প্রচন্ড তাপদহকে উপেক্ষা করে বরেন্দ্র অঞ্চলে বোরো ধান কাটা শুরু হলেও দাম নিয়ে সংশয়
মোহাম্মদ আককাস আলী : প্রচন্ড তাপদহকে উপেক্ষা করে বরেন্দ্র অঞ্চলে বোরো ধান কাটা মাড়াই শুরু হলেও দাম নিয়ে সংশয় চাষীরা।
প্রতিদিন সূর্য ওঠার আগেই কাস্তে হাতে মাঠে ছুটছেন তারা। প্রচণ্ড রোদের মধ্যেই জমি থেকে কষ্টের ফসল ঘরে তোলায় তাদের যেন নেই ক্লান্তি। তীব্র খরার কারণে এ বছর পোকামাকড় ও রোগবালাই বেশী হওয়ায় ধানের ফলন কম হয়েছে। গত বছরে তুলনায় ৬ থেকে ৭ মন হারে দান কম হচ্ছে এবং বাজারে ধানের দামও কম পাচ্ছেন কৃষকরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরও সূত্রে জানাযায়,চলতি বোরো মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৯৫ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে ৬ দশমিক ৫৭ মেট্রিক টন ধান এবং ৪ দশমিক ৩৮ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এই হিসেবে জেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ১২ লাখ ৫৪ হাজার ৫৪০ মেট্রিক টন ধান ও ৮ লাখ ৩৬ হাজার ৩৬০ মেট্রিক চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এবার জেলায় জিরা, কাটারি, উচ্চফলনশীল (উফশী) ব্রি-২৮, ব্রি-৯০ ও শুভলতা জাতের ধান বেশি চাষ হয়েছে। বিঘাপ্রতি ২২ থেকে ২৫ মণ ধান হচ্ছে। এবার প্রতি কেজি ধান উৎপাদনে কৃষকের খরচ পড়েছে ২৩ টাকা ৬০ পয়সা। গত বছর প্রতি কেজি ধানের উৎপাদন খরচ ছিলো ১৭ টাকা ৮০ পয়সা। সার ও কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি এবং কৃষি শ্রমিকের মজুরি বাড়ায় প্রতি কেজি ধান উৎপাদনে খরচ বেড়েছে ৫ টাকা ২০ পয়সা।
বোরো চাষীরা জানান, এ জেলার মানুষের প্রধান ফসল ধান। এই ধানের ওপরেই তাঁদের সব নির্ভর করে। সংসারের খরচ, ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া, সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানসহ আনুষঙ্গিক ব্যয়- সবই ধান বিক্রির টাকা দিয়ে করা হয়। হাটবাজারগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানাযায়, বর্তমানে জিরাশাইল, কাটারিভোগ ও বিআর-২৮ জাতের ভেজা ধান উঠতে শুরু করেছে। ধানের আর্দ্রতা ও দানার পুষ্টতা অনুযায়ী জিরাশাইল ধান প্রতি মণ ১২ শ টাকায়, কাটারিভোগ ১১শ থেকে ১১৫০ টাকায়,এবং বিআর-২৮ ধান ১হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাষিরা বলছেন, এই দামে ধান বিক্রি করলে লোকসান গুনতে হবে।