রেজা মাহমুদ, নীলফামারী: উত্তরের জেলা নীলফামারীতে কৃষি জমি গ্রাস করে গড়ে উঠছে অসংখ্য ইটভাটা। ভাটাগুলোর বিষাক্ত ধোঁয়া ছড়াচ্ছে পরিবেশে। এছাড়া অবৈধভাবে জমির উর্বর মাটি কেটে মিল-কারখানায় পাচার করা হচ্ছে। এতে কমছে আবাদি জমি ও ফসল। যার বিরূপ প্রভাব পড়ছে খাদ্য ভান্ডার ও পরিবেশ-প্রকৃতিতে। অথচ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রশাসনের ভূমিকা রহস্যজনক। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ জেলায় দু’শতাধিক ইটভাটা রয়েছে, যার অধিকাংশই অপরিকল্পিত।
এসব ইটভাটার মাটির চাহিদা পূরণ করতে মাটি ব্যবসায়ীরা নিয়মনীতি উপেক্ষা ফসলি জমির মাটি কেটে ভাটাগুলোতে সরবরাহ করছে। অবৈধভাবে কৃষিজমির মাটি কেটে মিল-কারখানায় পাচার করার ফলে শত শত বিঘা জমির চাষাবাদ বন্ধ হয়ে গেছে। দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ এবং প্রশাসনের চোখের সামনেই বছরের পর বছর ধরে ভাটার মাটির চাহিদা পূরণ করতে ফসলি জমি বিনষ্টের ধারা অব্যাহত রয়েছে। জেলার সৈয়দপুর, কিশোরগঞ্জ, জলঢাকা, ডোমার ও ডিমলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলী জমি বিনষ্টের চিত্র চোখে পড়ে। জলঢাকা উপজেলার শৈলমারি ইউনিয়নের ফজলু মিয়া নামের এক কৃষক বলেন, এলাকার জমিগুলোতে সারা বছর বিভিন্ন ফসল আবাদ করা হয়।
স্থানীয় এক শ্রেণির অসৎ ব্যবসায়ী জমির মালিক কৃষকদের ফুঁসলিয়ে জমির মাটি নিয়ে যাচ্ছে। কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নের তাপস চন্দ্র রায় নামের আরেক কৃষক বলেন, দুই বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। আমার পার্শবর্তী জমিতে ভেকু দিয়ে গভীর গর্ত করে মাটি কেটে ট্রাকে ভর্তি করে স্থানীয় মিল-কারখানায় অধিক মূল্যে পাচার করছে এক মাটি ব্যবসায়ী। এতে আমার ফসলী জমিও বিনষ্টের পথে। অবৈধভাবে মাটি কর্তনকারীদের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান তিনি।
জানতে চাইলে জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল বলেন, ইটভাটার কারনে ফসলি জমির ব্যপক ক্ষতি হচ্ছে। তাই কৃষি জমির মাটি কাটা ও অপরিকল্পিতভাবে ইটভাটার অনুমোদন বন্ধ হওয়া দরকার। নীলফামারী জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, ইটভাটার মালিকদের পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়ম-নীতি মেনে চলতে হবে। এর ব্যতিক্রম হলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।