দুর্গাপুর প্রতিনিধি: গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি অখ্যাত আইপি টিভিতে দুর্গাপুরে কর্মরত সাংবাদিকদের জড়িয়ে মেয়র তোফাজ্জল হোসেনের ধৃষ্টতামূলক, মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে দুর্গাপুর প্রেসক্লাব ও উপজেলা সাংবাদিক সমাজের সকল সাংবাদিক সহ নানা শ্রেনী পেশার মানুষ।
বুধবার সকাল ১১টায় দুর্গাপুর প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত মানবন্ধনে প্রধান বক্তা ছিলেন দুর্গাপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা সাংবাদিক সমাজের আহ্বায়ক মোবারক হোসেন শিশির। মানববন্ধনের প্রধান বক্তা মোবারক হোসেন শিশির তার বক্তব্যে বলেন, সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ। সাংবাদিকরা সব সময়ই নিরপেক্ষ জায়গায় অবস্থান নিয়ে থাকে।
সাংবাদিকরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কারো সাথে আপোষ করে না। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দুর্গাপুর পৌরসভা নির্বাচনের দিন মেয়র তোফাজ্জল হোসেন একটি অনলাইন আইপি টিভি চ্যানেলে দুর্গাপুরের সাংবাদিকদের জড়িয়ে যে বক্তব্য প্রদান করেছেন তা সত্যিই দুঃখজনক। মেয়র তোফাজ্জলের এমন বক্তব্য পুরো সাংবাদিক সমাজকে ভাবিয়ে তুলেছে।
তিনি বলেন, ওই দিনের ঘটনায় আমার ৩ জন সহকর্মী আহত হয়েছেন। তাঁরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। অথচ মেয়র ওই দিনের ঘটনা প্রত্যক্ষ ভাবে না জেনে কল্পনাপ্রসূত বক্তব্য দিয়ে উপজেলার কর্মরত সাংবাদিকের উপর দায় চাপানোর অপচেষ্টা করছেন। ফলে বাধ্য হয়ে সাংবাদিকরা আজ রাস্তায় নেমেছেন।
তিনি পানানগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আদম আলীকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, আপনি কতদিন ধরে আদম ব্যবসা করে আসছেন সাংবাদিকরা তা জানেন। আপনি চাটুকারিতা করতে গিয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে পরো সাংবাদিক সমাজকে হেয় প্রতিপন্ন করতে চেয়েছেন। আপনার মিথ্যা বানোয়াট বক্তব্য দ্রুত প্রত্যাহার করে নিন। তা না হলে উপজেলার কর্মরত সাংবাদিকরা সাধারণ জনগণকে সাথে কঠোর আন্দোলনে যাবে।
দুর্গাপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি বলেন, মেয়র তোফাজ্জল আপনি সাংবাদিকদের জড়িয়ে উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্য দিয়ে অজ্ঞতা ও মূর্খতার পরিচয় দিয়েছেন। শুধু দীক্ষা থাকলেই হয়না আপনার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করা উচিৎ। আপনি মেরুদন্ডহীন ব্যাক্তি তাই সাংবাদিকদেরও মেরুদন্ডহীন ভাববেন-না। সাংবাদিকরা সকল হামলা মামলা মোকাবেলা করে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের কলম সৈনিক হিসেবে প্রতিনিয়ত কাজ করবে।
এখনো সময় আছে সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে বক্তব্য প্রত্যাহার করে সমঝোতায় বসেন। তিনি আরো বলেন, অনতি বিলম্বে সাংবাদিকদের জড়িয়ে কল্পনাপ্রসূত ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে সাংবাদিকরা রাজপথে আন্দোলন অব্যাহত রাখবে।
দুর্গাপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম শাহাজামাল বলেন, মেয়র তোফাজ্জল হোসেন সাংবাদিকদের জড়িয়ে মিথ্যা ও মানহানিকর বক্তব্য দিয়ে জাতির বিবেক সাংবাদিকদেরকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন। তিনি না জেনে না শুনে মনগড়া বক্তব্য দিয়ে নিজেকে হীনমন্যতার পরিচয় দিয়েছেন। মেয়র তোফাজ্জল তার বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহার না করলে সাংবাদিক সমাজের পক্ষ থেকে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচী দেয়া হবে বলেও হুশিয়ারি দেন।
পানানগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আদম আলীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি একজন চিহ্নিত থানার দালাল। থানার দালালের তালিকায় আপনার নাম তিন নম্বরে। আপনার নারী কেলেঙ্কারীর খবর শীঘ্রই ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ করা হবে।
সাংবাদিক মিজান মাহীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্যে রাখেন, দুর্গাপুর প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য এস এম আমিনুল ইসলাম, গোলাম রসূল, এস এম শাহাজামাল, সদস্য আব্দুল খালেক, জিএম কিবরিয়া, জুবায়ের তুহিন, ফরিদ আহমেদ আবীর, শাহিন আলম, রুবেল হক, মোফাজ্জল হোসেন, মাসুদ রানা তুষার, মশিউর রহমান ও হাফিজুর রহমান প্রমুখ। উপজেলার কর্মরত সাংবাদিকরা ছাড়াও নানান শ্রেনী পেশার প্রায় দুই-শতাধিক জনসাধারণ মানববন্ধনে অংশ নেন।