ঢাকা ০৩:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
দুই দিনের সফরে নিজ জেলা পাবনায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন নাগরপুরে হত্যার ৬ মাস পর লাশ উত্তোলন  বন্দরে মাদক সম্রাট রমজান, বাবুর বিরুদ্ধে পিতাকে মারধরের অভিযোগ আলফাডাঙ্গায় ভুয়া চিকিৎসকের কারাদণ্ড নাটোরে বৈধবালু ব্যবসায়ী ইঞ্জিনিয়ার কাকন ষড়যন্ত্রের শিকার, বাঘায় বেল্লাল মন্ডলের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উত্তাল অঞ্চল ভেড়ামারায় বিনামূল্যে বীজ সার বিতরণ নির্বাচনের মাধ্যমেই জাতির ভাগ্যের ফয়সালা হবে উপজেলা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন ট্রাস্কফোর্স কমিটির ত্রৈমাসিক  সভা অনুষ্ঠিত মনোনয়ন না পেয়ে যা বললেন রুমিন ফারহানা ভেড়ামারায় মাদক প্রতিরোধ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

৪ বছর পর ত্রিশালের বৃদ্ধ দোকানদার হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন :আসামী গ্রেফতার

গোলাম কিবরিয়া পলাশ, ময়মনসিংহ: দীর্ঘ ০৪ বছর পর ময়মনসিংহ ত্রিশাল উপজেলার অলহরি বাদামিয়া এলাকার ৭৫ বছর বয়েসী বৃদ্ধ মোসলেম উদ্দিন হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করলো, গৌতম কুমার বিশ্বাস, পুলিশ সুপার, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), ময়মনসিংহ।

জানা গেছে, শারীরিক প্রতিবন্ধী মোঃ ছফির উদ্দিন (৩২), পিতা-মোঃ মোসলেম উদ্দিন, সাং-অলহরি বাদামিয়া, থানা-ত্রিশাল, জেলা-ময়মনসিংহ বাদামিয়া পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দক্ষিণ কোণে বিদ্যালয়ের জমিতে মনোহরি দোকান করে আসছেন। সে সারাদিন দোকানে ক্রয়-বিক্রয় করে রাতে বাসায় যেত এবং তার পিতা মোসলেম উদ্দিন দোকানে থেকে ছেলের দোকানঘর পাহারা দিত।

এদিকে বাদামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন জমিতে হাইস্কুল নির্মাণকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের বিরোধ তৈরি হয়। বিরোধে সুবিধাভোগী পক্ষ নির্বিঘ্নে হাইস্কুল নির্মান করতে অপর পক্ষকে ফাঁসানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে লাশের রাজনীতিতে মত্ত হয়। পরিকল্পনা হয় স্কুল সংলগ্ন দোকানদার নীরিহ মোসলেম উদ্দিনকে খুন করতে পারলে অনায়াসে অপর পক্ষের উপর দোষ চাপানো যাবে।

এ ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ খ্রিঃ রাত অনুমান ০৩.০০ ঘটিকার সময় আসামী আকরাম হোসেন চৌধুরী অন্যান্য আসামীদের সহযোগীতায় বিড়ি কেনার অজুহাতে মোসলেম উদ্দিনের দোকান ঘরে ঢুকে দোকানের মেঝেতে থাকা ইট নিয়ে মোসলেম উদ্দিনের মাথায় আঘাত করে এবং দোকানে থাকা ছুরি নিয়ে মোসলেম উদ্দিনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথারি ঘাই মেরে মোসলেম উদ্দিনের মৃত্যু নিশ্চিত করে।

পরদিন সকাল বেলা দোকান ঘরের মেঝেতে সিজদারত ভঙ্গিতে মোসলেম উদ্দিনের রক্তাক্ত লাশ পাওয়ার ঘটনায় স্থানীয়ভাবে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং ৭৫ বছরের বৃদ্ধ মোসলেম উদ্দিনকে খুন করার বিষয়টি বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্র-পত্রিকায় ফলাও করে ছাপা হয়। পরবর্তীতে উক্ত ঘটনায় ত্রিশাল থানার মামলা নং-১০, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/ ৩৪ দঃ বিঃ রুজু হয়।

ত্রিশাল থানা পুলিশ কর্তৃক মামলাটি তদন্তাধীন অবস্থায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে গত ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮ খ্রিঃ পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলা মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে এবং মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) জনাব প্রদীপ কুমার গোস্বামী’কে প্রদান করা হয়। তিনি মামলাটি তদন্তকালে অজ্ঞাতনামা আসামীদের সনাক্তপূর্বক গ্রেফতারের লক্ষ্যে ত্রিশাল থানাসহ আশপাশের থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করতে থাকেন।

এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে পাওয়া পদচিহ্ন ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত ২৭ এপ্রিল ২০২১ খ্রিঃ ত্রিশাল থানাধীন অলহরি বাদামিয়া এলাকা হতে আসামী আকরাম হোসেনকে গ্রেফতার করেন। পুলিশ সুপার জনাব গৌতম কুমার বিশ্বাস এর দিক নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে ধৃত আসামীকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সন্ধিগ্ধ আসামী আকরাম হোসেন মুদি দোকানদার মোসলেম উদ্দিনকে হত্যার কথা স্বীকার করে।

অদ্য ২৮ এপ্রিল ২০২১ খ্রিঃ সন্ধিগ্ধ গ্রেফতারকৃত আসামী আকরাম হোসেনকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করলে, সে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলার সকল অফিসার ও ফোর্সের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় দীর্ঘ প্রায় ৪ বছর পর এই ক্লুলেস রহস্য উদঘাটন করা হয় বলে জানা যায়।

Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ

দুই দিনের সফরে নিজ জেলা পাবনায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন

৪ বছর পর ত্রিশালের বৃদ্ধ দোকানদার হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন :আসামী গ্রেফতার

আপডেট টাইম : ০৮:২৯:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ এপ্রিল ২০২১

গোলাম কিবরিয়া পলাশ, ময়মনসিংহ: দীর্ঘ ০৪ বছর পর ময়মনসিংহ ত্রিশাল উপজেলার অলহরি বাদামিয়া এলাকার ৭৫ বছর বয়েসী বৃদ্ধ মোসলেম উদ্দিন হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করলো, গৌতম কুমার বিশ্বাস, পুলিশ সুপার, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), ময়মনসিংহ।

জানা গেছে, শারীরিক প্রতিবন্ধী মোঃ ছফির উদ্দিন (৩২), পিতা-মোঃ মোসলেম উদ্দিন, সাং-অলহরি বাদামিয়া, থানা-ত্রিশাল, জেলা-ময়মনসিংহ বাদামিয়া পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দক্ষিণ কোণে বিদ্যালয়ের জমিতে মনোহরি দোকান করে আসছেন। সে সারাদিন দোকানে ক্রয়-বিক্রয় করে রাতে বাসায় যেত এবং তার পিতা মোসলেম উদ্দিন দোকানে থেকে ছেলের দোকানঘর পাহারা দিত।

এদিকে বাদামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন জমিতে হাইস্কুল নির্মাণকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের বিরোধ তৈরি হয়। বিরোধে সুবিধাভোগী পক্ষ নির্বিঘ্নে হাইস্কুল নির্মান করতে অপর পক্ষকে ফাঁসানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে লাশের রাজনীতিতে মত্ত হয়। পরিকল্পনা হয় স্কুল সংলগ্ন দোকানদার নীরিহ মোসলেম উদ্দিনকে খুন করতে পারলে অনায়াসে অপর পক্ষের উপর দোষ চাপানো যাবে।

এ ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ খ্রিঃ রাত অনুমান ০৩.০০ ঘটিকার সময় আসামী আকরাম হোসেন চৌধুরী অন্যান্য আসামীদের সহযোগীতায় বিড়ি কেনার অজুহাতে মোসলেম উদ্দিনের দোকান ঘরে ঢুকে দোকানের মেঝেতে থাকা ইট নিয়ে মোসলেম উদ্দিনের মাথায় আঘাত করে এবং দোকানে থাকা ছুরি নিয়ে মোসলেম উদ্দিনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথারি ঘাই মেরে মোসলেম উদ্দিনের মৃত্যু নিশ্চিত করে।

পরদিন সকাল বেলা দোকান ঘরের মেঝেতে সিজদারত ভঙ্গিতে মোসলেম উদ্দিনের রক্তাক্ত লাশ পাওয়ার ঘটনায় স্থানীয়ভাবে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং ৭৫ বছরের বৃদ্ধ মোসলেম উদ্দিনকে খুন করার বিষয়টি বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্র-পত্রিকায় ফলাও করে ছাপা হয়। পরবর্তীতে উক্ত ঘটনায় ত্রিশাল থানার মামলা নং-১০, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/ ৩৪ দঃ বিঃ রুজু হয়।

ত্রিশাল থানা পুলিশ কর্তৃক মামলাটি তদন্তাধীন অবস্থায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে গত ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮ খ্রিঃ পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলা মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে এবং মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) জনাব প্রদীপ কুমার গোস্বামী’কে প্রদান করা হয়। তিনি মামলাটি তদন্তকালে অজ্ঞাতনামা আসামীদের সনাক্তপূর্বক গ্রেফতারের লক্ষ্যে ত্রিশাল থানাসহ আশপাশের থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করতে থাকেন।

এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে পাওয়া পদচিহ্ন ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত ২৭ এপ্রিল ২০২১ খ্রিঃ ত্রিশাল থানাধীন অলহরি বাদামিয়া এলাকা হতে আসামী আকরাম হোসেনকে গ্রেফতার করেন। পুলিশ সুপার জনাব গৌতম কুমার বিশ্বাস এর দিক নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে ধৃত আসামীকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সন্ধিগ্ধ আসামী আকরাম হোসেন মুদি দোকানদার মোসলেম উদ্দিনকে হত্যার কথা স্বীকার করে।

অদ্য ২৮ এপ্রিল ২০২১ খ্রিঃ সন্ধিগ্ধ গ্রেফতারকৃত আসামী আকরাম হোসেনকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করলে, সে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলার সকল অফিসার ও ফোর্সের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় দীর্ঘ প্রায় ৪ বছর পর এই ক্লুলেস রহস্য উদঘাটন করা হয় বলে জানা যায়।