ঢাকা ১১:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
রাজশাহীর মোহনপুরে ওয়ার্ড কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে ফকিরপাড়া তরুণ সংঘ চ্যাম্পিয়ন বরেন্দ্র অঞ্চলে আমন ধানে ছত্রাক ও মাজরা পোকার আক্রমণে দিশেহারা কৃষকরা  লালপুরে চেয়ারম্যানের ছেলে সহ ইমো হ্যাক প্রতারক চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার ঘোড়াঘাটে ফুটপাত ও ড্রেন দখল প্রশাসনিক অবহেলায় বাড়ছে ভোগান্তি ভোটের শক্তিতেই পরিবর্তন, বন্দুকের ভয় নয় — প্রফেসর ড. সাইফুল ইসলাম কুষ্টিয়ায় বিজিবির অভিযানে ১৮ লাখ টাকার  চোরাচালানী পণ্য জব্দ দৌলতপুরে জমি নিয়ে বিরোধে সৎভাইয়ের হাতে যুবক খুন, আহত ৩ মিরপুর মালিহাদে বিএনপি’র কর্মীসভা অনুষ্ঠিত জাতীয় পার্টি ব্যতীত নির্বাচন হবে না বাংলাদেশে — দৌলতপুরে আলোচনা সভায় শাহরিয়ার জামিল জুয়েল সম্মান, সংস্কৃতি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ডাক দিলেন অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম

সম্মান, সংস্কৃতি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ডাক দিলেন অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম

সম্মান, সংস্কৃতি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ডাক দিলেন অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম

হেলাল মজুমদার কুষ্টিয়া
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া–২ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রার্থী প্রফেসর ড. সাইফুল ইসলাম ২৩ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার, ২০২৫) ভেড়ামারা বাজার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় দলের ঘোষিত ৩১ দফা রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার কর্মসূচির লিফলেট বিতরণকালে বলেন—“আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে মানুষে মানুষে শ্রদ্ধা ও সৌজন্যের সংস্কৃতি ফিরে আসবে। ভিন্ন মত থাকা মানেই শত্রুতা নয়, বরং ভিন্ন চিন্তা থেকেই জাতি সমৃদ্ধ হয়।”
অধ্যাপক ড. ইসলাম বলেন, “বিগত ১৭ বছরের ফ্যাসিবাদী একনায়কতন্ত্র আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে ধ্বংস করেছে। সমাজে যে পারস্পরিক সৌজন্যবোধ ও মানবিক বন্ধন ছিল, তা ভেঙে পড়েছে। সম্মান ও শ্রদ্ধার জায়গা এখন প্রতিহিংসা ও হিংসাত্মক মনোভাবে দখল হয়ে গেছে।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের সমাজে এখন এমন পরিবেশ তৈরি হয়েছে যেখানে ভিন্ন মত প্রকাশ করলেই তাকে প্রতিপক্ষ ভাবা হয়। অথচ প্রকৃত রাজনীতি হলো ভিন্ন মতকে শ্রদ্ধা করা এবং সহাবস্থান নিশ্চিত করা।”
ভাষণে তিনি নারীর মর্যাদা ও শ্রদ্ধার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “আমার মা ১০ মাস ১০ দিন গর্ভে ধারণ করে আমাকে পৃথিবীতে এনেছেন। তাই নারীকে সম্মান করা মানে মানবতাকেই সম্মান করা। নারীকে অসম্মান মানে সমাজের শেকড় কেটে ফেলা।” তিনি আহ্বান জানান—রাজনীতি, সমাজ ও পরিবার—সব জায়গায় নারীর নিরাপত্তা ও সম্মান নিশ্চিত করতে হবে। বক্তৃতায় অধ্যাপক ড. ইসলাম বলেন, “বিএনপি ক্ষমতায় এলে এই নষ্ট রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন ঘটবে। ফ্যাসিবাদ ও একদলীয় মনোভাব থেকে দেশকে মুক্ত করে সম্মান, সহাবস্থান ও নৈতিক রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করা হবে।” তিনি উল্লেখ করেন, বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বারবার আহ্বান জানিয়েছেন, “সম্প্রীতি, সহমর্মিতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার রাজনীতি গড়ে তুলতে হবে। বিভাজন নয়—ভালোবাসাই আমাদের শক্তি।”
লিফলেট বিতরণের সময় তিনি বলেন, “বিএনপি যে ৩১ দফা রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের কর্মসূচি দিয়েছে, সেটি শুধু রাজনৈতিক নয়, একটি নৈতিক চুক্তি।” এই লিফলেটে প্রতিফলিত মূল বিষয়গুলো হলো—স্বচ্ছ নির্বাচন ও আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও নারীর উন্নয়ন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও মানবাধিকারের নিশ্চয়তা। তিনি বলেন,
“ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার—এই মূলমন্ত্রেই বিএনপির রাজনীতি পরিচালিত হবে।” অধ্যাপক ইসলাম বলেন, “আজকের রাজনীতিতে এক ধরনের অশুভ প্রতিযোগিতা চলছে—যেখানে আদর্শ নয়, স্বার্থ প্রাধান্য পাচ্ছে। এই অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতার কোনো প্রয়োজন নেই। ত্যাগ, নিষ্ঠা ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতাই প্রকৃত রাজনীতির মূলভিত্তি।” তিনি যোগ করেন, “যে রাজনীতিতে ত্যাগ নেই, সেখানে বিশ্বাসও থাকে না। আমরা চাই এমন রাজনীতি যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, প্রতিপক্ষও সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে।”
ভাষণে তিনি রাজনৈতিক যোগাযোগের ইতিহাসও টানেন—“১৮৯২ সালে বেলজিয়ামে প্রথম রাজনৈতিক পিআর (Public Relations) প্রথা শুরু হয়। ইউরোপ ও আমেরিকার অনেক দেশ এটি গ্রহণ করেছে। এখন আমাদেরও আধুনিক রাজনৈতিক যোগাযোগের চর্চা করতে হবে, যাতে জনগণের সঙ্গে দলের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়।” তিনি বলেন, “আগামী নির্বাচন একটি ঐতিহাসিক সুযোগ। প্রচলিত ধারার বাইরে গিয়ে আমাদের নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরি করতে হবে—যেখানে স্বচ্ছতা, দায়িত্ববোধ ও নৈতিকতা রাজনীতির মূল মূল্যবোধ হবে।”
অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলামের এই ভাষণ ছিল একাধারে রাজনৈতিক, দার্শনিক ও নৈতিক বার্তায় পরিপূর্ণ। তিনি আহ্বান জানিয়েছেন—“সম্মান ফিরিয়ে আনুন, নৈতিকতা ফিরিয়ে আনুন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনুন—এটাই হোক আমাদের রাজনীতি।” ভেড়ামারা ও মিরপুর অঞ্চলে তাঁর এই বক্তব্য ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। জনগণ তাঁকে ঘিরে ভালোবাসা প্রকাশ করেছে, কেউ ফুল দিয়েছে, কেউ বলেছে—“আমরা এমন নেতা চাই, যিনি রাজনীতিকে মানবতার সঙ্গে যুক্ত করেন।”

Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ

রাজশাহীর মোহনপুরে ওয়ার্ড কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে ফকিরপাড়া তরুণ সংঘ চ্যাম্পিয়ন

সম্মান, সংস্কৃতি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ডাক দিলেন অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম

আপডেট টাইম : ০৯:৪৫:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

সম্মান, সংস্কৃতি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ডাক দিলেন অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম

হেলাল মজুমদার কুষ্টিয়া
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া–২ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রার্থী প্রফেসর ড. সাইফুল ইসলাম ২৩ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার, ২০২৫) ভেড়ামারা বাজার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় দলের ঘোষিত ৩১ দফা রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার কর্মসূচির লিফলেট বিতরণকালে বলেন—“আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে মানুষে মানুষে শ্রদ্ধা ও সৌজন্যের সংস্কৃতি ফিরে আসবে। ভিন্ন মত থাকা মানেই শত্রুতা নয়, বরং ভিন্ন চিন্তা থেকেই জাতি সমৃদ্ধ হয়।”
অধ্যাপক ড. ইসলাম বলেন, “বিগত ১৭ বছরের ফ্যাসিবাদী একনায়কতন্ত্র আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে ধ্বংস করেছে। সমাজে যে পারস্পরিক সৌজন্যবোধ ও মানবিক বন্ধন ছিল, তা ভেঙে পড়েছে। সম্মান ও শ্রদ্ধার জায়গা এখন প্রতিহিংসা ও হিংসাত্মক মনোভাবে দখল হয়ে গেছে।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের সমাজে এখন এমন পরিবেশ তৈরি হয়েছে যেখানে ভিন্ন মত প্রকাশ করলেই তাকে প্রতিপক্ষ ভাবা হয়। অথচ প্রকৃত রাজনীতি হলো ভিন্ন মতকে শ্রদ্ধা করা এবং সহাবস্থান নিশ্চিত করা।”
ভাষণে তিনি নারীর মর্যাদা ও শ্রদ্ধার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “আমার মা ১০ মাস ১০ দিন গর্ভে ধারণ করে আমাকে পৃথিবীতে এনেছেন। তাই নারীকে সম্মান করা মানে মানবতাকেই সম্মান করা। নারীকে অসম্মান মানে সমাজের শেকড় কেটে ফেলা।” তিনি আহ্বান জানান—রাজনীতি, সমাজ ও পরিবার—সব জায়গায় নারীর নিরাপত্তা ও সম্মান নিশ্চিত করতে হবে। বক্তৃতায় অধ্যাপক ড. ইসলাম বলেন, “বিএনপি ক্ষমতায় এলে এই নষ্ট রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন ঘটবে। ফ্যাসিবাদ ও একদলীয় মনোভাব থেকে দেশকে মুক্ত করে সম্মান, সহাবস্থান ও নৈতিক রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করা হবে।” তিনি উল্লেখ করেন, বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বারবার আহ্বান জানিয়েছেন, “সম্প্রীতি, সহমর্মিতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার রাজনীতি গড়ে তুলতে হবে। বিভাজন নয়—ভালোবাসাই আমাদের শক্তি।”
লিফলেট বিতরণের সময় তিনি বলেন, “বিএনপি যে ৩১ দফা রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের কর্মসূচি দিয়েছে, সেটি শুধু রাজনৈতিক নয়, একটি নৈতিক চুক্তি।” এই লিফলেটে প্রতিফলিত মূল বিষয়গুলো হলো—স্বচ্ছ নির্বাচন ও আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও নারীর উন্নয়ন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও মানবাধিকারের নিশ্চয়তা। তিনি বলেন,
“ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার—এই মূলমন্ত্রেই বিএনপির রাজনীতি পরিচালিত হবে।” অধ্যাপক ইসলাম বলেন, “আজকের রাজনীতিতে এক ধরনের অশুভ প্রতিযোগিতা চলছে—যেখানে আদর্শ নয়, স্বার্থ প্রাধান্য পাচ্ছে। এই অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতার কোনো প্রয়োজন নেই। ত্যাগ, নিষ্ঠা ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতাই প্রকৃত রাজনীতির মূলভিত্তি।” তিনি যোগ করেন, “যে রাজনীতিতে ত্যাগ নেই, সেখানে বিশ্বাসও থাকে না। আমরা চাই এমন রাজনীতি যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, প্রতিপক্ষও সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে।”
ভাষণে তিনি রাজনৈতিক যোগাযোগের ইতিহাসও টানেন—“১৮৯২ সালে বেলজিয়ামে প্রথম রাজনৈতিক পিআর (Public Relations) প্রথা শুরু হয়। ইউরোপ ও আমেরিকার অনেক দেশ এটি গ্রহণ করেছে। এখন আমাদেরও আধুনিক রাজনৈতিক যোগাযোগের চর্চা করতে হবে, যাতে জনগণের সঙ্গে দলের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়।” তিনি বলেন, “আগামী নির্বাচন একটি ঐতিহাসিক সুযোগ। প্রচলিত ধারার বাইরে গিয়ে আমাদের নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরি করতে হবে—যেখানে স্বচ্ছতা, দায়িত্ববোধ ও নৈতিকতা রাজনীতির মূল মূল্যবোধ হবে।”
অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলামের এই ভাষণ ছিল একাধারে রাজনৈতিক, দার্শনিক ও নৈতিক বার্তায় পরিপূর্ণ। তিনি আহ্বান জানিয়েছেন—“সম্মান ফিরিয়ে আনুন, নৈতিকতা ফিরিয়ে আনুন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনুন—এটাই হোক আমাদের রাজনীতি।” ভেড়ামারা ও মিরপুর অঞ্চলে তাঁর এই বক্তব্য ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। জনগণ তাঁকে ঘিরে ভালোবাসা প্রকাশ করেছে, কেউ ফুল দিয়েছে, কেউ বলেছে—“আমরা এমন নেতা চাই, যিনি রাজনীতিকে মানবতার সঙ্গে যুক্ত করেন।”