মাজহারুল ইসলাম চপল, ব্যুরো চীফঃ দিন যতই যাচ্ছে জনসংখ্যা ততই বাড়ছে, আর জনসংখ্যা যতই বাড়ছে জমির পরিমান ততই কমছে। তাই জমি নিয়ে সংঘর্ষ, মারামরি সহ মামলার লাইনটা ততটাই বাড়ছে। ঠিক এরকমই ঘটনা ঘটেছে রাজশাহীর নিউমার্কেট সংলগ্ন ষষ্টিতলা এলাকায়।পৈতৃক সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে নিজেদের মধ্যেই হামলা মামলা শুরু হয়েছে।
অভিযোগ ও প্রত্যাক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া মৌজার জেএল নং- ৯, দাগ নং-৪৩৮৬, খতিয়ান নং- ১৭০৬, এর ১১.৮৭ একর জমির মালিক ছিলেন ফজলার রহমান । তার মৃত্যুর পর উক্ত সম্পত্তির মালিক হন তার স্ত্রী ও ছেলে মেয়ে। ২০১৩ সালে এই সম্পত্তি নিয়ে মৌখিক ভাগাভাগি হলেও তা বাস্তবায়ন হয় ২০১৮ সালে। মৃত ফজলার রহমানের পাঁচ ছেলে থাকলেও বড় ছেলে মারা যায় এবং বড় ছেলের কোন সন্তান না থাকায় তার অংশ তিনি সকলকে লিখে দিয়ে যান।
এরপর ২০১৯ সালে সেপ্টেম্বর মাসের ৪ তারিখে অংশিদারদের মধ্যে ঘরোয়াভাবে মৌখিক বন্টন করে এবং পরে সার্ভেয়ার ডেকে যে যার মত অংশ বুঝে খাজনা খারিজ করে নেয়। শাজাহান ও খাইরুলের অংশ তাদের স্ত্রীর নামে দিয়ে দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে এই সম্পত্তি নিয়ে সমস্যা বাধে দুই অংশিদারের মধ্যে। মমতাজ নাহার ও নাসরিন বেগম দুইজনের ছেলে মেয়েরা মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে।
পরে উভয় পক্ষকে থানায় ডেকে একটি সমাধানও করে দেন থানার অফিসার ইনচার্জ নিবারণ চন্দ্র বর্মন। তবুও নাসরিন বেগম (৪৩)ও তার ছেলে তোফাইরুল ইসলাম রাহাত (২৪)ও মেয়ে শিরিন সুলতানা মেঘলা (২৮) সমাধানটি মানে না। অনৈতিক দাবী করে বসে তারা। এরই জের ধরে গত ৩ এপ্রিল সকাল ১১ টায় রাহাত ও মেঘলা গুন্ডা ভাড়া করে মমতাজ নাহারের ছেলে রেজাউল করিম জুয়েল ও এজাজুল করিম রাসেল কে লোহার রড, জিআই পাইপ দিয়ে বেগতিক পিটায় ও ছিলাফুলা জখম করে।
পরে স্থানীয় লোকজন জুয়েল ও রাসেল কে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। এবিষয়ে মিডিয়া কর্মীরা গভির অনুসন্ধানে গেলে বেরিয়ে আসে অনেক তথ্য। এই সম্পদ জবরদখলের জন্য রাহাত, জামাল ওরফে রুকু, কামাল, মেঘলা এরা সবাই মিলে বহিরাগত গুন্ডা ও মাস্তান ভাড়া করে। তারা চেয়েছিল জুয়েলকে মারতে পারলে এই সম্পদ ছেড়ে চলে যাবে।
স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বললে তারা বলেন, জুয়েল, রাসেল ও তার চাচা আলমগির হোসেন নিঃসন্দেহে ভাল মানুষ। তাদের কে অন্যায় করে মারা হয়েছে। কারন তারা এই সম্পদের বৈধ মালিক। তাদের কাগজপত্র সকল কিছু সঠিক রয়েছে। থানার ওসি দেখেছে কমিশনার দেখেছে তাদের কোন ভুল দেখতে পাইনি। এই রাহাত, জামাল, কামাল এরা জোর করে এদের জমি দখল করছে।
ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে রাহাত ও তার পরিবারের সাথে সাক্ষাত করলে তারা বলেন, আমরা তাদের কে মারিনি বরং তারাই আমার ছেলে রাহাতকে মারধর করেছে। কেন তাদের সম্পদে বাধা দিতে গেলেন জানতে চাইলে রাহাতের মা নাসরিন বেগম বলেন, এই সম্পদের বাটোয়ারা সমাধান না হলে আমরা কাউকে এই সম্পত্তি ভোগ দখল করতে দিবনা।
এই বিষয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নিবারণ চন্দ্র বর্মন এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, থানা জমিজামা সংক্রান্ত বিয়ষ দেখেনা। এটা ভুমি অফিসের কাজ এটা কোর্টের কাজ। যেহেতু এখানে মারামারির ঘটনা ঘটেছে তাই থানা পুলিশ হস্তক্ষেপ করেছে।
আর কাগজ যার সঠিক সেই জমি পাবে এটাই স্বাভাবিক। আমি কাগজ দেখেছি জুয়েল ও রাসেল এর কাগজপত্র সঠিক রয়েছে। এই জমি সংক্রান্ত বিয়ষে গত ৩ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে উভয় পক্ষ মামলা করেছ। যেহেতু মামলা হয়েছে সেহেতু অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।