দৌলতপুর প্রতিনিধি: বছর তিনেক আগে নিজের ব্যাবসায়িক প্রয়োজনে একই এলাকার প্রতিবেশী আজিজুল মালিথার কাছ থেকে ১৪ শতাংশ জমি ক্রয় করেন ব্যবসায়ী আবু বক্কর সিদ্দিক। যথারীতি বিক্রেতার কাছ থেকে নগদ টাকায় জমি কিনে নিজ নামে রেজিস্ট্রিকরণ এবং নাম পত্তন করেন আবু বক্কর সিদ্দিক। বিক্রেতা আজিজুল মারা যান গেল বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে। আজিজুলের বিক্রয় করা জমির পাশে থাকা তার পারিবারিক ওয়ারিশের অন্যান্য জমিও ব্যবহারের জন্য ভাড়া করেন আবু বক্কর সিদ্দিক। সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিলো; সম্প্রতি মুখোমুখি এক ভিন্ন ঘটনার।
ক্রয় করা জমির ওয়ারিশগণ মরহুম আজিজুলের পরিবারের লোকজন সামনে আনেন আজিজুলের মা কমেলা খাতুন কে মালিক দেখিয়ে ওই ১৪ শতাংশ জমির কাগজপত্র। যা-কিনা নিবন্ধিত আবু বক্করের ক্রয়ের অনেক আগেই। ওই কাগজের প্রেক্ষিতে মালিকানা চান কমেলা খাতুন ও তার পরিবারের সন্তানেরা। এমনটাই অভিযোগ সমাজসেবক, সাংস্কৃতিক কর্মী ও ব্যবসায়ী আবু বক্কর সিদ্দিকের।
আবু বক্কর জানান, এখন যারা জমির মালিকানা দাবি করছেন জমি ক্রয় এবং দামদরের সময় তাদের মধ্যে স্ব শরীরে উপস্থিতও ছিলেন বিক্রেতা মৃত আজিজুলের ভাই ওয়াজেদ আলী। স্থানীয় স্বরুপপুর এলাকার নোবাই মালিথার ১১ সন্তানের মধ্যে আজিজুলের অংশে পাওয়া ওই দাগের জমি আবু বক্কর কিনেছেন বলে জানার কথা জানান স্থানীয় একাধিক সুত্র।
পুরাতন দলীল গোপন করে আবু বক্করের কাছে তারা ওয়ারিশগণ মিলে জমি বিক্রি করেছেন এবং এখন তা বিনা পয়সায় ফেরত চাইছেন, যা রীতিমতো প্রতারণা বলে দাবি আবু বক্করের। তিনি বলেন, আজিজুল মালিথা মারা যাওয়ার পর এই ফন্দি আটেন ওয়াজেদ ও তার সহোদর। আব্দুল কুদ্দুস ভ্যাগোল, সোহরাব, মুন্তাজ ও তার মা কমেলা -কে দিয়ে রীতিমতো মিথ্যাচার করা হচ্ছে। বিক্রয় স্বীকার করলেও কেনা জমির টাকা ফেরত নিতে বলা হচ্ছে পরপারে থাকা আজিজুলের কাছ থেকে।
এদিকে, অভিযুক্ত ওয়াজেদ এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন– আমার ভাই (আজিজুল) আমাদের না জানিয়ে জমি বিক্রি করে আমাদের সাথে প্রতারণা করেছেন। আমরা তার দায় নিতে চাচ্ছি না। অপরদিকে, মোটা দাগের প্রায় ৪ বিঘা থেকে আবু বক্করের কেনা ১৪ শতাংশ জমি ছাড়া বাকি অংশ ব্যবহারের জন্য ভাড়া নেয়া চুক্তিতে উল্লেখ নেই ওয়াজেদ পক্ষের দাবি করা ওই ১৪ শতাংশ জমির। সেক্ষেত্রে ওই জমির মালিকানা আবু বক্করের বলেই চুক্তিতে উল্লেখ করা দরকার হয়নি বলে দাবি তার।
এ প্রসঙ্গে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজগর আলী বলেন, উভয় পক্ষকে নিয়ে আমরা কথা বলেছি,জমির ওই অংশ আবু বক্কর কিনেছেন সে বিষয়টি কাগজপত্র অনুযায়ী অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তাদের আইনী প্রক্রিয়ায় সমাধানের কথা বলা হয়েছে। প্রক্রিয়াটি আদালতের বিষয়। প্রতিবেশীর এমন প্রতারণায়, নিজের কেনা সম্পদ এবং ব্যবসা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী আবু বক্কর সিদ্দিক। মামলার প্রস্তুতি চলছে জানিয়ে গণমাধ্যমের সহযোগীতা চান তিনি।