ঢাকা ০৭:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
বিএনপির দুই পক্ষের কর্মসূচি ঘিরে  বোয়ালমারী রণক্ষেত্র পদ্মার দুর্গম চরাঞ্চলে বিভিন্ন বাহিনীর সক্রিয়তায় বাড়ছে শঙ্কা বদলগাছীতে এক হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পরিবার স্বেচ্ছায় বিএনপিতে যোগদান  দুই দিনের সফরে নিজ জেলা পাবনায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন নাগরপুরে হত্যার ৬ মাস পর লাশ উত্তোলন  বন্দরে মাদক সম্রাট রমজান, বাবুর বিরুদ্ধে পিতাকে মারধরের অভিযোগ আলফাডাঙ্গায় ভুয়া চিকিৎসকের কারাদণ্ড নাটোরে বৈধবালু ব্যবসায়ী ইঞ্জিনিয়ার কাকন ষড়যন্ত্রের শিকার, বাঘায় বেল্লাল মন্ডলের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উত্তাল অঞ্চল ভেড়ামারায় বিনামূল্যে বীজ সার বিতরণ নির্বাচনের মাধ্যমেই জাতির ভাগ্যের ফয়সালা হবে

বিএনপির দুই পক্ষের কর্মসূচি ঘিরে  বোয়ালমারী রণক্ষেত্র

বিএনপির দুই পক্ষের কর্মসূচি ঘিরে  বোয়ালমারী রণক্ষেত্র

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে বিএনপির দুই পক্ষের কর্মসূচি ঘিরে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। ২০টি মোটরসাইকেল ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। ওয়াপদা মোড়ে কাজী হারুন শপিং কমপ্লেক্সে ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়। পুলিশ এবং সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। শুক্রবার বিকেলে দুই পক্ষের কর্মসূচি ঘিরে এসব ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৫জন আহত হয়।
 বিপ্লব ও সংহতি দিবসে বিএনপির বিবদমান দুটি পক্ষ পৃথক কর্মসূচি ঘোষণা করে। এ নিয়ে সকাল থেকেই টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে। এ অবস্থায় বোয়ালমারী থানা পুলিশ ফরিদপুর পুলিশ লাইন থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এনে শহরে মোতায়েন করে। বিকেল ৪টা থেকে মিছিল নিয়ে দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা শহরে ঢুকতে থাকে। কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থকরা মহিলা কলেজের মোড়ে পৌর বাস টার্মিনালে এবং কাঁচামালের আড়তের সামনে অবস্থান নেয়। অপরদিকে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু গ্রুপের নেতাকর্মীরা ওয়াপদা মোড়ের কাজী হারুন শপিং কমপ্লেক্স তাঁদের অফিসের সামনে অবস্থান নেয়। দুই পক্ষকে ঠেকাতে পুলিশও চৌরাস্তা এবং ওয়াপদার মোড়ে অবস্থান নেয়।
টানটান উত্তেজনার মধ্যে দুই পক্ষ সড়কে মিছিল করে। নাসিরুল ইসলামের গ্রুপ ওয়াপদার মোড়ের দিকে আসতে থাকলে ঝুনু মিয়ার গ্রুপ ইটপাটকেল ছুঁড়ে। প্রতিত্তোরে নাসিরুল ইসলামের গ্রুপও ইটপাটকেল ছুঁড়ে। এরপর দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশ পিছু হটে গেলে দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলতে থাকে। একপর্যায়ে ঝুনু গ্রুপের নেতাকর্মীরা চলে যায়। তখন কাজী হারুন শপিং কমপ্লেক্স সামনে থাকা প্রায় ১৫ টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এর বাইরে  শহরে বিভিন্ন এলাকায় আরও ৫ টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে আগুন দেওয়া হয় বলে জানা যায়। এ সময় হারুন শপিং কমপ্লেক্স ইটপাটকেল ছুঁড়ে এবং এবং লাঠি দিয়ে ভাংচুর করা হয়। কাজী হারুন শপিং কমপ্লেক্সের সামনে মোটরসাইকেলের পাশাপাশি টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি এলে বিএনপি নেতাকর্মীরা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ফেরত পাঠিয়ে দেয়। মাগরিবের নামাজের পর পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এক থেকে দেড় ঘন্টা চলা এ সংঘর্ষে লিয়াকত হোসেন মোল্যা, মিনহাজুর রহমান লিপনসহ ১৫ জন আহত হয়।
বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সহসভাপতি ও সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু জানান, নাসিরুল ইসলামের সমর্থকরা বহিরাগত কিছু লোক এনে অতর্কিত হামলা চালিয়ে পার্টি অফিস ভাংচুর করে, আগুন জ্বালিয়ে দেয়। শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশে হামলা চালিয়ে আমার নেতাকর্মীদের মারধর করে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার ও শাস্তি চাই।
নবগঠিত কমিটির উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঝুনু মিয়ার সমর্থকরা উস্কানি দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করে। তারা সালথা, নগরকান্দা থেকে লোকজন ভাড়া করে আমাদের উপর হামলা করে। তার লোকজনই প্রথমে মোটরসাইকেলে আগুন দেয়। বিষয়টি আমরা কেন্দ্রে জানাবো। তারেক জিয়াকেও জানাবো। প্রশাসনের প্রতি তিনি সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন। দলের সাথে আলোচনা করে মামলার বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।
বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মাহমুদুল হাসান বলেন আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সর্বোচ্চ সর্তকতা অবস্থায় আছে। বিপ্লব ও সংহতি দিবসে এমন ঘটনা ঘটবে তা বুঝতে পারিনি।
Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ

বিএনপির দুই পক্ষের কর্মসূচি ঘিরে  বোয়ালমারী রণক্ষেত্র

বিএনপির দুই পক্ষের কর্মসূচি ঘিরে  বোয়ালমারী রণক্ষেত্র

আপডেট টাইম : ০৭:৪৯:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫

বিএনপির দুই পক্ষের কর্মসূচি ঘিরে  বোয়ালমারী রণক্ষেত্র

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে বিএনপির দুই পক্ষের কর্মসূচি ঘিরে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। ২০টি মোটরসাইকেল ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। ওয়াপদা মোড়ে কাজী হারুন শপিং কমপ্লেক্সে ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়। পুলিশ এবং সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। শুক্রবার বিকেলে দুই পক্ষের কর্মসূচি ঘিরে এসব ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৫জন আহত হয়।
 বিপ্লব ও সংহতি দিবসে বিএনপির বিবদমান দুটি পক্ষ পৃথক কর্মসূচি ঘোষণা করে। এ নিয়ে সকাল থেকেই টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে। এ অবস্থায় বোয়ালমারী থানা পুলিশ ফরিদপুর পুলিশ লাইন থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এনে শহরে মোতায়েন করে। বিকেল ৪টা থেকে মিছিল নিয়ে দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা শহরে ঢুকতে থাকে। কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থকরা মহিলা কলেজের মোড়ে পৌর বাস টার্মিনালে এবং কাঁচামালের আড়তের সামনে অবস্থান নেয়। অপরদিকে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু গ্রুপের নেতাকর্মীরা ওয়াপদা মোড়ের কাজী হারুন শপিং কমপ্লেক্স তাঁদের অফিসের সামনে অবস্থান নেয়। দুই পক্ষকে ঠেকাতে পুলিশও চৌরাস্তা এবং ওয়াপদার মোড়ে অবস্থান নেয়।
টানটান উত্তেজনার মধ্যে দুই পক্ষ সড়কে মিছিল করে। নাসিরুল ইসলামের গ্রুপ ওয়াপদার মোড়ের দিকে আসতে থাকলে ঝুনু মিয়ার গ্রুপ ইটপাটকেল ছুঁড়ে। প্রতিত্তোরে নাসিরুল ইসলামের গ্রুপও ইটপাটকেল ছুঁড়ে। এরপর দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশ পিছু হটে গেলে দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলতে থাকে। একপর্যায়ে ঝুনু গ্রুপের নেতাকর্মীরা চলে যায়। তখন কাজী হারুন শপিং কমপ্লেক্স সামনে থাকা প্রায় ১৫ টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এর বাইরে  শহরে বিভিন্ন এলাকায় আরও ৫ টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে আগুন দেওয়া হয় বলে জানা যায়। এ সময় হারুন শপিং কমপ্লেক্স ইটপাটকেল ছুঁড়ে এবং এবং লাঠি দিয়ে ভাংচুর করা হয়। কাজী হারুন শপিং কমপ্লেক্সের সামনে মোটরসাইকেলের পাশাপাশি টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি এলে বিএনপি নেতাকর্মীরা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ফেরত পাঠিয়ে দেয়। মাগরিবের নামাজের পর পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এক থেকে দেড় ঘন্টা চলা এ সংঘর্ষে লিয়াকত হোসেন মোল্যা, মিনহাজুর রহমান লিপনসহ ১৫ জন আহত হয়।
বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সহসভাপতি ও সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু জানান, নাসিরুল ইসলামের সমর্থকরা বহিরাগত কিছু লোক এনে অতর্কিত হামলা চালিয়ে পার্টি অফিস ভাংচুর করে, আগুন জ্বালিয়ে দেয়। শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশে হামলা চালিয়ে আমার নেতাকর্মীদের মারধর করে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার ও শাস্তি চাই।
নবগঠিত কমিটির উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঝুনু মিয়ার সমর্থকরা উস্কানি দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করে। তারা সালথা, নগরকান্দা থেকে লোকজন ভাড়া করে আমাদের উপর হামলা করে। তার লোকজনই প্রথমে মোটরসাইকেলে আগুন দেয়। বিষয়টি আমরা কেন্দ্রে জানাবো। তারেক জিয়াকেও জানাবো। প্রশাসনের প্রতি তিনি সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন। দলের সাথে আলোচনা করে মামলার বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।
বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মাহমুদুল হাসান বলেন আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সর্বোচ্চ সর্তকতা অবস্থায় আছে। বিপ্লব ও সংহতি দিবসে এমন ঘটনা ঘটবে তা বুঝতে পারিনি।