নূরুল হক, মণিরামপুর প্রতিনিধি: বিশ্বব্যাপি এখন মহামারি কোভিড-১৯ (করোনাভাইরাসে) জ্বরে জর্জরিত। ভয়ংকর এ ভাইরাসটি বিশ্বের প্রায় ২ শতাধিক দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা স্থবির করে ফেলেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের মত স্বল্প উন্নত দেশের অর্থনৈতিক ভীত নড়বড়ে করে দিয়েছে। মহামারী করোনার এ বিপর্যয়ের মধ্যে বিশ্বের কোটি-কোটি মুসলমানরা এবছরও প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর পালন করতে যাচ্ছে।
তাই মুসলমান অভিভাবকেরা ঈদুল ফিতর উপরক্ষে তদের পরিবারের সদস্যদের নতুন পোষাক কেনাকেনটায় ব্যস্ত। কিন্তু অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেকটা ব্যতিক্রম এবারের ঈদের বাজার ও কেনাকাটা। এমন অবস্থায় কেমন হচ্ছে মণিরামপুরের ঈদ বাজার।
সরেজমিন, ঈদ মানেই কেনাকাটা, অনাবিল আনন্দ, উল্লাস। কিন্তু করোনাভাইসের কারণে এ বছর দেশের মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষদের সেই ঈদের আনন্দ-উল্লাস অনেকটাই ¤øান। উপজেলার প্রধান ঈদ বাজার পৌরশহরের প্রধান প্রধান বিপনী বিতান গুলোই তার বাস্তবতা প্রমাণ করে।
মফস্বল এলাকা হিসেবে ১৫ রমজানের পরপরই পৌরশহরের প্রধান প্রধান মার্কেট গুলো থাকে ক্রেতাদের উপছে পড়া ভীড়। কিন্তু এ বছর ২৫ রমজানেও সেই কাঙ্খিত ক্রেতাদের দেখা নেই বলে একাধিক পোষাক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন। পৌরশহরের হাজী সুপার মার্কেটের তামান্না ফ্যাসানের মালিক মহসিন বিশ্বাস বলেন, ‘আশানুরূপ ক্রেতাদের আগমণ না ঘটলেও সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত মধ্যবিত্ত ও নিন্ম আয়ের ক্রেতাদের কিছুটা ভীড় থাকলেও-সেই অনুপাতে বিক্রি হচ্ছে না।
অনেককেই সাধ এবং সাধ্যের সমন্বয ঘটতে না পেরে এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ঘুরে মুল্য কমানোর চেষ্টা করছেন। বাজার ঘুরে বেশ কয়েকজন ক্রেতার সাথে আলাপকালে জানা যায়, ঈদের কেনা-কাটায় এ বছর পরিবারের সদস্যদের কাছে অনেকটাই অসহায় তারা।
সাধ ও সাধ্যের সমন্বয় না হওয়ায় অনেকটাই বাজার তালিকা সংক্ষিপ্ত করতে হচ্ছে। তাছাড়া এ বছর পরিবারের সদস্যদের ইচ্ছা মাফিক পোষাক ক্রয় করতে না পারায় অনেকটাই বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
এমনি ঈদের কেনাকাটা করতে আসা মধ্যবিত্ত আয়ের এক অভিভাবক আলমগীর হোসেন জানালেন ‘তিনি একজন গাড়ী চালক। গাড়ী চালিয়ে যে আয় তা দিয়েই সংসার চলে।
কিন্তু করোনার কারণে সে পথও এখন বন্ধ। গচ্ছিত টাকা গুলো শেষ। স্ত্রী, ৩ সন্তান নিয়ে তার সংসার। এ অবস্থায় কিভাবে তাদের জন্য ঈদের কেনাকাটা করবো? আমারমত গাড়ীচালক, ভ্যানচালক, দোকানের কর্মচারী, হোটেলের কর্মচারী, গাড়ির হেলপার, শ্রমিক সেলুনের কর্মী, জুতা সেলাই কর্মী, বাসা-বাড়ির কাজের বুয়া ইত্যাদি অনেক রকম খেটে খাওয়া মানুষ আছেন আমাদের দেশে যাদের পরিবার চলে তাদের দৈনিক আয়ের উপর। ঈদের কেনাকাটাতো দুরের কথা পরেরদিন পরিবারের সদস্যদের জন্য কি কোন খাবার ম্যানেজ করতে পারবো? এ চিন্তা যখন মাথায় আসে-তখন ঈদ মার্কেট করা ভাবনা এমনি মাথা থেকে সরে যায়।