ঢাকা ১১:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
ভেড়ামারায় মাদক প্রতিরোধ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত বোয়ালমারীতে ভীমরুলের কামড়ে শিশুর মৃত্যু  কুষ্টিয়া-১ আসনে মনোনয়ন পেয়ে নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন বাচ্চু মোল্লা লক্ষ্মীপুরে তওহীদ ভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্র গঠনে ছাত্রদের করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত মান্দায় সার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ আর কি দখল মুক্ত হবে? বোয়ালমারী চিতারবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি ঘোড়াঘাটে হিজড়া থাকলেও ভোটার তালিকায় তৃতীয় লিঙ্গের ক্যাটাগরি শূন্য নির্বাচন বানচালকারীদের দাঁতভাঙা জবাব দিতে হবে — অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম বরেন্দ্র অঞ্চলে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে আমন ধানসহ শীতকালীন সব্জির ব্যাপক ক্ষতি  দৌলতপুরে সুদের টাকার বিরোধে শতাধিক মানুষ গ্রামছাড়া – পুলিশের পুনর্বাসন উদ্যোগ স্থানীয়দের বাধায় ব্যর্থ

ঘোড়াঘাট-পীরগঞ্জ সীমান্তে প্রকাশ্যে জুয়ার আসর উৎকণ্ঠায় এলাকাবাসী

ঘোড়াঘাট-পীরগঞ্জ সীমান্তে প্রকাশ্যে জুয়ার আসর উৎকণ্ঠায় এলাকাবাসী

ঘোড়াঘাট ((দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার সীমান্ত এলাকা কুলানন্দপুরে করতোয়া নদীর চরে প্রকাশ্যে দিনে দুপুরে জমে উঠছে মাদক ও জুয়ার আসর। এতে এলাকায় চুরি ও মাদকদ্রব্যের বিস্তার বেড়ে গেছে। আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে শালিকাদহ ও কুলানন্দপুরসহ দুই উপজেলার আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের সাধারণ মানুষের।

সরেজমিনে ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুলাকিপুর ইউনিয়নের কুলানন্দপুর সীমানা ঘেঁষা করতোয়া নদীর চরে প্রতিদিন দুপুরের পর থেকে রাত পর্যন্ত বসছে এই জুয়ার আসর। মূল হোতা হিসেবে উঠে এসেছে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বড় আলমপুর ইউনিয়নের ধর্মদাশপুর উচাপাড়া গ্রামের কুখ্যাত জুয়ারু আতাউর রহমান আতোয়ারের নাম। তার বিরুদ্ধে রংপুর ও দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন থানায় চুরি, মাদক, মারামারি এমনকি ধর্ষণ চেষ্টার মতো একাধিক মামলা থাকা সত্ত্বেও রহস্যজনক কারণে সে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, আতাউর দীর্ঘদিন ধরে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিদেরকে সাথে নিয়ে কুলানন্দপুর এলাকায় মাদক ও জুয়ার আসর চালাচ্ছে। প্রতিদিন ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাসযোগে বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত মানুষ এসে এই জুয়ার আড্ডায় অংশ নিচ্ছে। এতে করে যুবসমাজ মাদকের জালে জড়িয়ে পড়ছে, সৃষ্টি হয়েছে এক বিপজ্জনক সামাজিক অবক্ষয়।

জানা গেছে, আতাউরের পাশাপাশি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলর শিমুলবাড়ী এলাকার মেহেদুল ইসলামও এই অপরাধ চক্রের সাথে জড়িত। শুধু জুয়াই নয়, কুলানন্দপুর এলাকায় ইয়াবা ট্যাবলেটসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্যের অবাধ বিক্রি বেড়ে গেছে। এ ছাড়াও নদীর বালু অবৈধভাবে উত্তোলন, জুয়ার টাকার ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষ এবং কখনও কখনও খুনজখমের ঘটনাও ঘটছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, “জুয়া ও মাদকের কারণে আমাদের এলাকার কিশোর ও যুবকরা ধ্বংসের পথে যাচ্ছে। প্রশাসনের নীরবতা আমাদের হতাশ করেছে।” এ যেন দেখার কেউ নেই! এলাকাবাসীর অভিযোগ, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা প্রশাসন  অভিযান পরিচালনা করলে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার সীমানায় গিয়ে আসর বসে। আবার পীরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করলে ঘোড়াঘাট উপজেলার সীমানায় আসর বসে। এলাকাবাসীর প্রশ্ন এ যেন চোর পুলিশ খেলা চলছে! তাদের দাবি, প্রশাসনের নির্লিপ্ততা দূর করে দ্রুত আতোয়ার ও তার সহযোগীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে জুয়া, মাদক এবং অন্যান্য অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এ বিষয়ে ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, “জুয়ারিরা মূলত অন্য জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় জুয়ার আসর বসায়। আমরা অভিযান চালাতে গেলে তারা পীরগঞ্জ এলাকায় পালিয়ে যায়। তবুও আমরা বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিবো।”

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, “নদী ও সীমান্ত এলাকা হওয়ার কারণে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই অপরাধের সাথে জড়িতরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। আমি বিষয়গুলো নিয়ে জেলা আইনশৃঙ্খলা মিটিং এ আলোচনা করেছি। এ বিষয়ে খুব দ্রুত আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ

ভেড়ামারায় মাদক প্রতিরোধ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

ঘোড়াঘাট-পীরগঞ্জ সীমান্তে প্রকাশ্যে জুয়ার আসর উৎকণ্ঠায় এলাকাবাসী

আপডেট টাইম : ০৭:২২:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫

ঘোড়াঘাট-পীরগঞ্জ সীমান্তে প্রকাশ্যে জুয়ার আসর উৎকণ্ঠায় এলাকাবাসী

ঘোড়াঘাট ((দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার সীমান্ত এলাকা কুলানন্দপুরে করতোয়া নদীর চরে প্রকাশ্যে দিনে দুপুরে জমে উঠছে মাদক ও জুয়ার আসর। এতে এলাকায় চুরি ও মাদকদ্রব্যের বিস্তার বেড়ে গেছে। আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে শালিকাদহ ও কুলানন্দপুরসহ দুই উপজেলার আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের সাধারণ মানুষের।

সরেজমিনে ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুলাকিপুর ইউনিয়নের কুলানন্দপুর সীমানা ঘেঁষা করতোয়া নদীর চরে প্রতিদিন দুপুরের পর থেকে রাত পর্যন্ত বসছে এই জুয়ার আসর। মূল হোতা হিসেবে উঠে এসেছে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বড় আলমপুর ইউনিয়নের ধর্মদাশপুর উচাপাড়া গ্রামের কুখ্যাত জুয়ারু আতাউর রহমান আতোয়ারের নাম। তার বিরুদ্ধে রংপুর ও দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন থানায় চুরি, মাদক, মারামারি এমনকি ধর্ষণ চেষ্টার মতো একাধিক মামলা থাকা সত্ত্বেও রহস্যজনক কারণে সে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, আতাউর দীর্ঘদিন ধরে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিদেরকে সাথে নিয়ে কুলানন্দপুর এলাকায় মাদক ও জুয়ার আসর চালাচ্ছে। প্রতিদিন ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাসযোগে বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত মানুষ এসে এই জুয়ার আড্ডায় অংশ নিচ্ছে। এতে করে যুবসমাজ মাদকের জালে জড়িয়ে পড়ছে, সৃষ্টি হয়েছে এক বিপজ্জনক সামাজিক অবক্ষয়।

জানা গেছে, আতাউরের পাশাপাশি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলর শিমুলবাড়ী এলাকার মেহেদুল ইসলামও এই অপরাধ চক্রের সাথে জড়িত। শুধু জুয়াই নয়, কুলানন্দপুর এলাকায় ইয়াবা ট্যাবলেটসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্যের অবাধ বিক্রি বেড়ে গেছে। এ ছাড়াও নদীর বালু অবৈধভাবে উত্তোলন, জুয়ার টাকার ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষ এবং কখনও কখনও খুনজখমের ঘটনাও ঘটছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, “জুয়া ও মাদকের কারণে আমাদের এলাকার কিশোর ও যুবকরা ধ্বংসের পথে যাচ্ছে। প্রশাসনের নীরবতা আমাদের হতাশ করেছে।” এ যেন দেখার কেউ নেই! এলাকাবাসীর অভিযোগ, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা প্রশাসন  অভিযান পরিচালনা করলে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার সীমানায় গিয়ে আসর বসে। আবার পীরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করলে ঘোড়াঘাট উপজেলার সীমানায় আসর বসে। এলাকাবাসীর প্রশ্ন এ যেন চোর পুলিশ খেলা চলছে! তাদের দাবি, প্রশাসনের নির্লিপ্ততা দূর করে দ্রুত আতোয়ার ও তার সহযোগীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে জুয়া, মাদক এবং অন্যান্য অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এ বিষয়ে ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, “জুয়ারিরা মূলত অন্য জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় জুয়ার আসর বসায়। আমরা অভিযান চালাতে গেলে তারা পীরগঞ্জ এলাকায় পালিয়ে যায়। তবুও আমরা বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিবো।”

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, “নদী ও সীমান্ত এলাকা হওয়ার কারণে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই অপরাধের সাথে জড়িতরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। আমি বিষয়গুলো নিয়ে জেলা আইনশৃঙ্খলা মিটিং এ আলোচনা করেছি। এ বিষয়ে খুব দ্রুত আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”