বিধান মন্ডল (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুরের সালথায় নানা আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর জ্যেষ্ঠ পুত্র, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব , বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (৫ আগস্ট) সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
প্রথমে সকাল ১০টায় উপজেলা পরিষদের চত্বরে স্থাপিত শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন উপজেলা প্রশাসন। পরে সাড়ে ১০টায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
প্রথমে শেখ কামালের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী (এমপি) মাননীয় সংসদ উপনেতা বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ এর পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
এরপর পর্যায়ক্রমে উপজেলা প্রশাসন, সালথা থানা প্রশাসন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, উপজেলা অফিসার্স ক্লাব, পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ তাছলিমা আকতারের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রুপা বেগম।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা মৎস্য অফিসার রাজীব রায়ের, উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ তৌহিদুর রহমান, সালথা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ শেখ সাদিক, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আহসান মোস্তফা কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার আলীমুজ্জামান, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ তেলায়ত হোসেন, জন স্বাস্থ্য প্রকৌশল আলামিন হোসেন প্রমুখ। এছাড়াও বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বক্তব্যে বলেন, দেশের সমাজভাবনায় শেখ কামাল মাত্র ২৬ বছরের জীবনে বাঙালির সংস্কৃতি ও ক্রীড়াক্ষেত্রে এক বিরল প্রতিভাবান সংগঠক ও উদ্যোক্তা ছিলেন। তিনি এ দেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য আজীবন অনুকরণীয়।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নিয়েও শেখ কামাল খুবই সাধারণ জীবনযাপন করতেন। তিনি যেমন ছায়ানটে সেঁতার বাজিয়েছেন, তেমনি আবাহনী ক্রীড়াচক্র নামক ঐতিহ্যবাহী ফুটবল ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেছেন। এছাড়াও বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী শেখ কামাল ছিলেন ঢাকা থিয়েটার ও স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সংগঠক।তিনি ছিলেন অনেক গুণের অধিকারী অর্থাৎ আদর্শ বাবার আদর্শ সন্তান। তিনি ছিলেন বিনয়ী ও মার্জিত। দাম্ভিকতা ছিল তার স্বভাব বিরুদ্ধ। তারুণ্যের প্রতীক শেখ কামাল বেঁচে থাকলে হয়তো বর্তমান বাংলাদেশ যুব, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে আরও আধুনিক ও প্রগতিশীল অবস্থানে আসীন থাকতো। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে বঙ্গবন্ধুসহ পুরো পরিবারের সঙ্গে শেখ কামালকেও আমরা হারিয়েছি। এ ছাড়াও বক্তারা দেশের ক্রীড়াঙ্গন, সাংস্কৃতিক অঙ্গন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে শেখ কামালের অবদানকে স্মরণ করেন।
আলোচনা সভা শেষে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের আত্মার শান্তি ও মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
উল্লেখ, ১৯৪৯ সালের ৫ আগস্ট তিনি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে মাত্র ২৬ বছর বয়সে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে তাকেও ঘাতকরা হত্যা করে।
অনুষ্ঠান টি সঞ্চালনা করেন উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার কৃষ্ণ চক্রবর্তী।