বিধান মন্ডল (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ ফরিদপুরের সালথায় জমে উঠেছে পবিত্র ঈদুল আযাহার গরু-ছাগলসহ গবাদিপশু ক্রয়-বিক্রয়। আর তাই হাটে নির্বিঘ্নে ক্রয়বিক্রয় প্রতিটি হাটেই জাল নোট, মলম পার্টি, অতিরিক্ত ইজারাসহ যাবতীয় বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে ।
এর পাশাপাশি হাটগুলোতে গবাদিপশুর সুরক্ষায় বিভিন্ন কোরবানীর পশুর হাট-বাজারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল এর উদ্যোগে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম বাজার মনিটরিং ও প্রাণিস্বাস্থ্যসেবা প্রদান করছেন।
ক্ষতিকর রাসায়নিক/ষ্টেরয়েড (হরমোন) ব্যবহার করে গরু মোটাতাজাকরণে নিরুৎসাহিত করন, হাটে হঠাৎ গবাদিপশু আসুস্থ হয়ে পড়লে সেবা প্রদান, অনলাইনে বিক্রির জন্য গবাদিপশুর ছবি আপলোড করা ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা গঠিত টিমের প্রধান কাজ।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ শাখাওয়াত হোসেন এর নেতৃত্বে গঠিত টিমের অন্যান্য সদস্যরা হলেন, প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. মোঃ নাহিদুল ইসলাম, প্রাণিসম্পদ মাঠ সহকারী, ভেটেরিনারী মাঠ সহকারী, কৃত্রিম প্রজনন টেকনিশিয়ান।
সালথা সদর বাজারের সালথা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি বাগানে অস্থায়ী গবাদিপশুর হাটের ইজারাদার শওকত হোসেন মুকুল ও রাকিবুল হাসান জুয়েল জানান, ১হাজারের অধিক গরু আমাদের হাটে রয়েছে। জেলার নয়টি উপজেলাসহ বিভিন্ন জেলা, থেকেও এই হাটে গরু এসেছে। এখন পর্যন্ত শতাধিক গরু ক্রয়বিক্রয় হয়েছে। আমাদের হাটে একটি কন্ট্রোল টিম স্থাপন রয়েছে। যেজন্য সুনামের সাথে নির্বিঘ্নে গরু ক্রয়বিক্রয় চলছে।
তবে শুধু হাটেই নয়, গবাদিপশু ক্রয়বিক্রয় জমে উঠেছে খামাড়গুলোতেও। উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বড়দিয়া গ্রামের মকলেছ মোল্লা, সোনাপুর ইউনিয়নের নটখোলা গ্রামের রাসেল মীর, আটঘর ইউনিয়নের জয়কাল গ্রামের আব্দুর রহমান, মাঝারদিয়া ইউনিয়নের হরিণা উত্তম কুমার সহ বেশ কয়েকজন খামারির সাথে কথা হলে তারা জানান, করোনা মহামারি হওয়ায় হাটের চেয়ে খামারে গরু কেনা নিরাপদ। তাছাড়া হাটের চেয়ে খামার থেকে গবাদিপশু কম ও সুলভ মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। তাই আমাদের আহ্বান থাকবে, স্বাস্থবিধি মেনে খামার থেকে পছন্দের গবাদিপশু কম দামে ক্রয় করুন।
অন্যদিকে ইরানুর, জালাল, শিপন, হাবিলসহ একাধিক বেপারী জানান, হাটে ক্রেতাসমাগম বাড়ছে। গবাদিপশু বেশি হওয়ায় হাটে গরু-ছাগল দেখে শুনে কেনা যায়। তাছাড়া দূর দূরান্ত থেকে অনেক বেপারি গবাদিপশু নিয়ে হাটে আসে। তখন ঐ সব গরু-ছাগল আনতে যেমন খরচ, আবার ফেরত নিতেও অনেক খরচ। তাই তারা একটু কম দাম পেলেও চেষ্টা করে গরু-ছাগল বিক্রি করে দিতে। আর তাই দাম কম বলেই ক্রেতারা হাটের দিকে ঝুঁকছেন। আর নির্ধারিত কম ইজারা দিয়ে গবাদিপশু বিক্রি করতে পেরে আমরাও খুশি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে কোরবানীর বাজার সামনে রেখে ক্রেতা-বিক্রেতার জন্য আমাদের এ কার্যক্রম চলমান থাকবে। আমাদের এ কার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য ঈদের আগের দিন পর্যন্ত পশুর হাটগুলোকে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে অসুস্থ ও রোগাক্রান্ত গরু বিক্রয় বন্ধ হবে। এখন পর্যন্ত পশুর হাটগুলোতে কোন অসুস্থ ও রোগাক্রান্ত গরু ছাগল পাওয়া যায়নি। হাট-বাজারগুলোতে মেডিকেল টিম পরিচালনা করায় ক্রেতা-বিক্রেতারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তিনি আরো জানান, উপজেলায় এ বছর ২ হাজার ৮১০ টি গবাদিপশু হৃষ্টপুষ্টকরণ করা হয়েছে। কিন্তু কোরবানির জন্য চাহিদা রয়েছে ২ হাজার ৭০০টি পশুর। এ বছর সারাদেশে কোরবানীর জন্য প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ পশু মজুত রয়েছে যা চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি।