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে।উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের অধিক জমিতে আমন ধানের চাষাবাদ হয়েছে। এবার আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকায় ধানের বাম্পার ফলন অনেকটা কম হয়েছে। তবুও ফলন পেয়ে কৃষক অনেকটা
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর এক বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করতে সবমিলিয়ে খরচ হয়েছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। বর্তমানে শ্রমিক খরচ আরও প্রায় তিন হাজার টাকা বেড়ে ১৫ হাজারে ঠেঁকছে।
এ দিকে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে চার দিন ধরে মাঝারি বৃষ্টি ও দমকা বাতাস বইছে। সূর্যের দেখা নেই তিন দিন ধরে।দুই দিন যাবৎ হালকা বৃষ্টি আর দমকা বাতাসে ফসলের মাঠে কাজে যেতে পারছে না কৃষকরা। কাটা ধানও মাঠে রয়েছে কৃষকের। আবহাওয়ার এমন বৈরীতায় মাঠের ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন উপজেলার চাষিরা
মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আমনের মাঠ ঘুরে চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জমিতে পাকা ধান বৈরী আবহাওয়ার কারণে কাটা যাচ্ছে না এদিকে খলায় পারা দেওয়া ধান মাড়াই দেওয়া যাচ্ছে না। বৈরী আবহাওয়া হালকা বৃষ্টি দমকা বাতাসে ঠান্ডার কারণে কোনো শ্রমিক মাঠে কাজ করতে আগ্রহী হচ্ছে না।
এমনকি গবাদিপশুর গো খাদ্যের জন্য যে খড় সংগ্রহ করা হয় হঠাৎ বৃষ্টির কারণে তা অনেকটা পচে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। সবমিলিয়ে কিছুটা হলেও বিরক্তিকর সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে কৃষকদের।
রফিক মিয়া বলেন, ‘হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় মাঠের কাটা ধানগুলো খলা রয়ে গেছে। এখনতো বৃষ্টিতে ভিজে কাজ করার মতো শ্রমিকও পাওয়া যাচ্ছে না। সবই আল্লাহর ইচ্ছা, অপেক্ষা ছাড়া কিছু করার নাই।
কৃষক মজিদ মিয়া বলেন , বৃষ্টি আরো দুই দিন থাকলে ধানের ক্ষতি হবে। এই ধান থেকে পরে বীজও করা সম্ভব হবে না। ধান কলো হয়ে যাবে এবং ভাতও খাওয়া যাবে না। উপজেলা কৃষি অফিসারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে যোগাযোগ করা যায় নাই৷