প্রিয় বঙ্গবন্ধু,
অনেক কল্পনা জল্পনা করে আজকে এই ১৭ই মার্চের ১০৩ তম জন্মদিনের মাহেন্দ্রক্ষণে আপনাকে লিখতে বসেছি। খুব ছোট বেলায় নানার মুখে শুনেছিলাম মুক্তিযুদ্ধের কথা, শুনেছিলাম জাতির পিতার কথা। বাংলার পরাধীন মাটিতে স্বাধীনতার রঙিন ফুল ফুটিয়েছিলেন আপনি। কিন্তু বিকেলে খেলতে যেতে চাইলে মা বলে পড়তে বসো, কাল তোমার পরীক্ষা। তখন মনে প্রশ্ন জাগে, আমার ভাগের স্বাধীনতাটুকু কই!? আপনি থাকলে আপনাকে অনুরোধ করতাম এই পরীক্ষা নামক হায়েনা থেকে আমাদের মুক্তি দেওয়ার জন্য। আকাশের দিকে তাকিয়ে অনেকবার তাঁরাদের মধ্যে খুঁজেছি আপনাকে কিন্তু আমার শিশু মন বারবার হতাশ হয়েছে এবং সর্বগ্রাসী বেদনার মুখে পড়েছে। তখন ব্যর্থ হয়েছি আপনাকে খুঁজতে। আপনার ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণটি কয়েকবার পড়েছি। পুরো শরীর থমথমে হয়ে যায়, আমি নতুন করে দেশকে ভালোবাসার অনুপ্রেরণা পাই। কুমিল্লায় সামরিক একাডেমিতে ক্যাডেটদের উদ্দেশ্যে ১১ জানুয়ারি ১৯৭৫ সালের ভাষণে আপনি বলেছিলেন,” বাংলাদেশের মাটি থেকে ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ, মুনাফাখোর আর চোরাকারবারিদের নির্মূল করবো।”আপনি বড় অসময়ে চলে গেলেন ! এখনো বাংলায় কোন অবুঝ শিশু নির্যাতিত হলে, তার মা কাঁদতে কাঁদতে বলে আমাদের বঙ্গবন্ধু থাকলে বাংলার মাটি এমন হতো না। অবুঝ শিশু চেয়ে থাকে, হয়তো আমার মতো অপেক্ষায় থাকে। সেদিন বত্রিশ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে গিয়েছিলাম। স্মৃতি গুলো নিরব ছিলো। পঁচাত্তরের সেই আগস্ট মাস! বাংলার মাটি রক্তসিক্ত হয়েছে তাঁর ঋণে। এদেশের মানুষ গুলো সেদিন বোবা হয়ে গিয়েছিল, কাঁদতেও ভুলে গিয়েছিল । যিনি এদেশের জাতির জনক, যাঁর ডাকে স্বাধীনতা ভূমিষ্ঠ হলো, মুক্তিদের হলো অভ্যূদয় । তিনি আমার ও পিতা, আমারও বন্ধু। সেদিন পদ্মা নদীর কাছে গিয়ে বলে এসেছি তোমার মতো গতি যার ছিলো তার খুব কাছে থেকে ঘুরে এসেছি। প্রিয় বঙ্গবন্ধু বড্ড বেশি দেরি হয়ে গেলো, আপনি রাগ করেছেন বুঝি। যমুনা ঢেউ বুকে নিয়ে শান্ত স্থির, নক্ষত্রেরা ঘুমিয়ে পড়েছে। আপনি নেই বলে গুমোট গরমে মাটিও চৌঁচির, আপনি নেই বলে মানুষের চোখের ভেতর কী অদ্ভুত শূন্যতা। বড্ড বেশি অসময়ে চলে গেছেন পিতা।১৯৭২ সালের মতো হঠাৎ যদি ফিরে আসেন এবং অগনিত মানুষের আনন্দ অশ্রুজলে ভাসতে ভাসতে বলেন , “দ্যাখো, আমি মরি নাই তোমাদের ভালোবাসা আজ আমাকে ফিরিয়ে এনেছে “। অধীর প্রতিক্ষায় রইলাম প্রিয় বঙ্গবন্ধু। “শুভ জন্মদিন বঙ্গবন্ধু “