ঢাকা ০৫:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
দুই দিনের সফরে নিজ জেলা পাবনায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন নাগরপুরে হত্যার ৬ মাস পর লাশ উত্তোলন  বন্দরে মাদক সম্রাট রমজান, বাবুর বিরুদ্ধে পিতাকে মারধরের অভিযোগ আলফাডাঙ্গায় ভুয়া চিকিৎসকের কারাদণ্ড নাটোরে বৈধবালু ব্যবসায়ী ইঞ্জিনিয়ার কাকন ষড়যন্ত্রের শিকার, বাঘায় বেল্লাল মন্ডলের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উত্তাল অঞ্চল ভেড়ামারায় বিনামূল্যে বীজ সার বিতরণ নির্বাচনের মাধ্যমেই জাতির ভাগ্যের ফয়সালা হবে উপজেলা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন ট্রাস্কফোর্স কমিটির ত্রৈমাসিক  সভা অনুষ্ঠিত মনোনয়ন না পেয়ে যা বললেন রুমিন ফারহানা ভেড়ামারায় মাদক প্রতিরোধ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

ময়মনসিংহে দুই ভাই হত্যা মামলার বাদী ও সাক্ষীদের হয়রানির অভিযোগে মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টারঃ জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই ভাই হত্যা মামলার আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে তাদের পরিবার ও এলাকাবাসী মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল করে। আজ শনিবার ১২ ফেব্রুয়ারী দুপুরে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চর সিরতা নয়াপাড়া ছালুর মোড়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলটি অনুষ্ঠিত হয়।

ময়মনসিংহ সদর উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামে দুই ভাই রফিকুল ইসলাম ও শফিকুল ইসলামকে হত্যা মামলার সাক্ষীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে আজ শনিবার বেলা ১১টায় নয়াপাড়া মোড়ে মানববন্ধন করেছেন গ্রামবাসী। তাঁরা জানান, হত্যা মামলার মূল আসামিরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। প্রশ্ন তোলা হয়েছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও।

দিনের বেলায় প্রকাশ্যে দুই ভাইকে হত্যা মামলায় আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় গ্রামবাসীর মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে বলে জানান মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা। তাঁদের অভিযোগ, আসামিরা মামলার বাদী ও সাক্ষীদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এসব আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চরসিরতা ইউনিয়নের নয়াপাড়া মোড়ে অবস্থিত একটি মসজিদের জমি নিয়ে নয়াপাড়া গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর জেরে গত ১০ ডিসেম্বর বেলা ১১টার দিকে একটি পক্ষ সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা করে দুই ভাই রফিকুল ও শফিকুলকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের বাবা আলী আকবর বাদী হয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।

এ মামলায় সদর উপজেলার চরসিরতা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু সাঈদসহ ৩৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি আরও কয়েকজন। পুলিশ বলছে, এর মধ্যে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি ১৫ আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। পলাতক আরও ১৬ আসামি।

মানববন্ধনে বলা হয়, এই হত্যাকাণ্ডের মূল ইন্ধনদাতা সিরতা ইউপির চেয়ারম্যান আবু সাঈদ। তাঁর আদেশে দুই ভাই হত্যায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেন আজিজুল রবিন, আবুল কালাম, সবুজ ও শরীফ। তাঁদের কাউকেই গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।

মামলার বাদী আলী আকবর বলেন, ‘আমার এক ছেলে বিদেশে থাকে। আর যে দুই ছেলে আমাকে দেখে রাখত, তাদের হত্যা করা হয়েছে। আমি এখন পুরোপুরি অসহায়। ছেলেদের হত্যার বিচার চাইতে মামলা করেছি। মামলা করতে যারা আমাকে সহযোগিতা করেছে এবং যারা সাক্ষী হয়েছে, আসামিপক্ষের স্বজনেরা তাদের নামে বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। পুলিশ হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের চেয়ে সাক্ষীদের হয়রানির কাজটি বেশি করছে।

নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মজিদ বলেন, দিনের বেলায় প্রকাশ্যে রফিকুল ও শফিকুলকে হত্যা করা হয়েছে। এ মামলার সাক্ষী হওয়ায় মিথ্যা লুটপাটের মামলায় তাঁকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে টানা ৪৫ দিন ঘটনাস্থলে পুলিশ ছিল। পুলিশের সামনেই হত্যাকারীরা নিজেদের বাড়ির মালামাল সরিয়ে নিয়ে গেছেন। নিজেদের লোক দিয়ে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে মিথ্যা মামলা করেছেন।

মানববন্ধনে চরসিরতা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান, সিরতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন ও নিহত রফিকুল ইসলামের ছেলে আবুল হাসান বক্তব্য দেন।

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ বলেন, পুলিশ দুই ভাই হত্যা মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করে যাচ্ছে। আর মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ সত্য নয়। হত্যার পর আসামিদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে। পুলিশ এ মামলারও তদন্ত করছে।

Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ

দুই দিনের সফরে নিজ জেলা পাবনায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন

ময়মনসিংহে দুই ভাই হত্যা মামলার বাদী ও সাক্ষীদের হয়রানির অভিযোগে মানববন্ধন

আপডেট টাইম : ০৪:৩৭:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২

স্টাফ রিপোর্টারঃ জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই ভাই হত্যা মামলার আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে তাদের পরিবার ও এলাকাবাসী মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল করে। আজ শনিবার ১২ ফেব্রুয়ারী দুপুরে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চর সিরতা নয়াপাড়া ছালুর মোড়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলটি অনুষ্ঠিত হয়।

ময়মনসিংহ সদর উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামে দুই ভাই রফিকুল ইসলাম ও শফিকুল ইসলামকে হত্যা মামলার সাক্ষীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে আজ শনিবার বেলা ১১টায় নয়াপাড়া মোড়ে মানববন্ধন করেছেন গ্রামবাসী। তাঁরা জানান, হত্যা মামলার মূল আসামিরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। প্রশ্ন তোলা হয়েছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও।

দিনের বেলায় প্রকাশ্যে দুই ভাইকে হত্যা মামলায় আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় গ্রামবাসীর মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে বলে জানান মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা। তাঁদের অভিযোগ, আসামিরা মামলার বাদী ও সাক্ষীদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এসব আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চরসিরতা ইউনিয়নের নয়াপাড়া মোড়ে অবস্থিত একটি মসজিদের জমি নিয়ে নয়াপাড়া গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর জেরে গত ১০ ডিসেম্বর বেলা ১১টার দিকে একটি পক্ষ সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা করে দুই ভাই রফিকুল ও শফিকুলকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের বাবা আলী আকবর বাদী হয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।

এ মামলায় সদর উপজেলার চরসিরতা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু সাঈদসহ ৩৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি আরও কয়েকজন। পুলিশ বলছে, এর মধ্যে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি ১৫ আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। পলাতক আরও ১৬ আসামি।

মানববন্ধনে বলা হয়, এই হত্যাকাণ্ডের মূল ইন্ধনদাতা সিরতা ইউপির চেয়ারম্যান আবু সাঈদ। তাঁর আদেশে দুই ভাই হত্যায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেন আজিজুল রবিন, আবুল কালাম, সবুজ ও শরীফ। তাঁদের কাউকেই গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।

মামলার বাদী আলী আকবর বলেন, ‘আমার এক ছেলে বিদেশে থাকে। আর যে দুই ছেলে আমাকে দেখে রাখত, তাদের হত্যা করা হয়েছে। আমি এখন পুরোপুরি অসহায়। ছেলেদের হত্যার বিচার চাইতে মামলা করেছি। মামলা করতে যারা আমাকে সহযোগিতা করেছে এবং যারা সাক্ষী হয়েছে, আসামিপক্ষের স্বজনেরা তাদের নামে বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। পুলিশ হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের চেয়ে সাক্ষীদের হয়রানির কাজটি বেশি করছে।

নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মজিদ বলেন, দিনের বেলায় প্রকাশ্যে রফিকুল ও শফিকুলকে হত্যা করা হয়েছে। এ মামলার সাক্ষী হওয়ায় মিথ্যা লুটপাটের মামলায় তাঁকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে টানা ৪৫ দিন ঘটনাস্থলে পুলিশ ছিল। পুলিশের সামনেই হত্যাকারীরা নিজেদের বাড়ির মালামাল সরিয়ে নিয়ে গেছেন। নিজেদের লোক দিয়ে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে মিথ্যা মামলা করেছেন।

মানববন্ধনে চরসিরতা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান, সিরতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন ও নিহত রফিকুল ইসলামের ছেলে আবুল হাসান বক্তব্য দেন।

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ বলেন, পুলিশ দুই ভাই হত্যা মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করে যাচ্ছে। আর মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ সত্য নয়। হত্যার পর আসামিদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে। পুলিশ এ মামলারও তদন্ত করছে।