ঢাকা ০৪:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
ভেড়ামারায় পদ্মায় ডুবে নিহত দুই কৃষকের পরিবারে জেলা প্রশাসকের মানবিক সহায়তা লালপুরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে চাল কম দেয়ার অভিযোগ হৃদরোগ ও স্ট্রোকে মৃত্যুহার কমাতে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত লালপুরে ভেজাল গুড় ও অবৈধ আখ মাড়াই বিরোধী অভিযান রাঙামাটির উন্নয়নে সবার সহযোগিতা চাই: ডিসি নাজমা আশরাফী লক্ষীপুরে ৪ সাংবাদিকের মামলা তদন্তে উদ্বিগ্ন বিএমইউজে  ভেড়ামারায়  গ্রামীণ সড়কের কোর রোড নেটওয়ার্ক ও সড়ক অগ্রাধিকার নির্ধারণ বিষয়ক কর্মশালা ভেড়ামারায় পদ্মায়  নৌকা ডুবে ২ কৃষকের মৃত্যু রাজশাহীর জলিল বিশ্বাস মার্কেট ব্যবসায়ী কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে শরীফ উদ্দিন জুয়েলের নির্দেশনায় হাসিনার ফাঁসিরদাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নৌমন্ত্রী

ফাইল ছবি

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিবিএর আনুষ্ঠানিক রাজনৈতিকীকরণের প্রক্রিয়া ক্রমেই গতিলাভের ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। সংকীর্ণ দলাদলি, উপদলীয় কোন্দল এবং হানাহানিযুক্ত রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এমনিতেই দুর্বল থেকে দুর্বলতর হচ্ছে। অনেক ঘটনা-দুর্ঘটনা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি গ্রহণযোগ্য ভাবমূর্তি মানুষের মধ্যে থাকা প্রয়োজন।

শ্রমিকনেতা হিসেবে শাজাহান খানের ভূমিকার কারণে আজ তা হুমকিগ্রস্ত বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। জাসদের রাজনীতিতেও তিনি শ্রমিকনেতা ছিলেন। তাই তিনি নিজেই সাক্ষ্য দেবেন, অতীতে কখনোই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিবিএ নেতাদের কোনো সমাবেশে এভাবে রীতিমতো কাগজে-কলমে ‘বিরোধী দলকে শায়েস্তা’ করতে যুক্ত করা হয়নি।

এটা পরিহাসজনক যে নৌপরিবহনমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে যা বলেছেন, তা কার্যত আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধেই যাচ্ছে। তিনি যেন ভুলে গেছেন তাঁর দলই সরকারে এবং যেকোনো নাশকতা, তা যে যখনই করুক না কেন, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধ। আর তার বিচার করা সরকারের স্বাভাবিক কর্তব্য। আমরা অবশ্যই অভিযোগ অনুযায়ী বিএনপি-জামায়াতের দ্বারা সংঘটিত ২০১৩-১৪ সালের অগ্নিসংযোগ ও হত্যার তদন্ত এবং বিচার আশা করি। আর সরকারকে যদি এ জন্য একান্ত চাপ দিতেই হয়, তাহলে সে জন্য আওয়ামী লীগের অন্য বহু অঙ্গসংগঠন রয়েছে। তাদের শক্তি-সামর্থ্য এতটা কমে যায়নি যে এখন স্বায়ত্তশাসিত এবং সবচেয়ে সংবেদনশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মচারীদের এ কাজে ব্যবহার করতে হবে।

তাই এই আশঙ্কা অমূলক নয় যে আগামী সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতির সঙ্গে এর যোগসূত্র থাকতে পারে। তার থেকেও ভয়াবহ যে দিকটি লক্ষণীয় তা হলো, ব্যাংক খাতে অবলোপনসহ খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। আর সে জন্য রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকারি খাতের ব্যাংকের পরিচালক নিয়োগকে চিহ্নিত করা হয়। এমন একটি বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে নৌমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ব্যাংকিং-সংশ্লিষ্ট লোকজন প্রমাদ গুনছেন।

বিষয়টিকে বিচ্ছিন্নভাবে একজন উচ্চাভিলাষী মন্ত্রীর খেয়াল-খুশি হিসেবে দেখার সুযোগ কম। এবার যা ঘটল, তার দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও পরিচালনা পর্ষদকেও নিতে হবে। কারণ, সিবিএর কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক নেতাদের যাতায়াত খরচ বাংলাদেশ ব্যাংকের তহবিল থেকে বহন করা হয়েছে এবং সম্মেলনে যোগদান উপলক্ষে কর্মক্ষেত্রে তাদের ‘অব্যাহতি’ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জযোগ্য কি না, তা-ও প্রশ্নের বাইরে নয়।

আমরা মনে করি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা, স্বায়ত্তশাসন ও তার মর্যাদার প্রতি  শ্রম অধিকার–বহির্ভূত যেকোনো পদক্ষেপকে প্রতিরোধ করা উচিত।

Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ

ভেড়ামারায় পদ্মায় ডুবে নিহত দুই কৃষকের পরিবারে জেলা প্রশাসকের মানবিক সহায়তা

কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নৌমন্ত্রী

আপডেট টাইম : ১০:১২:১৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০১৭

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিবিএর আনুষ্ঠানিক রাজনৈতিকীকরণের প্রক্রিয়া ক্রমেই গতিলাভের ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। সংকীর্ণ দলাদলি, উপদলীয় কোন্দল এবং হানাহানিযুক্ত রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এমনিতেই দুর্বল থেকে দুর্বলতর হচ্ছে। অনেক ঘটনা-দুর্ঘটনা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি গ্রহণযোগ্য ভাবমূর্তি মানুষের মধ্যে থাকা প্রয়োজন।

শ্রমিকনেতা হিসেবে শাজাহান খানের ভূমিকার কারণে আজ তা হুমকিগ্রস্ত বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। জাসদের রাজনীতিতেও তিনি শ্রমিকনেতা ছিলেন। তাই তিনি নিজেই সাক্ষ্য দেবেন, অতীতে কখনোই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিবিএ নেতাদের কোনো সমাবেশে এভাবে রীতিমতো কাগজে-কলমে ‘বিরোধী দলকে শায়েস্তা’ করতে যুক্ত করা হয়নি।

এটা পরিহাসজনক যে নৌপরিবহনমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে যা বলেছেন, তা কার্যত আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধেই যাচ্ছে। তিনি যেন ভুলে গেছেন তাঁর দলই সরকারে এবং যেকোনো নাশকতা, তা যে যখনই করুক না কেন, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধ। আর তার বিচার করা সরকারের স্বাভাবিক কর্তব্য। আমরা অবশ্যই অভিযোগ অনুযায়ী বিএনপি-জামায়াতের দ্বারা সংঘটিত ২০১৩-১৪ সালের অগ্নিসংযোগ ও হত্যার তদন্ত এবং বিচার আশা করি। আর সরকারকে যদি এ জন্য একান্ত চাপ দিতেই হয়, তাহলে সে জন্য আওয়ামী লীগের অন্য বহু অঙ্গসংগঠন রয়েছে। তাদের শক্তি-সামর্থ্য এতটা কমে যায়নি যে এখন স্বায়ত্তশাসিত এবং সবচেয়ে সংবেদনশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মচারীদের এ কাজে ব্যবহার করতে হবে।

তাই এই আশঙ্কা অমূলক নয় যে আগামী সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতির সঙ্গে এর যোগসূত্র থাকতে পারে। তার থেকেও ভয়াবহ যে দিকটি লক্ষণীয় তা হলো, ব্যাংক খাতে অবলোপনসহ খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। আর সে জন্য রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকারি খাতের ব্যাংকের পরিচালক নিয়োগকে চিহ্নিত করা হয়। এমন একটি বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে নৌমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ব্যাংকিং-সংশ্লিষ্ট লোকজন প্রমাদ গুনছেন।

বিষয়টিকে বিচ্ছিন্নভাবে একজন উচ্চাভিলাষী মন্ত্রীর খেয়াল-খুশি হিসেবে দেখার সুযোগ কম। এবার যা ঘটল, তার দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও পরিচালনা পর্ষদকেও নিতে হবে। কারণ, সিবিএর কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক নেতাদের যাতায়াত খরচ বাংলাদেশ ব্যাংকের তহবিল থেকে বহন করা হয়েছে এবং সম্মেলনে যোগদান উপলক্ষে কর্মক্ষেত্রে তাদের ‘অব্যাহতি’ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জযোগ্য কি না, তা-ও প্রশ্নের বাইরে নয়।

আমরা মনে করি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা, স্বায়ত্তশাসন ও তার মর্যাদার প্রতি  শ্রম অধিকার–বহির্ভূত যেকোনো পদক্ষেপকে প্রতিরোধ করা উচিত।