বোয়ালমারীতে প্রেমিকসহ ৪ জনের নামে ধর্ষণ মামলা গ্রেপ্তার ১
বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে এক কিশোরীকে গণধর্ষণ ও ভিক্টিমের পিতাকে মারধরের অভিযোগে স্থানীয় থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে চালান দিয়েছে।
থানা ও এলাকাবাসি সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পরমেশ্বদী ইউনিয়নের এক কিশোরীর সাথে প্রতিবেশি জুনায়েত শেখের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এর সূত্র ধরে জুনায়েত শেখ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই কিশোরীর সহিত শারিরীক সম্পর্ক গড়ে তোলে। গত বছরের ২০ নভেম্বর ওই কিশোরীর পিতা মাতা বাড়ি না থাকার সুবাদে রাতে ওই কিশোরীকে ডেকে নিয়ে মনমত মন্ডলের মেহেগনী বাগানের ভিতরে প্রেমিক জুনায়েত শেখ (১৬) তার বন্ধু জুবাযের ফকির (১৫) ও তরিকুল ফকির (১৬) মিলে ধর্ষণ করে।
ইতিমধ্যে ওই কিশোরীর শারিরীক পরিবর্তন দেখা দেয়। চলতি বছরে গত ২৯ এপ্রিল কিশোরীর মা শারিরীক অবস্থার পরি্র্তন সম্পর্কে জানতে চাইলে কিশোরী গর্ভবতী হওয়ার পুরো বিষয়টি তার বাবা মাকে খুলে বলে। ঘটনা শুনে কিশোরীর পিতা গ্রামের মাতুব্বর হারুন শেখের নিকট বিচার দাবী করে। হারুন শেখ (৪৮) কোন বিচারের ব্যবস্থা না করে উল্টো মারধর করে তাদেরকে গ্রাম ছাড়া করে।
বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পেয়ে বোয়ালমারী থানার ওসি মো. সহিদুল ইসলাম রোববার (৫ মে) রাতে অভিযান চালিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই গ্রামের তিনজনকে আটক করে। সোমবার বিকেলে ওই কিশোরী ও তার পিতা মাতাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে এবং কিশোরীর পিতা বাদি হয়ে পরমেশ্বদী গ্রামের মোতালেব শেখের ছেলে জুনায়েত শেখ (১৬), বিল্লাল ফকিরের ছেলে জুবায়ের ফকির (১৫), আলফাডাঙ্গা উপজেলার ভেন্নাতলা গ্রামের তৈয়বের ছেলে তরিকুল ফকির (১৬) ও পরমেশ্বদী গ্রামের সেকেন শেখের ছেলে হারুন শেখকে (৪৮) আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯ (৩) তৎসহ ৩২৩/৫০৬ ধারায় মামলা করেন। সোমবার রাত সাড়ে ১০ টায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। মামলা নম্বর ১৪।
মামলার পর ৪ নম্বর আসামি হারুন ফকিরকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে চালান দিয়েছে।
এ ব্যাপারে থানা অফিসার ইনচার্জ মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, গণধর্ষণের পরে ভিক্টিমদের গ্রাম ছাড়া করা হয়। পরে বিভিন্ন মাধ্যমে এবং এলাকায় গুঞ্জনের ভিত্তিতে স্বপ্রনোদতিত হয়ে এলাকার তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করি। তার মধ্যে হারুন শেখের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় এবং তার তথ্য অনুযায়ী ভিক্টিম ও ভিক্টিমের মাকে আলফাডাঙ্গা থানার টিটা থেকে এবং ভিক্টিমের পিতাকে ফরিদপুর থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। এর পর মামলার ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
মঙ্গলবার ভিক্টিমকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং আসামি হারুন শেখকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।