1. zillu.akash@gmail.com : admi2017 :
  2. editor@dailynewsbangla.com : Daily NewsBangla : Daily NewsBangla
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও নাব্যতা হারিয়ে মৃত্যুর মুখে রাজশাহীর বারনই নদী - dailynewsbangla
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
দৌলতপুরে এসএসসি ব্যাচ ১৯৮৬ এর প্রথম মিলন মেলা অনুষ্ঠিত নওগাঁয় শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু বোয়ালমারীতে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের ৯ম মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়ার আয়োজন ভেড়ামারায় ভুয়া ডাক্তার আটক, ভ্রাম্যমান আদালতে ৩ মাসের জেল অবসরজনিত বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত দৌলতপুরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সাথে (ইউএনও)’র মত বিনিময় সভা ভেড়ামারায় পৌরসভা নগর উন্নয়ন শীর্ষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত ভেড়ামারায় আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত মহাদেবপুরে বিএনপি’র সৌহার্দ ও সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত বন্ধ হওয়া উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেন আবারও চালুর দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও নাব্যতা হারিয়ে মৃত্যুর মুখে রাজশাহীর বারনই নদী

ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২২ মার্চ, ২০২১
রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহি বারনই নদী।

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও নাব্যতা হারিয়ে মৃত্যুর মুখে রাজশাহীর বারনই নদী


মাজহারুল ইসলাম চপল, ব্যুরো চীফঃ অব্যবস্থাপনা ও নাব্যতা হারিয়ে ধংসের পথে রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহি বারনই নদী। তার উপর শহরের বর্জ্য ও দুষিত পানি নদীটিকে আরও অস্বাস্থ্যকর করে ফেলছে। রাজশাহীর ৯ টি নদীর মধ্যে এই নদীটি অন্যতম একটি। প্রায় ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দিয়ে বয়ে গেছে দেশের একটি বড় নদী পদ্মা।

অবশ্য পদ্মার সঙ্গে তার কোনো তুলনা করা যাবেনা, কারণ হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে পদ্মার উৎপত্তি হয়েছে। আর বারনইয়ের উৎপত্তি হয়েছে নওগাঁ জেলার আত্রাইয়ের একটি বিল থেকে। তানোর উপজেলার মধ্য দিয়ে শিবনদী নাম ধারণ করে পবা উপজেলার বাগধানী এলাকায় এসে সে বারনই নাম ধারণ করেছে।

নদীটি রাজশাহী থেকে নাটোরের আত্রাই নদে মিশেছে। নদীটির দৈর্ঘ্য বড়জোর ৫০ কিলোমিটার, আর গড় প্রস্থ প্রায় ১০০ মিটার হতে পারে। এই নদীটিতে বারো মাস পানি থাকে বলে এই নদীর নাম হয়েছে বারনই। এই নদী সম্পর্কে ১৮৭৬ সালে ব্রিটিশ-ভারতের মুখ্য পরিসংখ্যান কর্মকর্তা উইলিয়াম উইলসন হান্টার তাঁর স্টাটিস্টিক্যাল অ্যাকাউন্ট অব বেঙ্গল গ্রন্থে বলেছেন, রাজশাহীর যে কয়টি নদীর নাব্যতা আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে নাব্য হচ্ছে বারনই।

এই নদীপথেই বাংলার সুবাদার ইসলাম খান ১৬০৮ সালে নওগাঁয় এসেছিলেন। অথচ শহরের সারাদিনের বর্জ্য এই নদী দিয়ে নামানোর কারনে নদীটিকে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয় এই পানিতে হাসপাতাল ও ক্লিনিকের বর্জ্যও ফেলা হচ্ছে , কিন্তু এই বর্জ্যগুলো পুড়িয়ে ফেলার কথা। এ জন্য নদীটিতে টিকতে পারছে না কোনো মাছ। আস্তে আস্তে মাছশূন্য হয়ে পড়ছে নদীটি। এতে বেকার হয়ে পড়ছে শত শত জেলে।

সরকারিভাবে ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা বেশ কয়েকবার মাছ ছাড়লেও কিছুক্ষণের মধ্যেই মরে ভেসে ওঠে। আর এর খেশারত দিতে হচ্ছে এই নদীতে জীবিকা নির্বাহ করা হাজারো জেলে। শুধু জেলেই নয় এর খেশারত দিতে হচ্ছে এই নদীর পানি ব্যবহার করা হাজার হাজার মানুষকে। যার ঠিকানা হচ্ছে ক্লিনিক ও হাসপাতালে। এছাড়াও নদীর কোল ঘেঁসে রয়েছে কয়েকশত গ্রাম, যারা কিনা নদীর পানিতে ছোটবেলা থেকে গোসল করে বড় হয়েছে, চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।

তারা নদীতে গোসল না করলে থাকতেও পারে না। বর্তমানে তাদের গোসলের পরিবেশ থাকছেনা। এতে চুলকানি সহ বিভিন্ন চর্ম রোগে ভুগতে হচ্ছে। এমনকি গন্ধযুক্ত পানি তারা মুখেও নিতে পারছেনা। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যেই সাংবাদিকদের বলা হয়, তারা তাদের বর্জ্য পানি শোধন করে নদীতে ফেলার ব্যবস্থা করবে। এসব কথা মঝে মধ্যেই পত্র-পত্রিকায় ছাপাও হয়।

খুশির ব্যাপার! কয়েক বছর আগে নদীটার ভাটিতে একটি রাবার ড্যাম নির্মাণ করা হয়েছে। শুকনা মৌসুমে বাতাস দিয়ে এই ড্যামের পেট ফোলানো হয়। তখন পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। নদীটা একটা বদ্ধ খালে পরিণত হয়। এতে আটকে যায় যত সব বর্জ্য। বর্তমানে সেটাও আর কাজ করেনা। শহরের দুষিত পানি ও বর্জ্য চলে যাচ্ছে সেই বারনই নদীতে। আর হুমকির মুখে পড়ছে লাখো মানুষ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ পানিতে কলিফর্ম, সালমোনেলা ও সিগেলা জাতীয় ভয়ংকর সব ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা ডায়রিয়া, আমাশয়, ক্রিমিসহ যাবতীয় পেটের পীড়ার জীবাণু বহন করে।ব্যাকটেরিয়া সালমোনেলার হাত থেকে বাঁচার জন্য সারা পৃথিবীতে সুয়ারেজ ব্যবস্থা উন্নত করা হচ্ছে। অথচ আমাদের দেশের এই অবস্থা। এ নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।

এবিষয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পরিছন্ন বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা শেখ মোঃ মামুন ( ডলার ) এর সাথে সাক্ষাৎ করলে তিনি বলেন, আমাদের রাজশাহীতে যে সকল নদী আছে এর মধ্যে বারনই নদীটিরই নাব্যতা আছে, বাকী নদীগুলো নামে মাত্র। আমাদের শহরে তুলনামূলক কল-কারখানা কম থাকায় দুষিত পানি ও বর্জ্য কম হয়। তাছাড়া শহর থেকে নদীটি প্রায় দশ থেকে বার কি.মি. দুরে।

শহর থেকে এই দুষিত পানি এরেশানের মাধ্যমে এই পানির সাথে থাকা ভয়ানক ব্যকটেরিয়া গুলো থাকে সেগুলো অনেকটায় মারা যায়। তবে শহরের যে বর্জ্য নদীতে যায় এর জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে শোধনাগারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এই শোধনাগারের কার্যক্রম শুরু হবে। আর নদীর নাব্যতার বিষয়ে, এটি পানি উন্নয়নের বোর্ডের কাজ। এটি তারা দেখবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো সংবাদ