স্টাফ রিপোর্টার: কুষ্টিয়া শহরতলীর লাহিনী মধ্যপাড়ায় একটি হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে নিরপরাধ একটি পরিবারকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বিকেলে লাহিনী মধ্যপাড়া এলাকার মৃত আশা শেখ এর ছেলে খাইরুল ইসলাম, শাহাদত, নাজিরুল, খাইরুলের ছেলে অভি, মৃত মোবারক হোসেনের ছেলে শান্তা, কাশেমের ছেলে মারুফ, মৃত ভিকুর ছেলে আজিম, আব্দুর রাজ্জাক মোল্লার ছেলে সজিব, আজিমের ছেলে সাগর, মৃত মসলেমের ছেলে লিটনসহ ৩০ থেকে ৪০ জন ব্যক্তি লাটিশোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নিজাম উদ্দিনের বাড়িতে হামলা চালায়।
এসময় তারা নিজাম উদ্দিন ও তার পরিবারের সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মারপিটের চেষ্টা করে। ঘটনাটি কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেওয়ার চেষ্টা করে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী নিজাম উদ্দিনের ছেলে নাফিজুর রহমান কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। ডায়েরী নং-৭৬৬ তারিখ: ১২/০২/২০২১ ইং।
ঘটনার তথ্যনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারী নিখোঁজের একদিন পর রতন আলী (১৫) নামে দশম শ্রেনী পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রের লাশ লাহিনীপাড়ায় কালী নদীর পাড় থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। রতন লাহিনী পাড়া গ্রামের আজম শেখ’র ছেলে ও লাহিনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্র। ঐ সময় তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছিলো আগের দিন বিকেলে বাড়ি থেকে বের হয়ে রতন আলী আর বাড়ী ফেরেনি।
বাড়ীর লোকজন সম্ভাব্য সব জায়গায় খুঁজেও তার সন্ধান পায়নি। পরের দিন সকালে লাহিনীপাড়ার কালী নদীতে গোসল করতে গিয়ে একজন ব্যক্তি ঐ স্কুল ছাত্রের লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। রতনের শরীরে কোথাও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছিল স্বাশরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। রতনের বাবা ঐ সময় জানিয়েছিলেন, কে বা কারা কেন তার ছেলেকে হত্যা করেছে এমন কোন নির্দিষ্ট কারণ তারা জানেন না।
ঐ ঘটনায় নিহত স্কুল ছাত্রের বাবা বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলাটি বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছে। দীর্ঘ দুই বছর পর ঐ হত্যাকান্ড নিয়ে এলাকার একটি কুচক্রী মহল রাজনীতিতে নেমেছে। একটি পক্ষ এই হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে সমাঝোতার নামে বাদীকে দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে হয়রানী করার চেষ্টা করছে। মামলাটির তদন্ত চলমান থাকলেও স্থানীয় একটি স্বার্থন্বেষী মহল স্বার্থ উদ্ধারে তৎপরতা চালাচ্ছে।
গতকাল যে পরিবারের উপর হামলা হয়েছে তাদেরকেও বিভিন্ন সময় মোটা অংকের টাকা পয়সার বিনিময়ে সমঝোতার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। হত্যাকান্ডের মত একটি স্পর্ষকাতর বিষয়কে পুঁজি করে চক্রটি মোটা অংকের টাকাও দাবি করেছে। এই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় কুচক্রী মহলটি নিজাম উদ্দিন ও তার পরিবারের উপর হামলার চেষ্টা করে। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হত্যাকান্ডের সাথে যারা জড়িত বা কারা এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে সেই বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে এলাকার নিরীহ মানুষকে হয়রানী করতে তাদের কাছে থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
গতকালকের ঘটনাও এরকম একটি। এর আগেও মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বাদীকে মারধোরের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি থানা পর্যন্ত গড়ায়। থানায় বসে তা সমঝোতা হয়। স্থানীয়রা বলছেন, এই হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে একটি মহল এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্ট করার চেষ্টা করছে। হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উৎঘটান না করে মূল ঘটনাকে আড়াল করে নিরপরাধ মানুষের নাম এই হত্যাকান্ডে জড়িয়ে অহেতুক হয়রানীর চেষ্টা করছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ প্রশাসনকে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।