বগুড়া-৩ (আদমদীঘি-দুপচাঁচিয়া) আসন লাঙ্গল-নৌকা নাকি বাবা-ছেলে; ভোটের মাঠে লড়ছেন কারা
রাবেয়া সুলতানা, (বগুড়া) প্রতিনিধি:
দীর্ঘ ১৫ বছর পর বগুড়া-৩ (আদমদীঘি-দুপচাঁচিয়া) নির্বাচনী আসনে নৌকার প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর থেকে আনন্দে আত্মহারা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। তবে এই আসনে পর পর দু’বারের এমপি ও জাপা চেযারম্যানের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম তালুকদারও তার দল থেকে মনোনয়ন পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। এমন পরিস্থিতিতে জনগনের মুখে মুখে একটিই প্রশ্ন এই আসন এবারও কি শরীক দলকে ছেড়ে দিতে হবে? তবে এবিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আসন বণ্টনের সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এ আসনে নৌকাই রাখবে নাকি জোটের শরিক হিসেবে লাঙ্গল বা অন্য কাউকে দেবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। যে সিদ্ধান্তই আসুক কেন্দ্রের নির্দেশনা মেনে আমরা কাজ করবো।’ জানাগেছে, এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনিত হয়েছেন আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদ্য পদত্যাগ করা উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম খান রাজু। তাঁর বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন, তার ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক খাঁন মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ আল মেহেদী বাঁধন। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপার আলোচনা চলছে। কেউ বলছেন, তিনি ডামি প্রার্থী আবার কেউ বলছেন, এ আসন শরীকদের দিলে আসনটি হাতছাড়া হতে পারে এজন্য ছেলেকেই প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করাতে পরেন বাবা। যে করেই হোক আসনটি নিজেদের কব্জায় রাখতে এমন কৌশল হতে পারে বলে স্থানিয়দের ধারনা। এদিকে এই আসনটিতে স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আরও চার আওয়ামী লীগ নেতা। তারা হলেন, আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অজয় কুমার সরকার, সহ-সভাপতি এরশাদুল হক টুলু, বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ফেরদৌস স্বাধীন ফিরোজ ও আওয়ামী লীগের সমর্থক জামিলুর রশিদ তালুকদার।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই-এলাহী কাজল জানান, তাদের একমাত্র প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম খান রাজু। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বুঝিয়ে তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করার জন্য বলা হবে।
জানতে চাইলে নৌকা মার্কার মনোনীত প্রার্থীর ছেলে ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেওয়া খাঁন মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ আল মেহেদী জানান, ‘১৮ তারিখ পর্যন্ত আমি দেখবো। যদি এই আসন জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া হয়, তাহলে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করবো। আর যদি বাবা প্রার্থী থাকেন তাহলে আমি প্রত্যাহার করে নেবো। আসন সমন্বয় হলে আপনার বাবা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে আপনার সঙ্গে কাজ করবেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাবা কাজ না করলেও সমস্যা নেই, এলাকার মানুষ আমার সঙ্গে আছেন। তাদের নিয়েই ভোটের মাঠে থাকবো। জানতে চেয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম খাঁন রাজুর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি। জাপা মনোনিত লাঙ্গলের প্রার্থী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম তালুকদার জানান, নির্বাচন কমিশন থেকে মার্কা পাওয়ার পর পুরোদমে মাঠে নামবেন। আওয়ামী লীগের সাথে আসন সমন্বয় হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিষয়। সমন্বয় হোক বা না হোক তিনি নির্বাচনের মাঠে থাকবেন বলেও জানান।