রেজা মাহমুদ, নীলফামারী: বাজারে এবার দাম ভাল থাকায় আগাম আলু চাষে ব্যস্ত নীলফামারীর চাষীরা। জমি তৈরি, সার দেওয়া ও আলুর বীজ বপন কাজে মাঠে নেমেছেন কৃষাণ-কৃষাণীরা। সারা দেশের মধ্যে এ জেলাতেই সবচেয়ে বেশি আগাম চাষ হচ্ছে এবং নভেম্বরের শেষ দিকে আলু বাজারে আসবে বলে জানিয়েছেন কৃষিবিভাগ। জেলা কৃষিবিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে ৬ টি উপজেলার মধ্যে কিশোরগঞ্জে সবচেয়ে বেশি আগাম আলুর আবাদ করা হয়েছে। সেখানে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৫০ লক্ষ ৮৮০ মেট্রিকটন। টানা ভারী বর্ষণে এবার কিছুটা দেরি হলেও ইতোমধ্যে ৭৫ শতাংশ জমিতে আলু লাগানো হয়েছে। গ্রেনুলা ও সেভেন জাতের আলুই বেশি লাগানো হচ্ছে। ৫০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যেই এ জাতের আলুর ফলন ঘরে তোলা যায়।
ওই উপজেলায় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা আগাম আলু চাষাবাদে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। পরিবারের সবাই ব্যস্ত এখন মাঠ পরিচর্যায়। গতবারের মতো এবারও আগাম আলুর দাম পেয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চান। বাহাগিলি ইউনিয়নের দুরাকুঠি গ্রামের কৃষক আজম আলী বলেন, এবারে বর্ষার নিম্নাঞ্চল ডুবে যাওয়ায় উঁচু শ্রেণির ২ বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ করেছি। আশা করছি ফলন ও দামও ভাল পাওয়ার। এর মধ্যে এক বিঘা জমির আলুর গাছ (চারা) বড় হয়েছে। আগাম আলু চাষে খরচও তেমন একটা হয় না।
এতে পোকা মাকড়ের আক্রমণ ও রোগবালাই একবারেই কম। একই উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের দোলাপাড়া গ্রামের কৃষক আবু তাহের বলেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে গ্রানুলা সাদা জাতের আলু লাগিয়েছি। আশা করছি আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে ফলন ঘরে তুলতে পারব। নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল বলেন, নভেম্বরের ১০ তারিখ পর্যন্ত লাগানো আলুকে আগাম চাষ বলা হয়ে থাকে।
তিনি আরও বলেন, গ্রানুলা ও সেভেন জাতের আলু চাষে প্রতি বিঘায় ১০ থেকে ১২ বস্তা অর্থাৎ ২০ থেকে ২৪ মণ আলুর ফলন পাওয়া যায়। তিনি আরও বলেন, মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের বাড়িতে গিয়ে আগাম জাতের আলু ভালো ফলন ও রোগবালাই মুক্তির জন্য হাতে কলমে নানা পরামর্শ দিয়ে আসছে।