রেজা মাহমুদ,নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: মৌসুমের শুরুতে বেশী দাম পেলেও বর্তমানে মুলার দাম কমে যাওয়ায় হতাশায় নীলফামারীর কৃষকরা। চাষাবাদ খরচ না ওঠায় অনেকের জমিতেই পড়ে আছে মুলা। মুলা বিক্রি করে শ্রমিকের মজুরী হয়তো উঠবেনা সেই ক্ষতির আশংকায় মুলাচাষীরা জমিতেই ফেলে রেখেছেন। জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানা গেছে, গত ২০ দিনের ব্যবধানে ৪০ টাকা কেজির মুলা এখন বিক্রি করা হচ্ছে ২ টাকা কেজি দরে। এতে ক্রেতারা খুশি হলেও কৃষকেরা পড়েছেন হতাশায়।
এতে করে পরিবহন খরচও উঠছে না কৃষকের। বিক্রেতারা বলছেন, ২০ দিন আগেও ৪০ টাকা কেজি দরে মুলা বিক্রি হয়েছে। শীতকালীন সবজি হিসেবে মুলার চাহিদা থাকায় দামও বেশি ছিল। এখন বাজারে সকল সবজির পাশাপাশি মুলার যোগানও বেড়েছে। ফলে মুলার দাম কমে ২ টাকা কেজিতে নেমেছে। কৃষকরা বলছেন, শুরুতে দাম ভালো পেলেও হঠাৎ দাম কমে যাওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। কয়েক দফা বন্যার কারণে এমনিতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন।
তাই এবার সবজি উৎপাদনে খরচ আগের তুলনায় অনেক বেশি। ঢেলাপীড়হাটে মুলা বিক্রি করতে আসা নজরুল নামে একজন কৃষক বলেন, চার হাজার টাকা ব্যয়ে ১৬ শতক জমিতে মুলার চাষ করছি। আজ প্রথম হাটে মুলা বিক্রি করতে এসেছি। কিন্তু ক্রেতা নেই। বাজারে মুলা বিক্রি করতে এসে বিপাকে পড়েছি। ক্রেতা না থাকায় দুই টাকা কেজিতে মুলা বিক্রি করেছি। নীলফামারীর পৗর সবজি বাজারের আড়ৎদারেরা জানান, বর্তমানে মুলার দাম কমে যাওয়ায় ব্যাবসায়ীরা মুলা কেনার আগ্রহ হারিয়েছেন।
ওই আড়তে মুলা কিনতে আসা ব্যাবসায়ী সুজন ও রফিক জানান, দুই জনে ১২ হাজার টাকা মুলা কিনেছি। নিয়ে যেতে গাড়ি ভাড়া দিতে হবে অনেক টাকা। তাছাড়াও প্রতি বস্তা মুলার পেছনে বস্তা, সুতলি, শ্রমিক, খাজনা ইত্যাদি বাবদ অতিরিক্ত হাজার হাজার টাকা খরচ হয়। বর্তমানে এ ব্যবসা করে লাভের মুখ দেখছেন না বলে জানান তারা। জেলার ৬টি উপজেলায় প্রায় সব ইউনিয়নে কম বেশী মুলা চাষ হয়েছে। এ চাষে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।
এ ব্যাপারে জেলার কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ওবয়াদুল ইসলাম মন্ডল বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সবজির ফলন ভাল হয়েছে। মুলা উত্তোলনের প্রথম দিকে দাম বেশী ছিল। কৃষকরা তখন অধিক হারে টাকা পেয়েছে। কিন্তু বর্তমানে বাজারে মুলাসহ অন্যান্য শবজির সরবরাহ বেশী থাকায় মুলার দাম কমে গেছে।