রাজশাহী ব্যুরো: একটি সংসার তছনছ করে লাবনীকে সুখের সাগর পাড়ি দিবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল মোহনপুর উপজেলার হরিদাগাছী গ্রামের রবিউলের ছেলে রায়হান আলম। বিয়ের প্রতিশ্রুতির দোহায় দিয়ে দিনের পর দিন তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে রায়হান। ২২ ফেব্রুয়ারী লাবনীকে বিয়ে করবে বলে বাসায় নিয়ে গেলে, বাসার সামনে রেখে থেকে পালিয়ে যায় রায়হান। বিয়ের দাবীতে রায়হানের বাড়ির সামনে অপেক্ষা করে লাবনী। অবশেষে ২৩ ফেব্রুয়ারী সকালে রায়হানের পরিবারের লোকজন লাবনীকে প্রলুব্ধ করে পূর্বের স্বামী সাগরকে তালাক দেওয়ায়। পরে ২৩ ফেব্রুয়ারী রাতে কাজি অফিসে না গিয়ে কেশরহাট পৌর কাউন্সিলর আসলাম ও সাংবাদিক পরিচয়দানকারি মামুন এর যোগসাজসে রায়হানের পরিবার ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে রায়হানের সাথে তথাকথিত বিয়ে হয় লাবনীর। বিয়ের সময় লাবনীর কোন অভিভাবক না থাকায়, মোহরানায় তার সম্মতি ছাড়া মাত্র ৭০ হাজার টাকা মোহরানায় ধার্য করা হয়। এরপর পুলিশি সহযোগিতায় লাবনীকে রাখা হয় রায়হানের পারিবারে। এরপর শুরু হয় লাবনীর উপর শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন। বিয়ের পর থেকে লাবনীকে রাখা হয় তালাবদ্ধ করে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ৬ মার্চ নিজের জীবন হাতে নিয়ে বেরিয়ে আসে লাবনী। সেই দিনই তার ছোট ভাইকে সাথে নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি হয়। চিকিৎসা শেষে ১০ মার্চ মেয়েটি বাদি হয়ে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১১(গ)/৩০ ধারায় মোহনপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর আসামী রায়হানসহ অন্যান্যরা কিছুদিন গাঁ ঢাকা দিয়ে থেকে কৌশলে মামলা থেকে জামিন নেয় রায়হানের মা ও বোন। পরে রায়হান আলম গত ২১ মার্চ আদালতের নিকট আত্মসমর্পন করলে অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর বিচারক মো. সাইফুল ইসলাম জামিনের আবেদন নামুঞ্জুর করে জেল হজতে পেরণের নির্দেশ দেন। সেই মামলায় আবারো জামিনের জন্য মিছকেসের মাধ্যমে রাজশাহী জেলা ও দায়রা জজ আদালেতে বদলী করা হয়েছে। আগামী ৪এপ্রিল যৌতুকের সেই মামলা জামিন শুনানি হবে বলে জানা গেছে। মামলা সুত্রে জানা গেছে, বিয়ের পরদিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে ৫ মার্চ রাত ৮ টার দিকে শয়ন ঘরে রায়হান বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটায়। পরের দিন ৬ মার্চ সকালে রান্নাঘরে গেলে ননদ মনিরা খাতুন (২৪) তার চুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলে দেয় এবং তার শাশুড়ী রোকসানা বেগম (৪৭) যৌতুকের টাকার জন্য লোহার গরম সিক দিয়ে ডান হাতের তালুতে ছ্যাকা দিয়ে পোড়া জখম করে। তারা যৌতুকের টাকা না দিলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। নিজের জীবন বাঁচাতে ধুরইল গ্রামে তার বাবার বাড়িতে পালিয়ে আসে। সেখানে তার ছোট ভাই সোহেল রানা’র সহযোগীতায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ওসিসি-তে ভর্তি হয় এবং চিকিৎসা গ্রহণ করে। এসময় তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতের চিহ্ন দেখা গেছে।