মাসুদ রানা,(বাউফল প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর বাউফলে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাসুদ শরীফ (৩৪) এর উপর কিশোর গ্যাং এর আতর্কিত হামলা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে কিশোর গ্যাং এর প্রধান কাওছার আহমেদ খান (১৬) ও সেকেন্ড কমান্ড আবদুল্লাহ আল বাপ্পি এর বিরুদ্ধে।
শনিবার (২ জুলাই) রাত আনুমানিক ৮টার দিকে উপজেলার কালিশুরী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড শিবপুর গ্রামের কুমারখালী বাজারে ফিরোজ টেলিকম ও মোবাইল সার্ভিসিং সেন্টারের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।হামলায় আহত মাসুদ শরীফ বর্তমানে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গুরুত্বর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাসুদ শরীফের ভাতিজা রিদয় শরীফ(১৯) বরিশাল বিএম কলেজের শিক্ষার্থী।ক্লাস না থাকায় বর্তমানে বাড়ীতে অবস্থান করে বাড়ি থেকে কালিশুরীর কুমারখালী বাজারে ব্যাক্তিগত কাজের জন্য আসলে অভিযুক্ত কিশোর গ্যাং’র প্রধান কাওছার আহমেদ খান মোটরসাইকেল গাড়িটি দ্রুত গতিতে চালিয়ে পথিমধ্যে রিদয় শরীফের সামনে (ফিল্ম স্টাইলে) গাড়িটি থামিয়ে বলে “রিদয় তুই এলাকায় আইছো কবে তোরে এর পরে যে আর রাস্তায় দেহি না,দেখলে হাতপা গুরিয়া দিমু” তখন রিদয় বলে কেন? আমি কি ক্ষতি করেছি তোমার যে অযথা আমারে মারবা কেন! তুমি আমাকে কি কারনে হুমকি দিচ্ছ! কাওছার বললো, ‘বেশি বাড়াবাড়ি করবি না! অহনি তোরে দিমু’। পরে রিদয় শরীফ কাউছারের আচার দেখে ওখান থেকে চলে গিয়ে চাচা মাসুদ শরীফের কাছে হুমকির ঘটনাটি জানান। তখন মাসুদ শরীফ কুমারখালি বাজারের ছত্তার মেডিকেল হলের সামনে কাওছারকে পেয়ে জিজ্ঞাসা করলে কিশোর কাওছার খান উত্তেজিত হয় এবং একপর্যায় মাসুদ শরীফ ও কাওছার খানের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়।
ঘটনাস্থলেই উপস্থিতি কালিশুরী ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি অলিউল ইসলাম অলি,সাবেক ইউপি সদস্য জুয়েল শরীফ,ছাত্রলীগ নেতা নিরব সহ ২০-৩০ জন লোকের উপস্থিতিতে তাদেরকে মিমাংসা করে দেয়। কিন্তু মিমাংসার ১৫ মিনিট যেতে না যেতেই মাসুদ শরীফ মোবাইলে বিকাশে টাকা বের করার জন্য কুমারখালি বাজারের ফিরোজ টেলিকম এন্ড মোবাইল সার্ভিসিং সেন্টারের সামনে গেলে হঠাৎ পিছন থেকে কাওছার আহমেদ (১৮) ও আবদুল্লাহ আল বাপ্পি (১৪) এবং সৈকত হাওলাদার(১৭) সহ ৪-৫ জনের একটি কিশোর গ্যাং মাসুদ শরীফের উপর এলোপাতাড়ি লাঠি সোটা দিয়ে মাথায় হামলা চালিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম হয়।
স্থানীয়রা মাসুদ শরীফকে দ্রুত বেসরকারি স্লোব বাংলাদেশ হসপিটালে নিয়ে যায়। সেখানে দ্বায়িত্বরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন।গোপন সুত্রে যানা যায়,কিশোর গ্যাং’র প্রধান কাওছার আহমেদ খান কালিশুরী ইউনিয়নোর ৬নং ওয়ার্ড শিবপুর গ্রামের মোঃ জব্বার খানের ছেলে ও কিশোর গ্যাং এর সেকেন্ড কমান্ড আবদুল্লাহ আল বাপ্পি কালিশুড়ি বন্দরের গরুর হাট এলাকার ফল ব্যবসায়ী বাহাদুর হাওলাদারের ছেলে। কাওছার আহমেদ’ আবদুল্লাহ আল বাপ্পি’র নেতৃত্বে কালিশুরী এলাকায় একটি কিশোর গ্যাং রয়েছে। অত্র এলাকায় তারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলছে। তাদের ভয়ে কেউ কোন প্রতিবাদ করতে সাহস পায়না। হিমসিম খেতে হচ্ছে অনেক অভিভাবকদের। তাছাড়াও কাওছার আহমেদ খান ও আবদুল্লাহ আল বাপ্পি এলাকায় মাদকের সাথে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক অভিভাবকরা বলেন, কাওছার আহমেদ খান ও আবদুল্লাহ আল বাপ্পি এলাকায় কিশোর গ্যাং এর রাজত্ব কায়েম করে চলছে। বিভিন্ন সময়ে স্কুল পড়ুয়া মেয়েদের পথেঘাটে বিরক্ত করে। তার ভয়ে এবং মান ইজ্জতের কারনে কারো কাছে অভিভাবকরা বলেনি। একটি সূত্র জানিয়েছে, কাওছার আহমেদ মাদক মামলায় কিছুদিন আগে জেল হাজতেও ছিলেন। কাওছার খান এলাকায় চিহ্নিত ত্রাস। তারা আরো বলেন,দেশে কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে চলমান আইন থাকা সত্ত্বেও কিভাবে এবং কোন শক্তির উৎস নিয়ে তার (কিশোর গ্যাংরা) রাজত্ব কায়েম করে- প্রশ্ন এলাকাবাসীর।
এ বিষয়ে জানার জন্য কাওছার খানকে তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করে নাই। এ বিষয় ৬নং শিবপুর ওয়াডের্র ইউপি সদস্য বাবুল হাওলাদার বলেন, কাওছার খান এলাকায় একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী।মাদক আইনে তার বিরদ্ধে মামলা রয়েছে। এছাড়াও কাওছার খানের নেতৃত্ব একটি কিশোর গ্যাং রয়েছে যারা প্রকাশ্যে মাদক সেবন করে থাকে এবং স্কুল-কলেজে পড়ুন মেয়েদের পথিমধ্যে ডিস্টার্ব করে। এ ব্যপারে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল-মামুন বলেন,’আপনাদের মাধ্যমে কিশোর গ্যাং হামলায় ঘটনা শুনেছি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।