মো.আককাস আলী,নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি: উত্তরাঞ্চলের শস্যভান্ডার
হিসাবে খ্যাত নওগাঁ জেলায় চলতি রবি মৌসুমে আলুর বাম্পার ফলনের
সম্ভাবনা রয়েছে। জেলার প্রতিটি মাঠে এখন আলু গাছের সবুজ পাতার রঙে
মাঠের পর মাঠ রঙিন হয়ে আছে। জেলার প্রতিটি মাঠে এখন শুধু সবুজ রঙের চোখ ধাঁধানো বর্ণিল সমারোহ।
ভোরের বিন্দু বিন্দু শিশির আর সকালের মিষ্টি রোদ ছুঁয়ে যায় সেই সবুজ পাতাগুলোকে। এ এক অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই যেন মনোমুগ্ধকর। সরকার থেকে কৃষকদের মাঝে কৃষি উপকরণসহ রাসায়নিক সার বিনামূল্যে যথাসময়ে বিতরণ করায় এই জেলার কৃষকদের আগাম আলু লাগানো সম্ভব হয়েছে। ভালো ফলনের আশায় জেলার কৃষকরা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
কৃষকের পাশাপাশি বসে নেই কৃষি কর্মকর্তারাও। চলতি রবি মৌসুমে কোন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা না দেয়ায় এবং আলু চাষের পরিবেশ অনুকূলে থাকায় আলুর পাশাপাশি সরিষা, গম ও ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। জেলার গ্রামীণ জনপদের কৃষকরা এই আলু যথাসময়ে ঘরে তুলতে পারলে এবং বিক্রয় মূল্য ভাল পেলে বোরো ধান চাষে কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে বলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা মনে করছেন।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি রবিশস্য মৌসুমে এবারে জেলার ১১ উপজেলায় ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সেক্ষেত্রে জেলায় সাড়ে ২১ হাজার হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে আলু চাষীদের কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যথাযথ পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ কারিগরি সহযোগিতাদানের কারণে আলু ক্ষেত
অনেকটা রোগবালাই মুক্ত হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
জেলার পত্নীতলা উপজেলার কাদাইল গ্রামের কৃষক আবু রায়হান জানান, আমি এ বছর ৭ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। হিমাগারে কিছু বীজ রেখেছিলাম আর বাকিটা কিনে জমিতে রোপণ করেছি। আলুর গাছ ভাল হওয়ায় মনে হচ্ছে এবার আলুর আশানুরূপ ফলন পাব। দাম ভাল হলে বিগত দিনের ক্ষতি পুষিয়ে পুরোদমে বোরো ধান চাষ করতে পারব।
ব্রজপুর গ্রামের কৃষক মেহেদি হাসান রুবেল জানান, আমি চলতি মৌসুমে প্রায় সাড়ে ৬ বিঘা জমিতে লালপাপরী জাতের আলুর আবাদ করেছি। কোন প্রকার দুর্যোগ ও রোগবালাই না থাকায় এ বছর আলুর বাম্পার ফলন পাব বলে আশা করছি। মহাদেবপুর উপজেলার ঈশ^রপুর গ্রামের আলু চাষী সিদ্দিক জানান,এবছর ৫বিঘা জমিতে ডায়মন আলু চাষ করেছি,ফলন ভালো হবে আশা করছি।
আলুর দাম ভালো পেলে কৃষকেরা উৎসাহিত হবে এবং আগামী দিনের ক্ষতি পুষিয়ে যাবে। এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. শামসুল ওয়াদুদ বলেন, এবার জেলায় বিগত বছরের তুলনায় বেশি পরিমাণ আলুর ফলন আশা করা হচ্ছে। যথা সময়ে জমি চাষযোগ্য হওয়ায় এলাকার কৃষকরা সুযোগ বুঝে আলুর আবাদ করেছে।
কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হলে জেলায় আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।