রাজমাহী ব্যুরো: রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি ও নির্দেশিত ৪ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে বিভাগীয় প্রতিবাদ সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। বুধবার দিনব্যাপি শহীদ কামারুজ্জামান মিলনায়তনে এ বিভাগীয় প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র শিক্ষক পেশাজীবী সংগ্রাম পরিষদ রাজশাহী কমিটির আহবায়ক প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনীয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এ কে এম এ হামিদ। প্রধান বক্তা ছিলেন কেনিপ সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব মির্জা এটিএম গোলাম মোস্তফা।
বিশেষ অতিথি ছিলেন আইডিইবি রাজশাহীর সভাপতি মো. আমিনুল হক, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী হোসেন শাহিদ সোহরাওয়ার্দী, অর্থ সম্পাদক প্রকৌশলী আবু বাশির। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইডিইবি রাজশাহীর সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী মশিউর রহমান।
চলমান ৪ বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষাকোর্সকে ৩ বছরে রূপান্তরে শিক্ষামন্ত্রনালয়ের অযৌক্তিক ও আত্মঘাতি উদ্যোগ অবিলম্বে বন্ধ, বিএনবিসি ২০২০ এর কতিপয় ধারা উপধারা সংশোধন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার সীমাহীন সংকটের সমাধান ও ছাত্র শিক্ষক পেশাজীবীদের পেশাগত সমস্যা সমাধানের আহবান জানিয়ে সভায় আইডিইবি নেতারা বলেন, সরকার যখন মানবসম্পদ উন্নয়নে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা স¤প্রসারণে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, ঠিক সেই মুহূর্তে দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুমোদিত চলমান ৪ বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষাকোর্সকে ৩ বছরে রূপান্তরে শিক্ষামন্ত্রনালয়ের অযৌক্তিক ও আত্মঘাতি উদ্যোগ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, আগামীর কর্মচ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষাকোর্সের মেয়াদ হ্রাসের আত্মঘাতি উদ্যোগ বন্ধ করে এ শিক্ষা ব্যবস্থায় বিরাজমান শিক্ষক স্বল্পতা, শ্রেণীকক্ষ, ল্যাব, ওয়ার্কসপ সংকটসহ শিক্ষকদের পদোন্নতি, দ্বিতীয় শিফটে কর্মরত শিক্ষকদের সম্মানি,স্টেপ প্রকল্পের শিক্ষকদের নিয়মিতকরণ, বেতন ভাতা প্রদান এবং ছাত্র ছাত্রীদের বৃত্তি ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ভাতা বৃদ্ধিসহ বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা আধুনিকায়নে মনোযোগী হবার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় মনোযোগ দিতে হবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় আত্মঘাতি উদ্যোগ থেকে সরে না আসলে আগামীদিনে দেশব্যাপী কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু’র শিক্ষাদর্শনের আলোকে মানবসম্পদ উন্নয়নে যখন প্রধানমন্ত্রী নানাবিদ পরিকল্পনা নিয়ে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রসারে অব্যাহতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, সেখানে কেন শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ ধরনের আত্মঘাতি পথে হাঁটছে, তা জাতির নিকট পরিষ্কার করতে হবে।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্বেও বিগত ৮/৯ বছরেও ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের প্রাথমিক নিযুক্তিতে বর্ধিত ইনক্রিমেন্ট, ৫০% পদোন্নতি, জনকল্যাণকর অর্গানোগ্রাম প্রণয়ন করা হয়নি। বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড ২০২০ ও ঢাকা ইমারত নির্মাণ বিধিমালার বিতর্কিত সংজ্ঞা ও বিভিন্ন ধারা/উপধারা সংশোধনপূর্বক গেজেট প্রকাশ করা হয়নি।
এছাড়া, সকল বিদ্যুৎ কোম্পানিতে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতি প্রদান, পলিটেকনিক, টিএসসি, টিটিসি ও এসএসসি (ভোক) শিক্ষকদের পদোন্নতি, শিক্ষক সংকট নিরসন, শ্রেণীকক্ষ, ল্যাব/ওয়ার্কসপ সমস্যার সমাধান, স্টেপ শিক্ষকদের নিয়মিতকরণ ও বেতন প্রদান এবং ইমার্জিং টেকনোলজির বেকার ডিপ্লোমা গ্রাজুয়েটদের কর্মসংস্থান ও প্রাইভেট সেক্টরের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সম্মানজনক বেতন ও পদবী নির্ধারণের কার্যকর উদ্যোগ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে নেয়া হয়নি।
যা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও ছাত্র শিক্ষকদের বিক্ষুব্ধ করে তুলেছে। এটি প্রকৌশল কর্মক্ষেত্রকে উত্তপ্ত করে তুলবে বলে নেতৃবৃন্দ সরকারকে সতর্ক করেন। সমাবেশ শেষে র্যালি ও জেলা প্রশাসকের হাতে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
বি.দ্র-স্থানীয় পত্রিকার জন্য সংযোজন করবেন: অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আইডিইবি’র স্টাাডি এন্ড রিসার্চ সেলের কো-চেয়ারম্যান প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম, আইডিইবি কেনকি উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নওশের আলী, রাজশাহী সংগ্রাম পরিষদের উপদেষ্টা প্রকৌশলী আলহাজ্ব খায়রুল ইসলাম, আইডিইবি’র রাজশাহী অঞ্চল সহসভাপতি প্রকৌশলী কবির উদ্দিন, কেনিক আইডিইবি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুন নুমান, সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক সৈয়দ মুন্তাসীর হাফিজ, কেনিক ইইডি ডিপ্রকৌস সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী জাফর আলী সিকদার, কেনিক সংগ্রাম পরিষদের সদস্য প্রকৌশলী রফিকুজ্জামান।
উপস্থিত ছিলেন আইডিইবি কেনিক ও রাজশাহীর সদস্য প্রকৌশলীবৃন্দ এবং বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।