ঢাকা ০৯:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
নির্বাচনের মাধ্যমেই জাতির ভাগ্যের ফয়সালা হবে উপজেলা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন ট্রাস্কফোর্স কমিটির ত্রৈমাসিক  সভা অনুষ্ঠিত মনোনয়ন না পেয়ে যা বললেন রুমিন ফারহানা ভেড়ামারায় মাদক প্রতিরোধ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত বোয়ালমারীতে ভীমরুলের কামড়ে শিশুর মৃত্যু  কুষ্টিয়া-১ আসনে মনোনয়ন পেয়ে নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন বাচ্চু মোল্লা লক্ষ্মীপুরে তওহীদ ভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্র গঠনে ছাত্রদের করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত মান্দায় সার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ আর কি দখল মুক্ত হবে? বোয়ালমারী চিতারবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি ঘোড়াঘাটে হিজড়া থাকলেও ভোটার তালিকায় তৃতীয় লিঙ্গের ক্যাটাগরি শূন্য

পাট চাষীদের মুখে এবার এসেছে সোনালী হাসি

মো.আককাস আলী নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি: বরেন্দ্রঅঞ্চলের পাট চাষীদের মুখে এবার এসেছে সোনালী হাসি। চলতি বছর অনুকূল আবহাওয়া থাকায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে নতুন পাট উঠতে না উঠতেই দ্বিগুন দাম বিক্রি হচ্ছে। সার ও ভালো বীজের সহজলভ্যতা ও পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি করোনাকালীন সময় বিদেশে পাটের সুতার চাহিদা বেড়ে যাওয়াই চলতি বছর বাজারে পাটের বেশ কদর বেড়েছে।

কয়েক বছর যাবত প্রতিমণ পাট (৪০ কেজি) ১৫শ’ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা দরে থাকলেও চলতি বছর শুরুতেই মানভেদে সাড়ে তিন হাজার হতে সাড়ে চার হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। চলতি বছর বাজারে শুরুতেই এমন দাম দেখে সোনালী আঁশের সু-দিন ফিরতে শুরু করেছে বলে মনে করছেন কৃষিবিদরা। পাট কাটা শেষ হয়েছে এক মাস আগে।

এখন আঁশ ছড়ানো ও শুকানো চলছে পুরোদমে। বাজারে উঠতে শুরু করেছে নতুন পাট। দাম মোটামুটি ভাল থাকায় এবারে চাষিদের লাভের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।চলতি মৌসুমে পাটের ভাল ফলনের পাশাপাশি বাজারে উচ্চ মূল্য পাওয়ায় হাসি ফিরেছে জেলার চাষিদের। শুরুতে বৃষ্টি কম হওয়ায় পাট জাগ দিতে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল এ অঞ্চরের পাট চাষিদের।

বর্তমানে সব বাঁধা কাটিয়ে বেশি দামে পাট বিক্রি করতে পেরে বেশ ভীষণ আনন্দিত চাষিরা। ফলে দীর্ঘ অপেক্ষায় হাসি ফিরেছে সোনালী আঁশে। দেশের উত্তরের কৃষি নির্ভর ও খাদ্য ভান্ডার নামে খ্যাত বরেন্দ্র অঞ্চল নওগাঁ জেলা । ধান,পান, গম, ভুট্টা, বছরজুড়ে বিভিন্ন সবজির পাশাপাশি এখানে পাট উৎপাদন হয়।

বিগত কয়েক মৌসুম ধরে পাটের ভালো দাম না পাওয়ায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলেন এখানকার চাষিরা। তবে চলতি মৌসুমে জেলার হাট-বাজারগুলোতে পাটের দাম ভালো পাচ্ছেন তারা। কৃষকদের মতে, আগের যেকোনো বছরের তুলনায় এবার পাট বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলার ১০ টি উপজেলায় ১৪ হাজার ৯শ হেক্টর জমিতে পাটবীজ বপনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল।

গত বছর বপন করা হয়েছিলো ১৪ হাজার ৭৯৬ হেক্টর জমিতে। এ বছর উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার ৩৫০ বেল। (সাড়ে চার মণে এক বেল)। পাট ব্যবসায়ী মাসুদ রানা জানান, গত বছর প্রতি মন পাট বিক্রি হয়েছে ৮০০- ১২০০ টাকায়। পাট উঠার শুরুর সময় তা বেড়ে ১৫০০-২০০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এবার বছর শুরুতে ৩-৪ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতি মন পাট বিক্রি হচ্ছে।

এবং বাজারে আগের তুলনায় বর্তমানে চাহিদাও বেশি। কারণ বিশ্ব বাজারে সুতার দাম বেড়েছে, তাই পাটের দাম বেড়েছে। জেলার ঈশ^রপুর গ্রামের পাটচাষি পান্ধসঢ়;জু সরদার জানান, ২ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। এবং বাজারে দামও শুণছি ভাল। পাট চাষি সুকুমার রায় জানান, আগে প্রতি বছর ৩-৪ বিঘা জমিতে পাট চাষ করতাম। কিন্তু বাজারে বিক্রি করে ক্ষেতের খরচের টাকা হত না।

তাই এ আবাদ বাদ দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন বাজারে মূল্য বেড়ে যাওয়ায় এ বছর ২ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি এবং দাম ভালো পাওয়ায় খুব খুশি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো: শামছুল ওয়াদুদ জানান, পাট চাষের অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করায় এবার আবাদ ভালো হয়েছে। উৎপাদনও ভালো হচ্ছে বলে আশা করছি। বর্তমানে পাটের যে বাজারদর তা ঠিক থাকলে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। সোনালি আঁশের সুদিন ফিরবে। আগামীতে আরও বেশি জমিতে পাটের আবাদ হবে।

Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ

নির্বাচনের মাধ্যমেই জাতির ভাগ্যের ফয়সালা হবে

পাট চাষীদের মুখে এবার এসেছে সোনালী হাসি

আপডেট টাইম : ০৫:১৩:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

মো.আককাস আলী নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি: বরেন্দ্রঅঞ্চলের পাট চাষীদের মুখে এবার এসেছে সোনালী হাসি। চলতি বছর অনুকূল আবহাওয়া থাকায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে নতুন পাট উঠতে না উঠতেই দ্বিগুন দাম বিক্রি হচ্ছে। সার ও ভালো বীজের সহজলভ্যতা ও পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি করোনাকালীন সময় বিদেশে পাটের সুতার চাহিদা বেড়ে যাওয়াই চলতি বছর বাজারে পাটের বেশ কদর বেড়েছে।

কয়েক বছর যাবত প্রতিমণ পাট (৪০ কেজি) ১৫শ’ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা দরে থাকলেও চলতি বছর শুরুতেই মানভেদে সাড়ে তিন হাজার হতে সাড়ে চার হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। চলতি বছর বাজারে শুরুতেই এমন দাম দেখে সোনালী আঁশের সু-দিন ফিরতে শুরু করেছে বলে মনে করছেন কৃষিবিদরা। পাট কাটা শেষ হয়েছে এক মাস আগে।

এখন আঁশ ছড়ানো ও শুকানো চলছে পুরোদমে। বাজারে উঠতে শুরু করেছে নতুন পাট। দাম মোটামুটি ভাল থাকায় এবারে চাষিদের লাভের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।চলতি মৌসুমে পাটের ভাল ফলনের পাশাপাশি বাজারে উচ্চ মূল্য পাওয়ায় হাসি ফিরেছে জেলার চাষিদের। শুরুতে বৃষ্টি কম হওয়ায় পাট জাগ দিতে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল এ অঞ্চরের পাট চাষিদের।

বর্তমানে সব বাঁধা কাটিয়ে বেশি দামে পাট বিক্রি করতে পেরে বেশ ভীষণ আনন্দিত চাষিরা। ফলে দীর্ঘ অপেক্ষায় হাসি ফিরেছে সোনালী আঁশে। দেশের উত্তরের কৃষি নির্ভর ও খাদ্য ভান্ডার নামে খ্যাত বরেন্দ্র অঞ্চল নওগাঁ জেলা । ধান,পান, গম, ভুট্টা, বছরজুড়ে বিভিন্ন সবজির পাশাপাশি এখানে পাট উৎপাদন হয়।

বিগত কয়েক মৌসুম ধরে পাটের ভালো দাম না পাওয়ায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলেন এখানকার চাষিরা। তবে চলতি মৌসুমে জেলার হাট-বাজারগুলোতে পাটের দাম ভালো পাচ্ছেন তারা। কৃষকদের মতে, আগের যেকোনো বছরের তুলনায় এবার পাট বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলার ১০ টি উপজেলায় ১৪ হাজার ৯শ হেক্টর জমিতে পাটবীজ বপনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল।

গত বছর বপন করা হয়েছিলো ১৪ হাজার ৭৯৬ হেক্টর জমিতে। এ বছর উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার ৩৫০ বেল। (সাড়ে চার মণে এক বেল)। পাট ব্যবসায়ী মাসুদ রানা জানান, গত বছর প্রতি মন পাট বিক্রি হয়েছে ৮০০- ১২০০ টাকায়। পাট উঠার শুরুর সময় তা বেড়ে ১৫০০-২০০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এবার বছর শুরুতে ৩-৪ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতি মন পাট বিক্রি হচ্ছে।

এবং বাজারে আগের তুলনায় বর্তমানে চাহিদাও বেশি। কারণ বিশ্ব বাজারে সুতার দাম বেড়েছে, তাই পাটের দাম বেড়েছে। জেলার ঈশ^রপুর গ্রামের পাটচাষি পান্ধসঢ়;জু সরদার জানান, ২ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। এবং বাজারে দামও শুণছি ভাল। পাট চাষি সুকুমার রায় জানান, আগে প্রতি বছর ৩-৪ বিঘা জমিতে পাট চাষ করতাম। কিন্তু বাজারে বিক্রি করে ক্ষেতের খরচের টাকা হত না।

তাই এ আবাদ বাদ দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন বাজারে মূল্য বেড়ে যাওয়ায় এ বছর ২ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি এবং দাম ভালো পাওয়ায় খুব খুশি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো: শামছুল ওয়াদুদ জানান, পাট চাষের অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করায় এবার আবাদ ভালো হয়েছে। উৎপাদনও ভালো হচ্ছে বলে আশা করছি। বর্তমানে পাটের যে বাজারদর তা ঠিক থাকলে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। সোনালি আঁশের সুদিন ফিরবে। আগামীতে আরও বেশি জমিতে পাটের আবাদ হবে।